চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে এত অর্জন, সাফল্য ও উন্নয়ন আর কোন আমলে হয়নি। অথচ ঈর্ষান্বিত একটি মহল যাদের জন্ম ক্যান্টমেন্টে এবং পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করে অতীতে জনগণকে জিম্মি করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে, তারা কিন্তু এসব কিছুই দেখেন না, তারা চোখ থাকিতে অন্ধ। এরা মিথ্যাচারে পটু। তাই বলতে হয়, ‘নাগিনীরা চারিদিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস, শান্তির ললিত বাণী শুনাইবে ব্যর্থ পরিহাস’। তাই নাগিনী ফণা তোলার আগেই তার বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, বাংলাদেশের সকল মহৎ অর্জন ও সাফল্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমেই অর্জিত হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় যে ক’টি নিদর্শন রেখে গেছেন তার মধ্যে প্রধানতম প্রমত্তা পদ্মার বুকে বহুমুখী সেতু নির্মাণ। তাই পৃথিবী আজ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রয়, শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের দিকে। অথচ স্বাধীনতা, বাংলাদেশ এবং পদ্মা সেতুও চায়নি, তারা এই সেতুকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের অশুভ খেলা শুরু করেছে।
গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।
সম্মেলনে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, দলের ঐক্যই আমাদের ভিত্তি এটা প্রমাণ করেছে আজকের সম্মেলন। আওয়ামী লীগের জন্মের পর থেকে তাকে ধ্বংস করার জন্য নানাভাবে প্রাসাদ ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতির নিয়মেই আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়নি। বরং অধিকতর শক্তিশালী হয়ে টিকে ছিল, টিকে আছে এবং টিকে থাকবে। কারণ আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস বন্দুকের নল নয়, জনগণ। মাছ যেমন পানির মধ্যে পরমায়ু পায়, ঠিক তেমনিই আওয়ামী লীগ জনগণের মাঝে পরমায়ু পেয়েছে। তাই আমাদের মনে রাখতে হবে জনগণ যতদিন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় চাইবে, ততদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। এর আগে যারা অবৈধভাবে অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা থেকে আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দেওয়ার অপচেষ্টা করবে জনগণই তাদের ধ্বংস করে দেবে এবং ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে। একনাগারে ১৪ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকায় আত্মতুষ্টি ও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের অবকাশ নেই। কেননা আজ দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশে নানামুখী চক্রান্তের জাল বোনা হচ্ছে। আমাদের অগোচরে কোন অপশক্তি যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে তৃণমূলস্তরের নেতাকর্মীদের সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। এই তৃণমূল স্তরটি হলো আওয়ামী লীগের মূল শক্তি। তাদেরই প্রধান দায়িত্ব সমাজে যেন অপশক্তির বীজ বপিত না হয় এবং মাটি খুঁড়ে অপশক্তির বীজ তুলে ফেলে সমাজকে পাপ, অনাচার ও কলুষতামুক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ শক্তি ও সক্ষমতা বিচার-বিবেচনায় সব সময় সক্রিয় ও গতিশীল এবং দল ও জাতির কঠিন সময় ও দুর্দিনে কখনো কক্ষচ্যূত হয়নি এবং রাজপথেই সক্রিয় ছিল ও আছে। এ ধারাবাহিকতা অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রের নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুযায়ী সংগঠনের স্তর ও কাঠামোকে বিনির্মাণ করে চলেছে। আমরা সাংগঠনিক সুদৃঢ় ঐক্য ও শৃঙ্খলাকে যথাযথ অনুসরণ করে চলেছি। এ ক্ষেত্রে কখনো ব্যত্যয় ঘটতে দেওয়া হয়নি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৩ সালের শেষের দিকে অথবা ২০২৪ সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন দেশ ও জাতির জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনকে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ চ্যালেঞ্জ হিসেবে গড়ে তুলে সংগঠনের তৃণমূল স্তরের কাঠামো ও নেতৃত্ব সৃষ্টিতে উদ্যোগী হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের ব্রত ও একমাত্র লক্ষ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম নগরীর পূর্ণাঙ্গ তিনটি এবং তিনটি আংশিক আসনসহ মোট ৬টি আসনে কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তাঁর বিজয় শতভাগ নিশ্চিত করা- এই ব্রত ও লক্ষ্য পূরণে মহানগর আওয়ামী লীগ তৃণমূলস্তরে নতুন রক্তের সঞ্চালন ঘটাতে আগ্রহী। আমরা চাই তৃণমূল স্তরের নেতৃত্বের ক্ষেত্রে প্রবীণ ও অভিজ্ঞদের সাথে নতুনের মেলবন্ধন ঘটাতে।
ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দীনের সভাপতিত্বে অ্যাড. সাজ্জাদুর রহমান বাচ্চুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাড. সুনীল কুমার সরকার, উপদেষ্টা সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমদু, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হাজী মুহাম্মদ হোসেন, জোবাইরা নার্গিস খান, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দীন খালেদ বাহার, আব্দুল লতিফ টিপু, জাফর আলম চৌধুরী, ডা. নেছার উদ্দীন আহমেদ মঞ্জু, হাজী বেলাল আহমদ, মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী, থানা আওয়ামী লীগের ফিরোজ আহমদ, হাসান মনছুর, সিরাজুল ইসলাম, বক্তব্য রাখেন ক ইউনিটের মো. শাহজাহান, খ ইউনিটের আহমেদুল হক, আনোয়ার, গ ইউনিটের রকিব মোল্লা, বশির আহমদ প্রমুখ।
দ্বিতীয় অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে আব্দুল আজিম সভাপতি ও সাইফুল আলম বাবুকে সাধারণ সম্পাদক করে বাগমনিরাম ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞপ্তি