সুপ্রভাত ডেস্ক »
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শিক্ষাক্ষেত্রে যেখানে অনেক উন্নত দেশ হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ বিরাট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। আমাদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশ ঘটেছে বলে এটা সম্ভব হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতেও ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ উন্নত হওয়ার কারণে।’
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও পরিসংখ্যান হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষাকে বহুমুখীকরণ করেছি। বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেন শিক্ষা গ্রহণ করা যায়, সে ব্যাপারে সারা দেশে কাজ করেছি। সেটা একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, আবার উচ্চশিক্ষা গ্রহণেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে গড়ে তুলেছি। তাই শিক্ষাকে যুগোপযোগী করা ও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেসব বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়া দরকার, সেগুলোও আমরা করেছি।’
দেশের প্রতিটি উপজেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণ করেছি। এ ছাড়া যেসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি, ঘরের খেয়ে যেন ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষা নিতে পারে, সেই সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। আমরা স্কলারশিপ দিচ্ছি একবারে প্রাইমারি থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত। এমনকি বিদেশি পাঠিয়েও ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের হাতে গড়া। দেশে একটামাত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এরপর আমরা কয়েকটি প্রতিষ্ঠা করি। ১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর দেখেছি বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আমাদের ছেলেমেয়েদের অনাগ্রহ ছিল। এরপর ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দিয়ে আইন পাস করি এবং প্রতিষ্ঠা শুরু করি। এরপর বহুমুখী বিশ্ববিদ্যালয়ও করেছি।’ খবর ঢাকাপোস্ট।
শিক্ষাকে আমরা সবসময় গুরুত্ব দিয়ে থাকি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়াতে একটা জিনিস সুবিধা হয়েছে যে করোনা অতিমারির সময় যখন স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল, তখনও অনলাইনে শিক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেটার ফল ছেলেমেয়েরা পেয়েছে। করোনার কারণে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও লেখাপড়া একদম বন্ধ হয়ে যায়নি।’
ফলাফলপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা পাস করেছ, তাদের অভিনন্দন জানাই এবং অভিনন্দন জানাই তাদের অভিভাবকদের। আর যারা পাস করতে পারোনি, তারা যেন মন খারাপ না করে। তারা যেন আবার নতুন উদ্যোগে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়। আমাদের ছেলেমেয়েদের ফেল করার কথা না। পাসের হারে আমি দেখলাম মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। তাই ছেলেদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হতে হবে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষকরা একটু মনোযোগী হবেন। আমাদের ছেলেমেয়েরা আসলেই অসম্ভব মেধাবী। একটু সুযোগ পেলেই তারা অসাধ্য সাধন করতে পারে।’
শিক্ষার মান ধরে রাখায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতিতেও ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ উন্নত হওয়ার কারণে। শিক্ষাক্ষেত্রে যেখানে অনেক উন্নত দেশ হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ বিরাট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। আমাদের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির বিকাশ ঘটেছে বলে এটা সম্ভব হয়েছে। আর এই তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমেই পরীক্ষার্থীদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এ জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানাই।’