আফগানিস্তানের বিপক্ষে নাটকীয়ভাবে জিতল বাংলাদেশ

সুপ্রভাত ডেস্ক »

শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৬ রান। সমীকরণটা অনেকটা সহজ মনে হলেও আগের কয়েক ওভার রীতিমতো সংগ্রাম করেছে বাংলাদেশ। ১৯ তম ওভারে বোলিংয়ে এসেছিলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। টানা দুই ছক্কার মার নুরুল হাসান সোহানের ব্যাট থেকে।

তৃতীয় বলে হয়েছে সিঙ্গেল। চতুর্থ বলে রিশাদের শট টপ–এজড হয়ে উইকেটকিপারের মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারি। ইনিংসের ৮ বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশ পৌঁছে গেছে ১৫৩ রানে। নাটকীয় ম্যাচে ৬ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তানকে।

তানজিদ তামিম আর পারভেজ ইমনের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই শতরান। আফগানিস্তানের বোলারদের নাস্তানাবুদ করে সহজ জয়ের দিকেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। শেষ দিকে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫১ বলে ৪৩ রান, হাতে সবকটি উইকেট। সহজ জয়ের অপেক্ষায় সবাই। তবে দলটা যখন বাংলাদেশ, কিছুটা নাটকীয় না হলে জমে কিভাবে!  ৯ রানের ব্যবধানে টপঅর্ডারের ৬ ব্যাটারকে হারিয়ে সহজ ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে যাচ্ছিল টাইগাররা।

রশিদ খানের বল যেন বাংলাদেশ দলের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে এসেছিল। এই স্পিনারের ৪ উইকেট শিকারে টাইগাররা জয় থেকে প্রায় ছিটকে যাচ্ছিল। ১০৯ রান থেকে ১১৮ রান পর্যন্ত বাংলাদেশ দল হারিয়ে বসে ৬ উইকেট। এরপর নুরুল হাসান সোহান এবং রিশাদ হোসেনের ব্যাটে কোনো রকমে রক্ষা।

শারজায় আফগানদের দেওয়া ১৫২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮ বল থাকতে ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। মাঝারি রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দলের শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতো। দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং পারভেজ হোসেন ইমন যেন নিজেদের খোলস ছেড়ে খেলেছেন। দুইজনই আফগান বোলারদের বেদম পিটিয়ে তুলে নেন অর্ধ-শতক। তামিম ৫১ এবং ইমন ফিরে যান ৫৪ রান করে।

এরপর সাইফ হাসান, শামীম পাটোয়ারী, জাকের আলি অনিকরা ছিলেন যাওয়া আসার মিছিলে। তানজিম সাকিবও ব্যর্থ হন ব্যাট হাতে। একসময় মনেই হচ্ছিল যেন ফসকে গেল হাত থেকে ম্যাচটা। তবে সোহান এবং রিশাদ ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ শেষ করে মাঠ ছেড়েছেন। সোহান ১৩ বলে ২৩ এবং রিশাদ ৯ বলে ১৪ করে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে দিনের শুরুতে শারজাহতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। এদিন শুরুতেই বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন নাসুম আহমেদ। ইব্রাহিম জাদরানকে বোল্ড করেছেন এই অফ স্পিনার। সাজঘরে ফেরার আগে ১০ বলে ১৫ রান করেন তিনি। ব্যর্থ হন আরেক ওপেনার সাদিকুল্লাহ আতালও, করেন ১২ বলে ১০ রান।

এরপর দারউইস রাসুলি-মোহাম্মদ ইশাকরা দ্রুতই ফিরেন। এ দুজনের কেউই দুই অঙ্কের রান ছুঁতে পারেননি। তাতে ৪০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে আফগানিস্তান। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ১৮ বলে ১৮ রান করে গুরবাজ আউট হলে ভাঙে বড় হতে থাকা পঞ্চম উইকেট জুটি। এরপর গুরবাজও ফিরেছেন ৪০ রানে।

যদিও শেষদিকে রীতিমতো ঝড় তোলেন মোহাম্মদ নবি। তাসকিনকে ১৮তম ওভারে তিন ছক্কা হাঁকান তিনি। যদিও সেই ওভারেই আউট হন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। ২৫ বলে ৩৮ রান করেছেন তিনি। এছাড়া ১২ বলে অপরাজিত ১৭ রান করেন শরাফুদ্দিন আশরাফ।