করোনা দুর্যোগকালীন সময়ে রোগীর জীবন বাঁচানোর অত্যাবশ্যকীয় উপাদান অক্সিজেনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে কোনো মানুষ সঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। আজ ৩ জুন (বুধবার) এক বিবৃতিতে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এ সময় সুজন বলেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাস কেন্দ্রিক পরিস্থিতিতে রোগীরা অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট ভোগ করছে। সাধারণ জ্বর-কাশি উপসর্গের রোগীরাও সামান্য চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার ফলে মৃত্যু মুখে পতিত হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে রোগীর জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হিসেবে দেখা দিয়েছে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ। অথচ সেই কাক্সিক্ষত অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। হাসপাতালগুলোতেও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা না থাকায় রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েছে অনেকাংশে।
তিনি আরো বলেন, একদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলো রোগীদের পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে না অন্যদিকে জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেনসহ সাধারণ রোগীর জ্বরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধপত্রও পাওয়া যাচ্ছে না। সাধারণ জ্বরের জন্য ডাক্তারের পরামর্শকৃত সহজলভ্য ঔষধ চাইলেও সহজে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ এসব ওষুধগুলো আগে নিকটস্থ ঔষধের দোকানে হাতের নাগালে পাওয়া যেতো। মনে হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দুষ্টু সিন্ডিকেট চক্রটি জনগণের স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জামাদির উপর ভর করেছে। রোনা পরিস্থিতিকে পুঁজি করে জনগণকে অস্থির করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এসব ওষুধের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে ইচ্ছে করেই। পরিকল্পিতভাবে চট্টগ্রামের মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, একদিকে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা নেই অন্যদিকে জনগণ যদি বাড়িতে বসেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা না পায় তাহলে সেটা হবে অত্যন্ত বেদনাদায়ক। অক্সিজেন সরবরাহ প্রতিষ্টানগুলোকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অক্সিজেন সিলিন্ডার বিক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া যেসব ঔষধগুলো এখন জ্বর, সর্দি এবং কাশির জন্য অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ সেসব ঔষধগুলোও অধিক হারে উৎপাদনের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
তিনি আরো বলেন, ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সময় এসেছে এখন সরকারের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর। কোনো ধরনের দুষ্টু চক্রের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্যও ঔষধ ব্যবসার সাথে জড়িতদের নিকটও আহবান জানান তিনি।
এছাড়া তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে নগরীর গণপরিবহন ব্যবসার সাথে জড়িতদের সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলার জন্য আহবান জানান। তিনি বলেন, নগরীর অধিকাংশ গণপরিবহনে সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না। সরকার ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও অতিরিক্ত হারে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে এমনকি গাদাগাদি করে বাস ভর্তি করা হচ্ছে। প্রতিটি গণপরিবহন বারবার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কথা বলা হলেও সে নির্দেশনা পুরোপুরি উপেক্ষিত হচ্ছে। এতে করে চট্টগ্রামে অধিকতর হারে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। তাই জনগণকেই নিজ দায়িত্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি জনসাধারণকে মাস্ক, গ্লাভসসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান। এছাড়া যারা সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন না তাদের বিরুদ্ধেও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করার অনুরোধ জানান। বিজ্ঞপ্তি
মহানগর