Blog Page 13

পর্যটকে মুখর রাঙামাটি

ফজলে এলাহী, রাঙামাটি »

নগরজীবন ফেলে একটু স্বস্তির খোঁজে রাজধানী শহর ছাড়া মানুষের ভিড়ে মুখর এখন হ্রদ পাহাড়ের শহর রাঙামাটি। ঈদের দিন থেকেই শহরের হোটেল মোটেল পথঘাট ভরে গেছে আগন্তুকদের পদভারে। চলতি পথে এখন শুধুইবেড়াতে আসা পর্যটকদের মুখরতা। কাপ্তাই হ্রদ জুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছে নৌবিহারের নানান আকার ও প্রকৃতির ইঞ্জিন বোট। ঈদের পরদিন রোববার সকাল থেকে শহরে দেখা গেছে একই চিত্র। অনিবার্য গন্তব্য ঝুলন্ত সেতু কিংবা পলওয়েল পার্ক হয়ে শহরের সব পর্যটন স্পটেই মানুষের ভিড়ে ছিলো মুখর।
‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ ঝুলন্ত সেতু পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। সকাল থেকে দলে দলে পর্যটকরা ভ্রমণ করছেন বিনোদনের জনপ্রিয় এই স্থানে। কেউ আসছেন পরিবার নিয়ে, কেউ আসছেন দম্পতি আবার কেউ আসছেন বন্ধুদের সাথে দল বেঁধে। ঝুলন্ত সেতু ঘুরে-ফিরে আনন্দ উপভোগ করছেন।
শুধুই ঝুলন্ত সেতুতেই তাদের ভ্রমণ সীমাবদ্ধ নয়। পর্যটন নৌ ঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে কাপ্তাই হ্রদে নৌ বিহারও করছেন পর্যটকরা। হ্রদ, পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করে যান্ত্রিক জীবনের একঘেঁয়েমি দূর করছেন। মায়াবী আইল্যান্ডের ব্যবস্থাপক মিঠুন ত্রিপুরা বলছেন, আমাদের দ্বীপে ঈদের দিনও প্রচুর মানুষ এসেছে, সকাল থেকেই অনেক ভিড়। কটেজগুলোতো আগে থেকেই বুকিং হয়ে আছে। সবমিলিয়ে বেশ উৎসবমুখর পরিবেশ।
রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশন এর ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলছেন, আমি আগেই বলেছিলাম রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক আসবেন এবার। প্রথম দিনের পর্যটক দেখে সেটাই মনে হচ্ছে। ভারতে ভ্রমণ ভিসা বন্ধ থাকা এবং দেশের বাইরে অন্যান্য দেশেও যাওয়টা কঠিন হয়ে পড়ায় দেশের ভেতর কক্সবাজারের পর রাঙামাটিই সবচে প্রিয় গন্তব্য পর্যটকদের। স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর পর্যটক আসছেন। এই ভিড় অন্তত ১৩ জুন অবধি থাকবে।
রাঙামাটি টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ান বলছেন , এবার বেশি পর্যটক আসবেন এটা আমাদের ভাবনাতেও ছিলো। সেই মোতাবেক আমাদের প্রস্তুতিও আছে। আমাদের মোবাইল টিম সবখানে টহলে আছে,গাড়ি, মোটরসাইকেল এমনকি স্পিডবোটেও। পর্যটকদের নিরাপত্তা কিংবা যেকোন প্রয়োজনে আমরা পাশে আছি। ইতোমধ্যেই শহরের বিভিনস্থানে আমরা আমাদের সেবা ও জরুরি নাম্বারসমূহ দিয়ে ব্যানার ফেস্টুন ঝুলিয়ে দিয়েছি। পর্যটকদের প্রতি আমাদেরও অনুরোধ থাকবে, যেকোন সমস্যায় যেনো আমাদের শরণাপন হয়।
রাঙামাটি টুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহসভাপতি রমজান আলী বলছেন, অসংখ্য পর্যটক আসছেন, আমরাও চেষ্টা করছি সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার। আরো কদিন এই ব্যস্ততা থাকবে বলেই আশা করছি।’

