নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁশখালী »
বাঁশখালীর পশ্চিম চাম্বল জলদাস পাড়ায় মঙ্গলবার রাত ৩টায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ৫২ বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্থরা। গতকাল বুধবার সকালে ও বিকালে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান চৌধুরী ও ওসি মো. কামাল উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা গেছে, জলদাস পাড়ার মিলন জলদাস এর বাড়ি থেকে প্রথমে অগ্নিকা-ের সূত্রপাত হয়। ঘনবসতি হওয়ায় মুহূর্তেই আগুন সব দিকে ছড়িয়ে যায়। রাতে স্থানীয় বাসিন্দা এবং ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ২ ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ৫২ পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এদিকে গত বছর দুর্গাপূজার সময় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনার সময় এই পাড়ায় প্রতিমা ভাংচুর ও মন্দির ভাংচুরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছিল। পুরো জলদাসপাড়া মঙ্গলবার রাতে আগুনে পুড়ে যাওয়ায় মানুষের মনে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বলে গুজব ছড়িয়ে পড়লেও স্থানীয়রা এই অগ্নিকা-ের ঘটনা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে লেগেছে বলে প্রশাসনকে জানিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান চৌধুরী জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ৫২ পরিবারকে নগদ ৫ হাজার টাকা, ১ বান্ডেল টিন, ৩০ কেজি চাউল, ১৬ কেজি শুকনো খাবার, ৫টি কম্বলসহ ত্রিপলে ( তাঁবু)’র ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিকাশ জলদাস নামের এক ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যক্তি বলেন, গভীর রাতে অগ্নিকা- সংঘটিত হওয়ায় তারা কোন কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি। এ ঘটনায় কোন লোকজন হতাহত হয়নি বলে জানা যায়।
অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত বসতঘরের মালিক মৃদল দাস, বাদল দাস, সমীরণ দাস, সম্পদ দাস, সুকুমার দাস, রাজকুমার, সুধীর দাস, স্বপন দাস, রঞ্জুত দাস , হরি দাস, রতন দাস, পরিতোষ দাস, সাগর দাস, সুরেশ দাস, হরিপদ দাস, গুপ্তধন দাস, মধুরাম দাস, শ্রী নন্দ দাস, সন্দা মোহন দাস, সমীরণ দাস, গোপাল দাস, মতিলাল দাস, রাম প্রসাদ, ভাটি রাম দাস, রাখাল দাস, জদু রাম দাসসহ অন্যরা বলেন, ‘আমাদের পেশা সাগরে মাছ ধরা। আমরা ঘর-বাড়ি হারিয়ে চরম অসহায় হয়ে গেছি। আমাদের সন্তানদের লেখাপড়ার বই পুড়ে গেছে।’
বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে এ ঘটনা ঘটেছে। কোন নাশকতার ঘটনা নয়।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দুর্যোগে মনকে দুর্বল করবেন না। সরকার সব সময় মানুষের দুঃখ দুর্দশার সাথী। আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’
স্থানীয় এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘৫২ পরিবারের শতাধিক লোকজনের জন্য সার্বক্ষণিক খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’