আয়বর্ধক প্রকল্প নিতে চান মেয়র

বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে সভা

শুধু সরকারি অনুদান ও থোক বরাদ্দের উপর করপোরেশনের নাগরিক সেবাকার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়। করপোরেশনকে আত্মনির্ভরশীল ও স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হলে সরকারের দিকে চেয়ে না থেকে করের আওতা বাড়ানোর এবং আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ ছাড়া বিকল্প নেই। সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী গতকাল বৃহস্পতিবার তার টাইগারপাস দপ্তরে বিভাগীয় প্রধানদের সভায় এ কথা বলেন।

গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী দেশের সিটি করপোরেশনগুলোকে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে এ সভার আয়োজন করা হয়।

এতে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, আইন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দীন, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো.আলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আকবর আলী ও ঝুলন কুমার দাশ উপস্থিত ছিলেন।

মেয়র এসময় ভূসম্পত্তি শাখাকে করপোরেশনের সমস্ত সম্পত্তির হিসাব অবিলম্বে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার মাধ্যমে তার নিকট উপস্থাপন করতে বলেন। তিনি বলেন, মোট সম্পত্তির বিবরণ হতে পেলে বুঝবো কোথায় কি পরিমাণ সম্পত্তি অব্যবহৃত অবস্থায় আছে এবং কোথায় কোন আয়বর্ধক প্রকল্প নেয়া যেতে পারে।

এ সময় হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স এর হালনাগাদ আদায় কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি সরকারি গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী করপোরেশন আরো কি কি কর, উপকর, রেইট, টোল এবং ফিস আদায় করতে পারে তা নিয়েও আলোচনা হয়।

আলোচনায় বলা হয় সরকারি বাজেট অনুযায়ী করপোরেশন ২৬টি খাতে কর উপকর, রেইট, টোল এবং ফি আদায় করতে পারবে। সেই খাতগুলো ইমারত ও জমির বার্ষিক মূল্যের উপর কর, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের উপর কর, ইমারত নির্মাণ এবং পুনঃ নির্মাণের জন্য আবেদনের উপর কর, নগরবাসীর ভোগ ব্যবহার বা বিক্রয়ের জন্য পণ্য আমদানির উপর কর, নগর হইতে পণ্য রপ্তানির উপর কর, টোল জাতীয় কর পেশ বা বৃত্তির উপর কর, জন্ম, বিবাহ দত্তক গ্রহণ ও জিয়াফত বা ভোজের উপর কর, বিজ্ঞাপনের কর, পশুর উপর কর, সিনেমা ড্রামা ও নাট্য প্রদর্শনী এবং অন্যান্য আমোদ প্রমোদ এবং বিনোদনের উপর কর, মোটরগাড়ি এবং নৌকা ব্যতীত অন্যান্য যানবাহনের উপর কর, বাতি অগ্নি রেইট, মামলা নিম্পত্তি রেইট জনসেবামূলক কার্য সম্পাদনের জন্য রেইট, পানি কল ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনার জন্য রেইট, সরকার কর্তৃক আরোপিত করের উপর, উপকর স্কুল ফিস, করপোরেশন কর্তৃক পরিচালিত কোন জনসেবামূলক ধার্য হইতে প্রাপ্ত করের উপর ফিস, মেলা কৃতি প্রর্দশনী শিল্প প্রদর্শনী, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং অন্যান্য জনসমাবেশের উপর ফি, বাজারের উপর ফি, করপোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স, অনুমোদন ও অনুমতির জন্য ফি, করপোরেশন কর্তৃক বিশেষ কার্যের জন্য ফি, পশু জবাই দেওয়া জন্য ফিস, এই আইনের যে কোন বিধানে অধীনে অনুমোদিত অন্য কোন ফি, সরকারকর্তৃক আইন বলে অন্য কোন কর।

সভায় মেয়র আরো বলেন উল্লিখিত সরকারি গেজেট অনুয়ায়ী ২৬ খাতে কর, উপ কর, রেইট ফিস, এ মধ্যে কিছু খাত থেকে করপোরেশন আয় করলেও আরো অনেক খাত রয়েছে যা করের আওতার বাইরে। তিনি নগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নকে টেকসই করে সড়কের চলাচলরত কন্টইনারবাহী কাভার্ডভ্যান, লরি থেকে ফিস আদায়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে আইনগত দিক ভেবে দেখতে বলেন। মেয়র বলেন, আয়বর্ধক প্রকল্প নিজম্ব আয় বৃদ্ধি না করলে করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ করে নাগরিক সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা কষ্টকর হয়ে পড়বে। বিজ্ঞপ্তি