চট্টগ্রামে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ : জনসচেতনতা জরুরি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সম্প্রতি ওমিক্রনের কয়েকটি নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট—এলএফ.৭, এক্সএফজি, জেএন-১ এবং এনবি ১.৮.১—এর সংক্রমণ বিভিন্ন দেশে দ্রুত হারে বাড়ছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে এই ভ্যারিয়েন্টগুলো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ভারতসহ আশপাশের কয়েকটি দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে। সেই সঙ্গে প্রয়োজন ছাড়া এসব দেশে ভ্রমণ না করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে যেসব বিদেশি যাত্রী বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন, তাদেরও স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে।
উদ্বেগের বিষয় যে, ঢাকার পর চট্টগ্রামেও নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, জেলায় তিনজন রোগী শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম। সংক্রমণ ঠেকাতে আবার মাস্ক পরা, ভিড় এড়িয়ে চলাসহ নানা পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও।
জেলা সিভিল সার্জন জানান, গত মঙ্গলবার জানান সেদিন চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর আগে মা ও শিশু হাসপাতালে আরও দুজন রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল।
অবশ্য স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আইসোলেশন হাসপাতাল নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর চট্টগ্রামে এটি প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ঘটনা। এর আগে শেষ কবে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
পত্রিকার খবরে জানা গেছে, চট্টগ্রামে কোভিড শনাক্ত করার কিটের সংকট রয়েছে। সরকারি আরটি-পিসিআর ল্যাবে এখন কিট নেই। শনাক্তের কিট কেবল বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় রয়েছে।
এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে কোভিড-১৯–এর নতুন ধরন ছড়াচ্ছে। ভারতের এনবি ১.৮.১ নামের নতুন ধরনটিও ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত ২৩ মে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এনবি ১.৮.১ ধরনটির সংক্রমণের হার তুলনামূলক বেশি এবং এটি দ্রুত ছড়াচ্ছে।
এখন আগের মতো আবার সতর্কতা জরুরি হয়ে পড়েছে। মনে রাখতে হবে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ অনেক বেশি কার্যকর পন্থা। এ নিয়মগুলো অনুসরণ করে আমরা করোনাকে প্রতিরোধ করতে পারি।
১. সাতবার প্রয়োজনমতো সাবান দিয়ে হাত ধোয়া (অন্তত ২৩ সেকেন্ড) । ২. নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা। ৩. আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকতে হবে। ৪. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না। ৫. হাঁচি-কাশির সময় বাহু বা টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন।
সন্দেহভাজনদের ক্ষেত্রে করণীয়
• অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন। • মারাত্মক অসুস্থ হলে কাছের হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।• রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন।

লঙ্কা সফরে ভালো করার প্রত্যয় শান্ত’র

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »

২ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে এবং ৩ টি-টোয়েন্টির সিরিজ খেলতে শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আগামী ১৭ জুন গল টেস্ট দিয়ে শুরু হবে টাইগারদের লঙ্কা সফর। এর আগে প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্টিই ঝরেছে টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং পাকিস্তান সফরে তেমন সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। আমিরাতের কাছে সিরিজ হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। পাকিস্তানের কাছে হেরেছে ৩-০ ব্যবধানে। যদিও দুই সিরিজই ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের। এবার লঙ্কা সফরে তিন ফরম্যাটেই খেলতে হবে টাইগারদের। সিরিজের আগে গতকাল (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছেন, ‘প্রস্তুতি মোটামুটি ভালোই হয়েছে। তবে আরেকটু ভালো হতে পারত। পাকিস্তান সফর একটু পিছিয়ে যাওয়ায় সময় একটু কম পাওয়া গেছে। তবে অজুহাত দিতে চাই না। যতটুকুই হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। এর আগে আমরা শ্রীলঙ্কায় টেস্ট জিতেছি। আশা করব এবারো ভালো কিছু হবে ইনশাআল্লাহ।’
এছাড়া মাথিশা পাথিরানার মত বোলারদের মোকাবেলা করার প্রস্তুতির ব্যাপারে শান্ত বলেছেন, ‘এরকম টাইপের বোলার তো আমাদের দেশে নাই। সেভাবে প্রস্তুতি নিতে চাইলেও সম্ভব না। আমাদের যারা আছে ওদের মোকাবেলা করেই প্রস্তুতি নিতে হয়। খেলোয়াড়রা অনেক দিন ধরে খেলছে, অভিজ্ঞ দল। ঐ বোলারদের কীভাবে সামলাতে হবে, মানসিকভাবে যতটা প্রস্তুতি নেওয়া যায়, হতে পারে ওদের ভিডিও দেখে। নির্দিষ্ট করে প্রস্তুতি নেওয়া খুব কঠিন। (দেশে যারা আছে তাদের) স্ট্যান্ডার্ড চিন্তা করলে এখনও ওরকম স্ট্যান্ডার্ডের মতো না। যারা আছে অবশ্যই আস্তে আস্তে অনেক উন্নতি করছে। আস্তে আস্তে নেটে আসলে অবশ্যই ব্যাটারদের জন্য ভালো। এই জায়গায় আরও ভালো মানের বল মোকাবেলা করতে কিছুটা ওদের সাথে ম্যাচ করতে পারে।’

