সুপ্রভাত ডেস্ক »
পদত্যাগ করেছেন বিক্ষোভের মুখে দেশ থেকে পালানো শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। বৃহস্পতিবার মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুর পৌঁছার পর পদত্যাগ করেন তিনি। তার পদত্যাগের খবর কলম্বোতে বিক্ষোভকারীরা আতশবাজি পুড়িয়ে উদযাপন করছেন। পার্লামেন্টের স্পিকার নিশ্চিত করেছেন, তিনি রাজপাকসের পদত্যাগপত্র পেয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স লঙ্কান সরকারের দুটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, গোটাবায়া পার্লামেন্টের স্পিকারের কাছে ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। খবর বাংলাট্রিবিউন।
সূত্র দুটি আরও জানায়, গোটাবায়া সিঙ্গাপুর অবতরণের পর এটি পাঠিয়েছেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। এছাড়া ইমেইল হিসেবে পাঠানো পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে কিনা তাও অস্পষ্ট।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের বাসভবন, প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিক্ষোভকারীরা সরে যাওয়ার ঘোষণার দিন পদত্যাগ করলেন গোটাবায়া।
সিঙ্গাপুর সরকার নিশ্চিত করেছে, গোটাবায়া ব্যক্তিগত সফরে গিয়েছেন এবং রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রেফতার থেকে দায়মুক্তি ছিল রাজপাকসের। এই দায়মুক্তি কাজে লাগিয়ে তিনি শ্রীলঙ্কা ছেড়েছেন। গ্রেফতার এড়াতে তিনি দেশ ত্যাগের পর পদত্যাগ করেছেন।
বিবিসি লিখেছে, রাজাপাকসে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করবেন না সেখান থেকে অন্য কোনো দেশে যাওয়ার চেষ্টা করবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, গোটাবায়া রাজাপাকসে রাজনৈতিক আশ্রয়ের কোনো আবেদন করেননি, তাকে রাজনৈতিক আশ্রয়ও দেওয়া হয়নি। সিঙ্গাপুর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন সাধারণত অনুমোদন করে না।
স্বাধীনতার পর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত শ্রীলঙ্কার মানুষ দেশের এ পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে এবং তার পরিবারকে দায়ী করে আসছে।
প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে বুধবার তিনি পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দিলেও মঙ্গলবার রাতে তিনি একটি সামরিক বিমানে করে পালিয়ে মালদ্বীপে চলে যান। পরদিন সেখান থেকে সৌদিয়ার একটি ফ্লাইটে পৌঁছান সিঙ্গাপুরে।
এদিকে বৃহস্পতিবারও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগপত্র স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনের হাতে না পৌঁছানোয় শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক জটিলতা বাড়ছে।
তার পদত্যাগপত্র হাতে পেলে তবেই স্পিকার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। সেজন্য শুক্রবার পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু এবং ২০ জুলাই প্রসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটাভুটির তারিখ ঠিক করে দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু প্রেসিডেন্টের পদত্যাগপত্র হাতে না পাওয়ায় শুক্রবার পার্লামেন্ট বসছে না বলে জানিয়েছেন স্পিকার।
বিবিসি লিখেছে, প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় আইন অনুযায়ী গোটাবায়া রাজাপাকসেকে গ্রেফতার করার সুযোগ নেই। নতুন সরকার এলে গ্রেফতার হওয়ার ঝুঁকি থাকবে ধরে নিয়েই তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিতে সময় নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।