পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সীতাকুণ্ড থানার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মীর্জানগর জেলে পাড়ায় অপু জলদাশ (২২) হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে তার পরিবার।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত অপু জলদাশের স্ত্রী মাধবী রানী জলদাশ লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে মাধবী রানী জলদাশ বলেন, অপু জলদাশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছে খুনিচক্র। প্রয়াত ব্যবসায়িক পার্টনারের স্ত্রী সীমা ও তার প্রেমিকের পরকীয়া প্রেমের বলি হয়েছেন আমার নিরাপরাধ স্বামী অপু জলদাশ।
স্বামী হত্যার ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার স্বামী অপু জলদাশ কয়েক বছর ধরে একই এলাকার মৃত রতন জলদাশের পরিবারের সাথে যৌথভাবে মাছের ব্যবসা করে আসছিল। এ কারণে রতন জলদাশের পরিবারের সাথে তার বেশ সখ্যতা গড়ে উঠে। রতন জলদাস গত বছর মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী সীমা জলদাশ তার স্বামীর ব্যবসা দেখাশুনা করতেন এবং আমার স্বামী অপু জলদাশ তাকে নিয়মিত সাহায্য সহযোগিতা করতেন। এক পর্যায়ে তিনি রতন জলদাশের আরেক বন্ধু রুবেল জলদাশের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। আমার স্বামী তাদের অবৈধ সম্পর্কের কথা জানত এবং তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে ফেলে। প্রয়াত বন্ধু রতন জলদাশের সাথে সম্পর্কের বিষয় চিন্তা করে তাদের দু’জনকে অনৈতিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দিলে তারা আমার স¦ামীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। হত্যাকাণ্ডের দুদিন পূর্বে রুবেল জলদাশ ও আকাশ জলদাশ সীমা জলদাশের উপস্থিতিতে আমার স্বামীকে হুমকি দেয়। ঘটনার দিন ৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার দিকে আমার স্বামী ব্যবসায়িক কাজে ঘর থেকে বের হয়। পরে জানতে পারি আমার স্বামীকে আসামি রুবেল জলদাশ সীমা জলদাশ ঘরে ঢেকে নিয়ে যায়। তখন ঘরে আসামি আকাশ জলদাশ ও বালি জলদাশ উপস্থিত ছিলেন। তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
মাধবী জলদাশ আরও বলেন, পুলিশও প্রভাবশালীদের প্ররোচনায় আমার স্বজনদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা নিয়ে আমার মৃত স্বামীর ভাইকে গ্রেফতার করেছে। স্বামীর হত্যার পর মামলা করার জন্য থানায় গেলে মামলা নেয়নি। পরে হত্যার ১০ দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি ২য় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চট্টগ্রামে মামলা করেছি। আদালত মামলা তদন্তের জন্য সীতাকুণ্ড থানাকে নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত মামলার কোন অগ্রগতি নেই। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিতে আমাদের নানাভাবে হামলা-মামলার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে আসামিরা।
অপু জলদাশ হত্যার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক বিচারের জন্য মামলাটি র্যাব অথবা পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়ার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জীবন জলদাশ, রায়মোহন জলদাশ, দিবস দাশ, কাজলী বালা দাশ প্রমুখ।