আনন্দও সহ্য করি দুর্ভাগ্যের মতো

খালেদ হামিদী »

আমার প্রথম বই, কাব্যগ্রন্থ, আমি অন্তঃসত্ত্বা হবো, প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথকে মনে পড়ে যিনি একটি কবিতায় বলেন: ‘অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেন/তার বক্ষে বেদনা অপার।’ প্রত্যেক প্রকৃত কবিই কষ্ট-কল্পিত নয়, স্বতঃস্ফূর্ত কবিতা রচনার মুহূর্তে এই অলৌকিক কিংবা অনির্বচনীয় আনন্দ অনুভব করেন। আর, প্রথম গ্রন্থিত হবার কালে? নিশ্চয়ই কবি মাত্রই নানা মাত্রায় উচ্ছ্বসিত হন। বিশেষ করে, আমার ক্ষেত্রে তা ছিল এডভেঞ্চারাস কিংবা প্রায় অভিযানতুল্য। এক অপরাহ্নে বন্ধু শাহজাহান আড্ডার এক ফাঁকে হঠাৎ বলে ওঠে: ‘বড় বড় পত্রিকায় শুধু কবিতা বেরুলে হবে? বই বের না করলে তো তোমার মূল্যায়ন হবে না।’ এ-কথায় আমার একপ্রকার বোধোদয় হলেও বলে উঠি: ‘আমার তো বই প্রকাশের টাকা নেই!’ প্রকাশক খোঁজার কথাও হয়তো মাথায় আসেনি। তখন সম্ভবত ১৯৯৯ সালের দ্বিতীয়ার্ধ। বাল্যবন্ধু সারোয়ারসহ আমার পৈতৃক বাড়ির নিকটবর্তী মোড়ের চায়ের দোকানে যাওয়ার সময়, শাহজাহানের সেই কথায়, আমরা তিনজনই দাঁড়িয়ে পড়ি।
তখনই সিদ্ধান্ত হয়, আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ের উত্তর-পূর্ব কোনায়, আমাদের সেই আড্ডাস্থল রেস্টুরেন্টটার বিপরীতে, রাইজ অফসেট প্রিন্টার্সে বই ছাপানো হবে। ছাপাখানাটিতে শাহজাহানের অফিসের কাজ হয়। কিন্তু এডভেঞ্চারের অনুভূতি হয় শুরুতে, কবিতা নির্বাচনের সময়। এরপর এনজিও-কর্মী নির্মল কান্তি সাহা, তাঁর মনিব কবি খুরশীদ আনোয়ারের নির্দেশে, আমার বই কম্পোজ করেন। তাঁদের জামাল খান বাইলেনের অফিসে কতবার যে গিয়েছি তার হিসেব নেই। আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় দুই বন্ধু শাহজাহান ও মহিউদ্দিন এবং বন্ধুপ্রতিম সহকর্মী রাব্বান (বর্তমানে কানাডা প্রবাসী)। শেষোক্ত জনের একটা কথা ভুলতে পারি না: “আমি হাত না বাড়িয়ে তাকিয়ে থেকে ইতিহাসের অভিসম্পাত নিতে চাই না।” আজকের হিসাবে তাঁদের দেওয়া (সম্প্রদান) সেই টাকার অঙ্ক ছোট হলেও মোট খরচের প্রায় অর্ধেক সংকুলান হয়েছিল। বাকি টাকা অনেক সময় নিয়ে কত কিস্তিতে যে প্রেসকে পরিশোধ করেছি মনে নেই। মুদ্রক ভদ্রলোক কোনোদিন রুষ্ট হননি। প্রতিবারই হাসিমুখে বিনীত থেকেছেন। তাঁর নাম আর মনে নেই। সেই প্রেসটিও নেই।
বই প্রকাশের দিন সন্ধ্যায় ছাপাখানার সামনে অসম্ভব আনন্দিত-উচ্ছ্বসিত হয় অনুজপ্রতিম বন্ধু (চবি-র চারুকলা বিভাগের তৎকালীন ছাত্র, বর্তমানে চলচ্চিত্রকার, ঢাকাবাসী) মঈন হাসান ধ্রুব। এর আগে ওর অনুরোধে ঢালী আল মামুন আমার পাণ্ডুলিপি পড়ে প্রচ্ছদ এঁকে দেন। পরে সম্মানী নিতে অসম্মতি জানিয়ে আমাকে তাঁর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ করে তোলেন। প্রচ্ছদের নামলিপির কৃতিত্ব খালিদ আহসানের। তিনিও কিছুই নেননি। পরে দুটি বড়ো পত্রিকায় বইটি মূল্যায়িত হয়।
কিন্তু আমার প্রথম বই আজ নিয়ে আসে অপার বেদনা। প্রকাশের দুই/তিন বছর পরে কবিতাবিরোধী কেউ আমার অজান্তে বইটির শতাধিক কপি সের দরে বিক্রি করে দেন যেগুলো পরে ফুটপাতে দেখতে পান আমার একজন সহকর্মী! এদিকে লাং ক্যান্সার ক্ষমা করেনি শাহজাহানকে। ২০১৩ সালে তাঁকে হারাই। তবুও নিজেকে কিছুটা ভাগ্যবান মনে হয় এ-জন্য যে প্রথম বই প্রকাশের জন্য পাবলো নেরুদার মতো আমাকে ঘরের আসবাব বিক্রি করতে হয়নি। শুধু দেখতে পাই দুই ভিন্ন দৃশ্য: আমরা পড়ন্ত বেলায় নিথর শাহজাহানকে গোরস্তানে নিয়ে যাচ্ছি আর প্রথম বইয়ের বস্তা কাঁধ থেকে পিঠে ঝুলিয়ে গভীর রাতে প্রিন্টিং প্রেস থেকে একা বাড়ি ফিরছেন নেরুদা।

