নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের সঙ্গে আবারও ভেসে আসছে হাজার হাজার মৃত জেলিফিশ। শুক্রবার সকাল থেকে সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে হাজার হাজার মৃত জেলিফিশ ভেসে আসতে দেখা গেছে। কখনো বা বালুতে আটকে যাচ্ছে এসব জেলিফিশ, আবার কখনো ভাটার টানে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। সমুদ্র সৈকতের কলাতলী পয়েন্ট থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ কিলোমিটারের মধ্যে জোয়ারের পানির সঙ্গে ভেসে আসা এসব মরা জেলিফিশ দেখছেন উৎসুক পর্যটকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব জেলিফিশ কোনটা আকারে ছোট, কোনটা আবার বড়। দেখতে অনেকটা অক্টোপাসের মতো। তবে এগুলো কী কারণে মারা যাচ্ছে এর সঠিক কারণ কেউ বলতে পারছেন না। তবে গভীর সমুদ্রে জেলেদের জালে এসব জেলিফিশ আটকা পড়ে মারা যেতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের। মৃত্যুর কারণ বের করতে কাজ করছে একাধিক সংস্থা।
এদিকে গতকাল সকালে ভেসে আসা এসব জেলিফিশের নমুমা সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দারের নেতৃত্বে একটি টিম।
বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বোরি) মহাপরিচালক ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে এসব সাদা নুইন্যা মৎস্যজীবীদের বিহুন্দি জালে অযাচিতভাবে আটকা পড়ে মারা যায়। পরবর্তীতে কক্সবাজার, পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসে। অযতœ অবহেলায় সৈকতে পড়ে থাকা এই সাদা নুইন্যা বা হোয়াইট টাইপ জেলিফিশ প্রক্রিয়া করা গেলে খাদ্য হিসেবে ও প্রসাধন শিল্পে ব্যবহার হয়।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের জানা দুই হাজার প্রজাতির জেলিফিশের মধ্যে মাত্র যে ১২ জাতের জেলিফিশের খাদ্যমান আছে তার মধ্যে সাদা নুইন্যা বা হোয়াইট টাইপ জেলিফিশ অন্যতম এবং এটি খাদ্য হিসেবে বিভিন্ন দেশে বেশ জনপ্রিয়। এই জেলিফিশটির অন্যতম বিচরণক্ষেত্র হচ্ছে বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূল।
তারা আরও বলেন, বঙ্গোপসাগর সাদা নুইন্যার অন্যতম আবাস হলেও আমাদের দেশে এর কোন ব্যবহার নেই। অথচ বিশ্বে জেলিফিশের ৫ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারের বাজার রয়েছে। আমরাও এই অবহেলিত সামুদ্রিক পণ্যটির স্থানীয় বাজার সৃষ্টিসহ রপ্তানি করে সুনীল অর্থনীতিতে অনন্য ভূমিকা রাখতে পারি।’
এর আগে গত ৩ ও ৪ আগস্ট কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বিপুল সংখ্যক জেলিফিশ ভেসে এসেছিল।