সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছে, ‘খালে ভেসে উঠা শিশুর হাত দেখে স্থানীয়রা প্রথমে মনে করেছিল পুতুল। পরে খালে নেমে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আসলে পুতুলের মত শিশুটি দুদিন আগে প্রাণ হারিয়েছে নালায় পড়ে। আর তার এই মৃত্যু আমাদের দায়িত্বহীনতাকে আবারও ব্যঙ্গ করে গেল নির্মমভাবে।
চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার কাপাসগোলায় রিকশা উল্টে খালে পড়ে মায়ের কোল থেকে নিখোঁজ হওয়া ছয় মাস বয়সী শিশু সেহরিশের মরদেহ উদ্ধার করা হয় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে চামড়ার গুদাম এলাকায়। চাক্তাই খালে ভেসে উঠতে দেখে মৃতদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শিশুটির নাম সেহরিশ। সে আছাদগঞ্জ এলাকার মো. শহীদুলের ছেলে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে খালে ভেসে উঠা শিশুর হাত দেখে স্থানীয়রা প্রথমে মনে করেছিল পুতুল। পরে খালে নেমে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাতে আত্মীয়ের বাসায় যাওয়ার পথে কাপাসগোলা এলাকায় রিকশা উল্টে গেলে মা-দাদীসহ শিশুটি খালে পড়ে যায়। মা-দাদীকে উদ্ধার করা গেলেও পানির স্রোতে হারিয়ে যায় শিশুটি। এরপরই উদ্ধার কাজে নামে নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
চট্টগ্রামে ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট আগ্রাবাদ রঙ্গিপাড়ায় নালায় পড়ে এক শিশু নিখোঁজ হয়। একই বছর সাত আগস্ট বাদামতলা এলাকার নালায় পড়ে মৃত্যু হয় কলেজছাত্রী নিপার। ২০২১ সালের ৩০ জুন মেয়রগলিতে খালে পড়ে অটোরিকশাচালক ও এক যাত্রীর মৃত্যু হয়। ওই বছরের ২৫ আগস্ট মুরাদপুরে চশমা খালে পড়ে তলিয়ে যান সবজি বিক্রেতা ছালেহ আহমেদ। তার মরদেহ আর পাওয়া যায়নি।
খালে পড়ে সাত মাসের শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় নিজেরও দায় দেখছেন সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন। শনিবার নগরীর চাক্তাই আসাদগঞ্জ এলাকায় এক সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “যদিও সিডিএ এসব খালের কাজ করছে। কিন্তু একজন মানুষ হিসেবে, একটি সেবা সংস্থার প্রধান হিসেবে এ দায় কখনও এড়াতে পারি না।”
মেয়র বলেন, “সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব আছে বলে আমি মনে করি। নগর সরকার ব্যবস্থা থাকলে হয়ত সমন্বয় থাকত। আমি কিছু বললে হয়ত তারা শুনত। এসব যতক্ষণ হবে না ততক্ষণ সমন্বয় হবে না।”
আসলে আমরা এখন আর কী বলতে পারি? এতগুলো মৃত্যুর পরও যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সচেতন না হয় তাহলে এ দেশে জন্মেছি বলে এটাই আমাদের নিয়তি বলে মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।