আমি অন্তঃসত্ত্বা হবো; প্রথম প্রকাশ: ডিসেম্বর ১৯৯৯; প্রকাশক: একান্তর প্রকাশনী; প্রচ্ছদ: ঢালী আল মামুন; মূল্য: ৪৫ টাকা

বাংলা সাহিত্যের অমর কথাকার সমরেশ মজুমদার

অরূপ পালিত »

তুমি ফিরবে জানি বহুদিন পরে
হয়তো বা হাজার বছর পরে।
কোন এক নিঃস্ব হৃদয়ে,
লক্ষ প্রাণের ভিড়ে, তুমি ফিরবে।
বহুরুপে সেই প্রাণে, অনেক নবীনের ভিড়ে,
তোমার আমার গড়া ভালবাসার নীড়ে। / (তুমি ফিরবে)
খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার নেই। আমার মানতে কষ্ট হয়। আমার বেশ ইচ্ছে ছিল সামনাসামনি একটুখানি বসে কথা বলার, দুচোখে দেখার। হৃদয়ের কিছু কিছু চাওয়া এবং কথা অতৃপ্ত থেকে যায় সবারই। আমার একটি জানার ইচ্ছে অজানা থেকে যাবে।
প্রিয় কালপুরুষ উপন্যাসের বইয়ের ”প্রচ্ছদে” পায়ে তীরবিদ্ধ কেন?
আমিতো সেখানে মানবতার আহ্বানের প্রতিধ্বনি শুনতে পেয়েছিলাম। কিছু-কিছু গল্প সমাপ্ত বললে শেষ হয় না। ক্ষুধার্ত পাঠকের হৃদয়ে অতৃপ্তের রেশ থেকে যায়। তেমন কিছু উপন্যাস এবং গল্প আমার অতৃপ্তি রয়ে গেছে। উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ পড়ে আমার মতো অনেকেই বলবে। কালবেলা উপন্যাসটি আমি পড়েছি ৯২ কি ৯৩ সালে, অনিমেষের মাধবীলতাকে আমার সারাজীবন মনে থাকবে। যে বিষয়টি আমার কাছে গল্প লেখার অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করে! সেটা মাধবীলতার ত্যাগ। কয়েকবার পড়ার পরও তৃষ্ণা মেটাতে পারিনি। গল্পকার এই উপন্যাসটিতে শুধু
অ-মিলনের খেলা করে গেছেন।
বাংলাদেশের এই মেয়ে, যে কিনা শুধু ধুপের মত নিজেকে পোড়ায় আগামীকালকে সুন্দর করতে। দেশ গড়ার জন্যে বিপ্লবের নিষ্ফল হতাশায় ডুবে যেতে যেতে অনিমেষ আাবিষ্কার করেছিল বিপ্ল­বের আর এক নাম মাধবীলতা। এই  কালজয়ী উপন্যাসের জনক সমরেশে মজুমদার কলমের খোঁচায় পাঠকের হৃদয়ে খেলা করেছেন। উনি পাঠককে রেখেছেন ‘দৌড়’ এর মাঝে। কোন উপন্যাসটি আগে পড়বেন। ‘দৌড়’ উপন্যাসটি তরুণ পাঠকের মাঝে সারা জাগিয়েছিল। বাঙালি মধ্যবিত্তের ১৯৭০ এর রাজনৈতিক টালমাটাল সময়ের চিত্র তিনি তুলে এনেছেন। রাকেশ এবং সুহাস নামক দুই যুবককে দিয়ে উনি পুরো গল্পের মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছেন। রাকেশের চাকরিটা চলে যাবার কারণ পূর্বের ছাত্র জীবনের ‘পলিটিক্স’। তিনি ক্ষয়ে যাওয়া সমাজের বাস্তব চিত্র আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। আর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র যার শিল্প সাহিত্যের চর্চায় দিন কাটত তিনি লোভে পড়ে বনে গেছেন জুয়ারি। সমরেশ মজুমদারের উপন্যাস মানে সমাজের চিত্রকে পাল্টানো। আমার প্রিয় মানুষটিকে উপহার দিয়েছিলাম ’কালবেলা এবং ‘সাতকাহন’ সে যেন মাধবীলতা ও দীপাবলির মতো করে জ্বলজ্বল করে ওঠে। চা বাগানে বড় হওয়া দীপাবলির ব্যক্তিজীবনের লড়াই আমাদের সমাজের বহু নারীর কথা রূপায়িত করে। শত দুঃখেও নারীকে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতে দেওয়া যাবে না।
