সুপ্রভাত ডেস্ক »
দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ বাড়তে দেননি অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। ১১৯ রানের সহজ লক্ষ্যই পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে এই রান করতেও রীতিমতো ঘাম ঝরলো অ্যারন ফিঞ্চদের। ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত হলেও ম্যাচের উত্তেজনা শেষ ওভার পর্যন্ত জমা ছিল। অবশেষে ২ বল আগে ৫ উইকেট হারিয়ে জয় দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া।
শনিবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের পর মনে হয়েছিল, সহজেই লক্ষ্য পেরিয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু প্রোটিয়াদের বোলার ও ফিল্ডাররা তা হতে দেননি। শুরু থেকে অজিদের চেপে ধরে ম্যাচের উত্তেজনা রেখেছে শেষ ওভার পর্যন্ত। খবর বাংলাট্রিবিউন।
অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন। ফর্ম খুঁজে বেড়ানো ডেভিড ওয়ার্নার ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি। বাংলাদেশ সফরে দারুণ পারফর্ম করা মিচেল মার্শও ব্যর্থ। ওয়ান ডাউনে নেমে করেন ১১ রান। তাতে ৩৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া।
ওই জায়গা থেকে প্রতিরোধ শুরু স্টিভেন স্মিথ ও গ্নেন ম্যাক্সওয়েলের। তাদের ৪৪ রানের জুটিতে জয়ের পথ তৈরি হয়। কিন্তু আনরিখ নর্কিয়ার বলে স্টিভেন স্মিথ লং অনে এইডেন মারক্রামের দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হলে দৃশ্যপট পাল্টে যায়। ৩৪ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৩৫ রান করেন স্মিথ। তার বিদায়ের পরপরই ২১ বলে ১ বাউন্ডারিতে ১৮ রান করা ম্যাক্সওয়েল বোল্ড হয়ে যান তাবরেজ শামসির বলে।
শঙ্কা জন্মে অস্ট্রেলিয়া ক্যাম্পে। যদিও মার্কাস স্টোইনিস ও ম্যাথু ওয়েডের ব্যাটে জয় নিশ্চিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান। স্টোইনিস দারুণ ব্যাটিংয়ে ২ বল আগেই সমীকরণ মিলিয়ে দেন। এই ব্যাটার ১৬ বলে ৩ বাউন্ডারিতে অপরাজিত থাকেন ২৪ রানে। অন্যদিকে ওয়েড ১০ বলে ২ বাউন্ডা্রেিত অপরাজিত ছিলেন ১৫ রানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে সফল বোলার নর্কিয়া। এই পেসার ২ ওভারে ২১ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন কাগিসো রাবাদা, কেশব মহারাজ ও শামসি।
সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না দক্ষিণ আফ্রিকার। যাদের চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে দর্শকদের উন্মাদনা লেগে থাকতো, সেই দলটিই খুঁড়িয়ে চলছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল তারা। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামনে কঠিন পরীক্ষা দিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে করতে পারে ১১৮ রান।
প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত অস্ট্রেলিয়ার। পেসারদের সঙ্গে স্পিনারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে শুরু থেকেই প্রোটিয়া ব্যাটারদের চাপে রাখে। উইকেট উৎসবের শুরুটা করেছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এই স্পিনার বোল্ড করে ফেরান ১২ রান করা তেম্বা বাভুমাকে।
প্রোটিয়া অধিনায়কের বিদায়ে চাপে পড়া দলকে টেনে তুলতে ব্যর্থ হন রাসি ফন ডের ডুসেন। জশ হ্যাজেলউডের প্রথম শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মাত্র ২ রান করে। বেশ বাইরের বল খোঁচা দিয়ে ধরা পড়েন উইকেটকিপার ম্যাথু ওয়েডের গ্লাভসে।
হতাশা ছাড়েনি দক্ষিণ আফ্রিকার। খানিক পর দুঃখজনক আউটের শিকার হয়ে ফিরে যান কুইন্টন ডি কক। এই উইকেটকিপার ব্যাটার থার্ডম্যান দিয়ে বল বের করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল ব্যাটে লেগে উঠে যায়, এরপর ক্রিজে ড্রপ খেয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। হ্যাজেলউডের বলে এভাবে ফেরার আগে ডি কক করেন মাত্র ৭ রান।
২৩ রানে ৩ উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রকাকে পথে ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন হেনরিক ক্লাসেন। কিন্তু প্যাট কামিন্সের বলে বেশিদূর যেতে পারেননি। ১৩ বলে ১৩ রানে ফিরে যান। এরপর অবশ্য দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন এইডেন মারক্রাম ও ডেভিড মিলার। কিন্তু অ্যাডাম জাম্পার বলে মিলার ১৬ রান করে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হলে আবার ভেঙে পড়ে ব্যাটিং লাইনআপ।
দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ ইনিংস এসেছে মারক্রামের ব্যাট থেকে। চার নম্বরে নেমে এই ব্যাটার ৩৬ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় খেলেন ৪০ রানের ইনিংস। তার ওই এক ছক্কার পর আরেকটি ছয়ের মার এসেছে কাগিসো রাবাদার ব্যাট থেকে। এই পেসারের ২৩ বলে খেলা হার না মানা ১৯ রানের ইনিংসে মূলত ১১৮ পর্যন্ত গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ।অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ বোলারই পেয়েছেন উইকেট। হ্যাজেলউড ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। তার মতো ২টি করে উইকেট পেয়েছেন জাম্পা ও মিচেল স্টার্ক। আর একটি করে উইকেট নিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল ও কামিন্স।