নিজস্ব প্রতিবেদক »
সার্বিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম দিন দিন বাড়লেও বেশিরভাগ মানুষের আয় সে অনুযায়ী বাড়েনি। প্রতিদিন কোন না কোন পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। এতে বাধ্য হয়ে নি¤œ ও নি¤œ-মধ্যবিত্ত মানুষকে আরও মিতব্যয়ী হতে হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজারে দেশী পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সংকট থাকার কারণে অনেকটা নির্ভর করতে হচ্ছে আমদানির উপর। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও আমদানি ও বুকিং রেট বাড়াতেই সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ, রসুন, আদার দাম আরও বেড়েছে। তাছাড়া বাজার যোগান স্বাভাবিক থাকার পরও কমেনি চিনি, ডাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম, মাছসহ সবজির বাজার।
খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আমদানি ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা আর পাকিস্থানি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। আমদানি রসুন বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। আদা বিক্রি হয়েছে মানভেদে ১৬০ থেকে ১৯০ টাকায়। আর গত সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া মসুর ডালের দাম এ সপ্তাহে রয়েছে স্থিতিতে। বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৪৫ টাকা পর্যন্ত। চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়।
আর সপ্তাহের ব্যবধানে কমেনি ব্রয়লার মুরগি ও ডিমসহ মাংসের দাম। বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা, সোনালি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৫২০ টাকায়। আর ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা ডজনে। কমেনি গরু ও খাসির মাংসের দাম। বাজারে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা আর খাসি ১১০০ টাকার বেশি দরে বিক্রি করছে মাংস বিক্রেতারা।
এদিকে বাজারে সবজির যোগান পর্যাপ্ত থাকার পরও চড়া বাজারে স্থিতিতে রয়েছে সবজির দাম। দুই সপ্তাহ ধরে বাজার তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলোর টানা অভিযানেও কমেনি আলুর দাম। তাছাড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকার নিচে মিলছে না কোন সবজি।
বাজারে প্রতিকেজি মুন্সীগঞ্জের আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। দেশী গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তাছাড়া প্রতি কেজি ঢেড়স, ঝিঙ্গে, পটল, চিচিঙ্গা, কাকরোল বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। এছাড়া তিতা করলা ৮০ টাকা, টমেটো ৭০ থেকে ৯০ টাকা, গাজর ১২০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
সবজির মতো চড়া বাজারে স্থিতিতে রয়েছে মাছের দামও। বাজারে দেশীয় চাষের মাছের পাশাপাশি পর্যাপ্ত যোগান রয়েছে সমুদ্রের মাছের। কিন্তু যোগান অনুযায়ী মাছের দাম বেশ চড়া।
বাজারে আধাকেজি ওজনের প্রতিকেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা ও ১ কেজি ওজনের ইলিশ এখনো ১২০০ টাকার বেশি। চাষের পাঙ্গাস ও নাইলোটিকা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকার দরে। এছাড়া মাঝারি সাইজের রুই, কাতলা জাতীয় কার্প জাতীয় মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা দরে।
মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, শ্রমিক মজুরি, সমুদ্রে যাতায়াত খরচসহ নানা খরচ বাড়াতেই যোগান ভালো থাকলেও বাড়ছে মাছের দাম।
অন্যদিকে বাজার ব্যবস্থায় অস্থিতিশীলতা ঠেকাতে জোরালো তদারকির আশ্বাস দিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
সংস্থাটির উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ বলেন, বাজার তদারকিতে প্রয়োজনে অভিযান আরও বাড়ানো হবে।