ওনার এই দুইটি কথা মনে রাখার মতোঃ
ক) মেয়েরা গণেশের মত, মা দূর্গার চারপাশে পাক দিয়ে যে জগত দেখে তাতেই তৃপ্তি আর পুরুষরা কার্তিকের মত সারা পৃথিবী ঘুরে আসে অথচ কী দেখে তা তারাই জানে না। – সমরেশ মজুমদার (মেয়েরা যেমন হয়)।
খ) তুমি যদি জিততে চাও তাহলে তোমাকে নির্মম হতে হবে। অভিযানে বেরিয়ে দলের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে অভিযান বাতিল হয় না। অসুস্থকে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। সেই উপায় না থাকলে তাকে ফেলে রেখেই এগোতে হবে। এক্ষেত্রে দয়া-মায়া ইত্যাদি ব্যাপারগুলো খুবই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। কোনও কোনও মানুষ জীবনের নির্দিষ্ট লক্ষে এগিয়ে যাওয়ার সময় এমনই কঠোর হন। তাদের নিষ্ঠুর বলা হয়। ইতিহাস ওইসব মানুষের জন্য শেষ পর্যন্ত জায়গা রাখে। – সমরেশ মজুমদার (মনের মত মন)।
দুই বাংলার পাঠকের নয়নমণির জন্ম  ১৯৪৪ সালে ১০ই মার্চ উত্তরবঙ্গের গয়েরকাটায়। প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে। তিস্তা আর আংরাভাসা নদীর নির্মল বাতাস গায়ে মেখে পিতা কৃষ্ণদাস মজুমদার ও মাতা শ্যামলী দেবীর সাথে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা বাগানে কাটিয়েছেন শৈশব। ভবানী মাস্টারের পাঠশালায় তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। এরপর বিদ্যালয়ের পাঠ জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে হয়। ডুয়ার্সের চা-বাগানের জীবন নিয়ে তাঁর অনেক গল্প ও উপন্যাসে উঠে এসেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পোড়া গন্ধের আর দেশে উত্তাল স্বাধীনতা আন্দলোনের মাঝে বড় হওয়া।
ষাটের দশকের গোড়ায় তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। ভর্তি হয়েছিলেন স্কটিশ চার্চ কলেজের বাংলা বিভাগের (সাম্মানিক) স্নাতক স্তরে। এরপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
কর্মজীবন ও সাহিত্য চর্চা
কর্মজীবনে তিনি আনন্দবাজার পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড এর সাথে যুক্ত ছিলেন। গ্রুপ থিয়েটারের প্রতি তাঁর প্রচন্ড আসক্তি ছিলো। তার প্রথম গল্প ‘অন্যমাত্রা’ লেখাই হয়েছিলো মঞ্চনাটক হিসেবে। আর সেখান থেকেই তাঁর লেখকজীবনের শুরু। তাঁর লেখা ‘অন্যমাত্রা’ ছাপা হয়েছিলো দেশ পত্রিকায় ১৯৬৭ সালে। সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’ ছাপা হয়েছিলো