সুপ্রভাত ডেস্ক »
বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে বামদলসহ আরও কিছু নেতা যুক্ত হয়ে সরকার উৎখাতে ‘ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন’ জানিয়ে আওয়ামী লীগের অপরাধ কী? সে প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সকালে কৃষক লীগের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এ আয়োজনে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি একটি বিষয় একটু বলতে চাই, এখানে আমি দেখি, প্রায়ই শুনি বক্তৃতায়, আমাদের দেশে কিছু নেতা আছে দুঃসময়ে মানুষের পাশে কতটুকু দাঁড়িয়েছে, সেটা জানি না।
‘করোনাকালীন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্য করেছে কি না, সেটার কিন্তু কোনো লক্ষণ আমরা দেখি নাই। তবে তারা খুব আন্দোলনের জন্য ব্যস্ত।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কিছু ব্যক্তিও জোট বেঁধেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে বিএনপি-জামায়াত জোট, তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আমাদের মান্না সাহেব, ড.কামাল হোসেনসহ তাদের এক গ্রুপ।
‘সেই সাথে আবার যুক্ত কমিউনিস্ট পার্টি এবং আমাদের বাম দল। এই যে বাসদ টাসদ আর কারা কারা। তারা সবাই নাকি এক হয়ে আন্দোলন করবে আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাবে।’
সরকার উৎখাতে এমন তৎপরতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা খুব আন্দোলনের জন্য ব্যস্ত। কী?… এই সরকারকে হটাতে হবে। কোন সরকার? আওয়ামী লীগ সরকার।
‘আমার প্রশ্ন, অপরাধটা কী আওয়ামী লীগের? এটা (উন্নয়ন) কী তাদের ভালো লাগেনি? সেই জন্যই তারা এই সরকারকে হটাতে চায়?’
নির্বাচনী ইশতেহারের প্রসঙ্গ এনে সরকার প্রধান ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের কথা তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই সময়ে আমরা কী অর্জন করেছি?… বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আমরা উন্নীত হয়েছি।
‘আমার প্রশ্ন, এটা কি তাদের ভালো লাগেনি? সেই জন্যই তারা এই সরকারকে হটাতে চায়?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমবার সরকারে এসে আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা ছিল। আমরা ব্যারাক হাউজ নির্মাণ করে দিয়েছিলাম। দ্বিতীয়বার আসার পর থেকে আমরা তাদের সেমি পাকা ঘর তৈরি করে দিচ্ছি।
‘এই যে একটা মানুষ যার কোনো জমি নেই, ঘর নেই কিছু নেই, একটি ঘর পাওয়ার পর তার জীবন জীবিকার পথ সে খুঁজে পাচ্ছে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছে।’
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘এটাই কি আওয়ামী লীগের অপরাধ? এই জন্যই কি এই সরকার হটাতে হবে?’
যারা সরকার উৎখাত করতে চায় তাদের উদ্দেশ্য কী? জানতে চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মানুষগুলোকে এই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে দেওয়া? এটাই তাদের লক্ষ্য? এটাই তাদের উদ্দেশ্য?
‘সেই জন্যই তাদের শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করতে হবে?’
কিছু মানুষ বিদেশে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের রোল মডেল, তখন বাংলাদেশের কিছু মানুষ বিদেশের কাছে নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে ব্যস্ত।
‘এরা সরকার উৎখাতে ব্যস্ত। খুব ভালো কথা। তাদের কর্মসূচি জনগণের কাছে তুলে ধরুক যে, তারা দেশের মানুষের জন্য কী করবে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, সারা দেশে ১০০টা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে, যেখানে দেশি বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে এবং অনেক বড় বড় দেশ বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসছে।
‘এখন আর প্রত্যন্ত অঞ্চলে, গ্রাম অঞ্চলে আগে যেখানে মানুষ তাদের কাদা পায়ে হাঁটতে হতো এখন আর সেখানে কাদা পায়ে হাঁটতে হয় না। সে রাস্তা ঘাট করে দিচ্ছি। এটাও তাদের কাছে অপরাধ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এদেশের কৃষক, শ্রমিক, এদেশের সাধারণ মানুষ, প্রত্যেকটা মানুষের ভাগ্য যাতে পরিবর্তন হয় তার ব্যবস্থা আমরা করেছি।
‘বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে এবং করোনাকালীন দেশে দারিদ্রের হার হ্রাস পেয়েছে। আরও বহু কাজ আমরা করে যাচ্ছি।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘এই যে কাজগুলো আমরা করে যাচ্ছি, এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে। তৃণমূলের মানুষ, গ্রামের মানুষ উপকার পাচ্ছে।’