সুপ্রভাত ডেস্ক »
আজ ৮ জুলাই শুক্রবার পবিত্র হজ। মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় জমায়েত হচ্ছে হজ। হজ মুসলমানদের জন্য একটি আবশ্যকীয় ইবাদত। এটি ইসলাম ধর্মের চতুর্থ স্তম্ভ। শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জীবনে একবার হজ সম্পাদন করা ফরজ।
আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। আজ এ ময়দান ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক, লা শারিকা লাক’ (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সা¤্রাজ্যও তোমার) ধ্বনিতে মুখরিত হবে।
হজে অংশগ্রহণকারীরা আজ ফজরের নামাজ আদায় করে মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের এ ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন হাজিরা। পরে এ ময়দান থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন। রাতে মুজদালিফায় অবস্থান করবেন। শয়তানের উদ্দেশে নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করবেন সেখান থেকে। কাল শনিবার ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরবেন। মিনায় এসে বড় শয়তানের উদ্দেশে সাতটি পাথর মারবেন, দমে শোকর বা কোরবানি ও মাথা মু-ন বা চুল ছেঁটে গোসল করবেন। সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড়ও বদল করবেন। এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মসজিদুল হারামে গিয়ে কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। এ ছাড়া সাফা-মারওয়া সাঈ (সাতবার দৌড়াবেন) করবেন। তাওয়াফ ও সাঈ শেষে তারা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানের উদ্দেশে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। এভাবেই হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
এবার ১০ লাখ মুসল্লি হজ পালনের জন্য মক্কায় সমবেত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আট লাখ ৫০ হাজার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। অন্যরা সৌদি আরবের নাগরিক।
গত ২০২০ এবং ২০২১ সালে করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে সীমিত আকারে হজ পালন হয়। তবে এবারের হজের সমাবেশ অনেক বড় তবে করোনা পূর্ববর্তী স্বাভাবিক হজের চেয়ে ছোট। ২০১৯ সালে হজে প্রায় ২৫ লাখ লোকের সমাবেশ হয়েছে। এবার হজ পালন করতে পারছেন সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন নেওয়া ১০ লাখ মানুষ। ২০২১ সালে সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন নেওয়া মাত্র ৬০ হাজার সৌদি নাগরিক এবং সৌদিতে বসবাসকারী লোকদের হজ পালনের সুযোগ দেওয়া হয়। যা ২০২০ সালের চেয়ে কয়েক হাজার বেশি।
সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হজ উপলক্ষে পবিত্র মক্কা ও মদিনা শহরে ২৩টি হাসপাতাল ও ১৪৭টি হেলথ সেন্টার প্রস্তু রাখা হয়েছে।
গত বুধবার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, পবিত্র হজ পালনে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যাওয়ার ফ্লাইট শেষ হয়েছে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩২ দিনে ১৬৫ ফ্লাইটে সৌদি পৌঁছেছেন ৬০ হাজার ১৪৬ জন হজযাত্রী। হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ১৪ জুলাই। ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ৪ আগস্ট।