দেশেই ১৯৭৫ সালে। তিনি শুধু তাঁর লেখনী গল্প বা উপন্যাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি; ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি থেকে গোয়েন্দা কাহিনি, কিশোর উপন্যাস লেখনীতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। তাঁর প্রত্যেকটি উপন্যাসের বিষয় ভিন্ন, রচনার গতি এবং গল্প বলার ভঙ্গি পাঠকদের আন্দলিত করে। চা বাগানের মদেসিয়া সমাজ থেকে কলকাতার নিম্নবিত্ত মানুষেরা তাঁর কলমে উঠে আসেন রক্ত-মাংস নিয়ে। সমরেশ মজুমদারের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলির মধ্যে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান, গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তার ট্রিলজি ‘উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্য জগতে তাঁকে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী করেছে। লিখেছেন দুহাত ভরে। গল্প, স্মৃতিকথা, ভ্রমনকাহিনী কোথাও থামেননি।
লেখকের ঝুড়িতে রয়েছে অনেক সাহিত্যকীর্তির স্বীকৃতি
অনেক অসাধারণ লেখনীর শব্দের এই রূপকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার অর্জন করেছেন।
আনন্দ পুরস্কার -১৯৮২
বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার,
দিশারী ও চলচ্চিত্র প্রসার সমিতি – শ্রেষ্ঠ স্ক্রিপ্ট রাইটার – ১৯৮২
সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার-১৯৮৪
বঙ্কিম পুরস্কার – ২০০৯
বঙ্গবিভূষণ – ২০১৮, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত।
১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার,
১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইয়াইএমএস পুরস্কার জয় করেছেন। চিত্রনাট্য লেখক হিসেবে জয় করেছেন বিএফজেএ, দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির অ্যাওয়ার্ডসহ অজস্র সন্মানে ভূষিত তিনি।
সমরেশ মজুমদার কলকাতা এবং বাংলাদেশ এর সর্বকালের অন্যতম সেরা লেখক হিসাবে পাঠকমন জয় করেছেন।
এই যেন এক রাজার বিদায়
আগে থেকেই সিওপিডিও সমস্যায় ভুগছিলেন লেখক। সাথে ছিল (স্লি­প অ্যাপনিয়া) ও ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। ২০২৩ সালের ২৫ই এপ্রিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত সমস্যার কারণে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই ৮ই মে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
মৃত্যু চিরন্তন সত্য! কিন্তু সমরেশ মজুমদারের মতো কথাসাহিত্যিকের অবসান বলতে নেই। তিনি তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে পাঠকের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন সারাজীবন।

