নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »
টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী পাহাড়ী এলাকা থেকে স্থানীয় ৫ জন কৃষককে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায় অপরহরণকারীরা। তাদের মুক্তিপণ হিসাবে পরিবারের কাছে থেকে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে।
অপহৃতরা হলেন, উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পানখালী এলাকার ফকির মোহাম্মদের ছেলে মো. রফিক (২২), শাহাজানের ছেলে জিহান (১৩), ছৈয়দ উল্লাহর ছেলে শাওন (১৫), আবদুর রহিমের ছেলে মো. নুর (১৮) ও নুরুল আমিনের ছেলে আব্দু রহমান (১৫)।
বিষয়টি স্বীকার করেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, ‘অপহরণের খবরটি শুনে পাহাড়ি এলাকায় গিয়েছি। অপহৃতদের উদ্ধারের বিষয়ে সবাই মিলে কাজ করছি।’
এদিকে মুক্তিপণ চেয়ে অপহৃত রফিকের পিতা মো. ফকির আহম্মেদ এর কাছে মুঠোফোনে ৩০ লাখ টাকা দাবি করেছে অপহরণকারীরা। এ বিষয়ে ফকির আহম্মেদ বলেন, ‘ছেলে প্রতিদিনের ন্যায় জুম চাষে পাহাড়ে যায়। কিন্তু আজকে সেহেরি খেতে না আসায় তাকে খুঁজতে বের হই। পরে জানতে পারি তাদের পাচঁজনকে ধরে নিয়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ফোনে মুক্তিপণ চেয়ে ৩০ লাখ টাকা দাবি করে তারা। বিষয়টি আমি জনপ্রতিনিধিকে অবহিত করেছি।’
অপহৃতর মো. নুরের মা খোরশিদা বেগম বলেন, ‘আমাকে ছেলেকে অস্ত্রধারীরা ধরে নিয়ে গেছে। তবে কে বা কারা নিয়ে গেছে এখনো জানা যায়নি। কিন্তু একটি নম্বর থেকে কল করে ছেলের মুক্তিপণ চেয়ে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেছে। আমরা খুব গরিব মানুষ, এত টাকা কিভাবে জোগাড় করবো। আমি ছেলে উদ্ধারের আইনশৃঙ্খলনাবাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি।’
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, ‘অপহরণে বিষয়টি আমাকে কেউ এখনো অবহিত করেনি। এরপরও আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’
এর আগে গত ৯ মার্চ টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে (৬) অপহরণ করে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। ১২ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, গত ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ এর মার্চ পর্যন্ত সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ পাহাড়কেন্দ্রিক ১০৩টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে ৫২ জন স্থানীয় এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা। এদের মধ্য যারা ফিরে এসেছে তাদের বেশির ভাগই মুক্তিপণ দিয়ে ফিরতে হয়েছে।