নিজস্ব প্রতিবেদক <<
আউটার রিং রোড নিয়ে নিজেদের পরিধির শেষ সীমায় যেতে চায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি এবার সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত বর্ধিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে সিডিএ। আর এর মাধ্যমে সিডিএর আওতাধীন এলাকার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্প পৌঁছে যাবে।
আউটার রিং রোড বর্ধিত প্রসঙ্গে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ‘আউটার রিং রোডকে কার্যকর করতে হলে তা মিরসরাই পর্যন্ত বর্ধিত করা ছাড়া উপায় নেই। অন্যথায় টানেল চালু হলে এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বে টার্মিনাল চালু হলে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে সাগর পাড়ের এ রোডের বিকল্প নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সিডিএ’র সীমা রয়েছে বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত। সাগরিকা থেকে তা বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত বর্ধিত করবো। সাগর পাড়ের এই রোডের সাথে ডিটি রোডের সাথে কয়েকটি স্থানে কানেকটিভিটি করা হবে। আর তা করা হলে সহজেই বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ট্রাফিক ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডের সাথে যুক্ত হতে পারবে।
এই রোডটি মিরসরাই ইকোনমিক জোন পর্যন্ত যুক্ত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাগর পাড় দিয়ে এই রোড মিরসরাই ইকোনমিক জোন পর্যন্ত যুক্ত হবে। এতে ইকোনমিক জোন থেকে সহজেই পণ্যবাহী গাড়িগুলো বন্দরমুখী যাতায়াত করতে পারবে।
সিডিএ’র এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে চিটাগাং চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন, ‘চার লেনের এ সড়ক নির্মাণ করা গেলে অবশ্যই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চাপ কমবে। মিরসরাই ইকোনমিক জোন থেকে সহজেই পণ্যবাহী গাড়িগুলো চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে কানেকটিভিটি রাখতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যমান নকশায় অলংকার মোড় ও ফৌজদারহাট অংশে ট্রাফিক জ্যাম বাড়বে। তাই ট্রাফিকগুলোকে যদি মিরসরাই পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায় এবং কয়েকটি ফিডার রোডের মাধ্যমে হাইওয়ের সাথে যুক্ত করা যায় তাহলে তা অনেক যুগোপযোগী হবে। এছাড়া এই রোডটি বর্ধিত হবে টেকনাফ পর্যন্ত। তাই আগামীতে সাগড় পাড় দিয়ে এই রোডের গুরুত্ব আরো বাড়বে।
কিন্তু সাগর পাড়ে বর্তমানে মিরসরাই ইকোনমিক জোন অংশে ৩০ ফুট চওড়া সুপার ডাইক নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফেনী নদীর মোহনা থেকে মিরসরাই-সীতাকুণ্ড বর্ডার পর্যন্ত ২২.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সুপার ডাইক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে মিরসরাই ইকোনমিক জোন অংশের তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রোডের কাজ শেষ হয়েছে।
এ প্রকল্পের বর্ধিতাংশ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শীবেন্দু খাস্তগীর বলেন,‘ সাগর পাড়ে রোড নির্মাণের কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তাই প্রকল্প নিলে আমরাই নিবো। সিডিএ পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা পর্যন্ত যে আউটার রিং রোড নির্মাণ করেছে সেই বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। এই সড়কটি আমরা টেকনাফ পর্যন্ত বর্ধিত করবো।’
উল্লেখ্য, পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ আউটার রিং রোড নির্মাণ করছে সিডিএ। এই প্রকল্পের সাথে তিনটি ফিডার রোড রয়েছে। এরমধ্যে একটি হলো পতেঙ্গা খেজুরতলা অংশ দিয়ে, দ্বিতীয়টি বড়পোল এবং তৃতীয়টি সাগরিকা দিয়ে। বর্তমানে সাগরিকা ফিডার রোডের কাজ চললেও বাকি দুটি ফিডার রোডের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি। টানেলের সাথে যুক্ত এই রোড ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।