সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটিতে অস্ট্রেলিয়াকে দাপটের সঙ্গে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আজ (শুক্রবার) জিতলেই অজিদের বিপক্ষে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো সিরিজ জেতার উৎসব করবে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। যদিও আজ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কেবল অস্ট্রেলিয়াই নয়, আবহাওয়াও। আবহাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিন টানা বৃষ্টি থাকতে পারে। সেটি হলে সিরিজ জয়ের মিশনটা দীর্ঘায়িত হতে পারে স্বাগতিকদের। তবে সব ঠিক থাকলে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দুই দলের লড়াইটা শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি, টি স্পোর্টস ও গাজী টেলিভিশন।
বিশ্বকাপ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোনও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না বাংলাদেশের। তার মধ্যে বিশ্বকাপে খেলা চার ম্যাচেই বাজেভাবে হারতে হয়েছিল। এমন পরিসংখ্যান সঙ্গী করেই শুরু হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি মিশন। সেই মিশনে সফরকারীদের অহং চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছে স্বাগতিকরা। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই অজিদের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলছে মাহমুদউল্লাহরা। বিশেষ করে, বাংলাদেশের বোলারদের সামনে রীতিমতো খাবি খাচ্ছেন সফরকারী ব্যাটসম্যানরা।
প্রথম ম্যাচে নাসুম আহমেদের ঘূর্ণিতে ১০৮ রানে অলআউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে মোস্তাফিজুর রহমানের কাটার-স্লোয়ারের সামনে ১২১ রানের বেশি করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। তবে তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামার আগে কৌশলে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে সফরকারীরা। একাদশে আসতে পারে একাধিক পরিবর্তন। জয়ের দেখা পেতে মরিয়া অস্ট্রেলিয়া বৃহস্পতিবার কঠোর অনুশীলন করে কাটিয়েছে। যেভাবেই হোক মোস্তাফিজ, নাসুম, সাকিবের বিপক্ষে জিততেই হবে!
মোস্তাফিজ-সাকিবদের বোলিংয়ে খাবি খাওয়া অজি ব্যাটসম্যান মোয়েসেস হেনরিকস যেমন বলেছেন, ‘এটা অস্ট্রেলিয়ার মতো পরিচিত কন্ডিশন নয়। তবে যদি আমরা মানিয়ে নিতে পারি, তাহলে আমার বিশ্বাস, আমরা এখনও সিরিজ জিততে পারি। আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর পথ বের করতে হবে। এখানে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। কাউকে শেষ পর্যন্ত থাকতেও হয়, আবার ১৪০-১৫০ করার জন্য ঝুঁকিও নিতে হয়।’
হেনরিকেসের মতো অ্যাশটন অ্যাগারেরও একই কথা, ‘মিরপুরের উইকেট স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য। আমাদের কিছু স্পিনার বেঞ্চে বসে আছে। অ্যাশটন টার্নার ওয়েস্ট ইন্ডিজে বেশ ভালো বল করেছে, সেও বল করতে পারে। আমরা উইকেট দেখে যা বুঝলাম, স্লো বোলাররাই এখানে মূল ভূমিকা নিচ্ছে। এটা অবশ্যই হতে পারে। এটা নির্ভর করবে দলের ওপর।’ হেনরিকস ও অ্যাগারের কথাতে স্পষ্ট আজ অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে হলে আরও কৌশলী হতে হবে স্বাগতিকদের।
এদিকে বাংলাদেশের বোলিং-ফিল্ডিং দুর্দান্ত হলেও ব্যাটিং ঠিকঠাক হচ্ছে না। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও টপ অর্ডার ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে, ওপেনিংয়ে খেলা সৌম্য সরকার দ্রুত ফিরে যাওয়াতে মিডল অর্ডারে চাপ তৈরি হচ্ছে। সেই চাপেই প্রথম ম্যাচে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করতে পারেনি বাংলাদেশ। আর দ্বিতীয় ম্যাচ তো মাঝপথে খেই হারিয়ে ফেলেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। সুতরাং, দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শুক্রবার সিরিজ নিশ্চিত করতে হলে ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে হবে। সাকিবের পাশাপাশি মাহমুদউল্লাহকে নিতে হবে দায়িত্ব। ভাঙতে হবে ব্যর্থতার দেয়াল।
তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ একাদশে একটি পরিবর্তনের গুঞ্জন। পরপর দুই ম্যাচ ব্যর্থ ওপেনার সৌম্য সরকারকে হয়তো চলে যেতে হচ্ছে একাদশের বাইরে। তার জায়গায় দেখা যেতে পারে মোহাম্মদ মিঠুনকে।
টানা দুই ম্যাচ জিতে সিরিজে এগিয়ে থাকায় সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের সুযোগ আজই শেষ হয়ে যাচ্ছে এমন নয়, বাকি থাকা ম্যাচগুলোর একটি জিতলেই হবে। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক খুব সতর্ক। প্রতিটি ম্যাচেই নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিতে প্রস্তত মাহমুদউল্লাহ, ‘আমরা প্রত্যেকটা ম্যাচকে আলাদা করে দেখছি। তবে আমাদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। এবং নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে পারফর্ম করতে হবে।’
তাহলেই হবে সিরিজ জয়ের উৎসব। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আছে বৃষ্টির সম্ভাবনা। উৎসব করতে হলে তাই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বৃষ্টির বাধাও টপকাতে হবে বাংলাদেশকে!