কবিতা

শব্দগুলো দেহের হাড়

মিসির হাছনাইন

সারাদিনে এক লাইনও লিখতে পারিনি
লিখতে গেলে মনে হয় একটা রেখা
ঘুরে ফিরে আমি-তুমি, তুমি-আমি
যে কবিতায় শব্দগুলো দেহের হাড়
তোমার খালি তাকিয়ে থাকা চোখ
আহা! সে কী প্রাচীন যাদুমন্ত্র বাণমারা হৃদয়
একটা রেখা ঘুরে ফিরে তুমি-আমি আমি-তুমি
গুহাচিত্রের কোন দেয়ালে আঁকা হৃদপিণ্ড
হরিণীর অপার মায়া চাঁদে ফোটা নীল ফুল
আর, পায়ের ছাপ, হাতে হাত রাখার স্পর্শ
কবিতায় উড়ে যাওয়া মন খারাপের দীর্ঘশ্বাস
চারতলা দেয়ালের পাশে পরগাছা নিঃশ্বাস
মেঘে এক গুহাচিত্র কলিজায় আঁকা রোদ্দুর
প্রাচীন কোন চিত্রশিল্পী যাদের নাম গুহাচিত্রে
একটা রেখা ঘুরে ফিরে তুমি-আমি আমি-তুমি
এক চোখে করুণ ভয় শব্দগুলো দেহের হাড়

 

আদর চিঠি

দীপান্বিতা পালিত

না হয় কিছু খুচরো অসংগতি
তোমার নামে বুকের খাতায় থামে
আদর চিঠি পাঠাচ্ছি ফের তোমায়
বৃষ্টি রং-এর লেখা নীল খামে।

ওই দু চোখের হাতছানি দেয় আমায়
যত্ন করে রাখছি গোপন তাকে
বৃষ্টি তুমি এসেই গেলে যখন
বলে দিও আমার খবর তাঁকে।

বলেই দিও, ভাবছি শুধু তাঁকেই
কাঙালপনা লাজুক আদর মাখা
কোথায় সে আর রাখল মনে আমায়!
তবুও গানে তাঁর নামটি আঁকা।

 

স্বপ্নে

অমৃতা নন্দিনী

কানের কাছে চাপা কন্ঠস্বর
-টুই! আগুন! আয়, কোলে আয় জলদি
এই দেখ গুনছি…ওয়ান টু থ্রি…
সেই কবেকার কাঠের আলমারির মাথায় বসে,
এক পলক পেছনের সাদাটে দেওয়াল পরখ করে নিই।
তারপর ঝপাং এক লাফে বাবার কোলে,
দৃঢ় কাঁধ, চেনা গন্ধ
ছোট্ট হাতের চেটোয়
গোটা বিশ্ব।

খেলার দিন টপকে চেনা স্বর অস্ফুট হয়,
কানের কাছে অঝোরে বাজতে থাকে,
বহুদূর থেকে ভেসে আসা
রাশ রাশ বিবাদী স্বরধ্বনি
-বাবা। তুমি কি ওখানে? এই তো আমি
হাতটা ধর, বাড়ি ফিরবে চল, জলদি।

দূর থেকে আরও দূরে সরে যাওয়া ধ্বনিগুচ্ছ ছোঁব বলে,
প্রাণপণ ছুটতে থাকি,
ছুটতে ছুটতে ঘামে বালিশ ভিজে যায়,
মাথা তুলে পেছনের সাদাটে দেওয়ালের দিকে তাকাতেইৃ
দেখি কেঠো ফ্রেমের ভেতর বাবা হাসছে… মিটিমিটি।

 

 

সম্প্রদান

আহসানুল হক

কী দেবো তোমাকে বলো ?
এই বিপন্ন সময়ে
ভালোবেসে হেসে বকুল কি দেয়া যায় বলো
প্রার্থিত প্রতিমা প্রিয়তমা নারীকে কোনো ?
ফুসফুস -বুকে, নিলয়ে
এখন পারিজাত হাসে শুধু না পাওয়ার অনু !

কী দেবো তোমাকে বলো ?
এক চিতা দাহন, দুই চোখ শ্রাবণ
এক ঠোঁট কাঁপন, দুই বুক প্লাবন
ছাড়া- নিজস্ব অর্জন আমার
কিছু নেই, কিছু নেই আর
গোপনে খুব তোমাকে দেবার !

 

 

শূন্যতার বিরাজ

বজলুর রশীদ

শূন্যতা বিরাজ করছে,
করছে গুছিয়ে রাখার সহ্য ক্ষমতাও,
ধৈর্য ধরার সময় পাহাড়ের মতো সমান।

রাগ হলে এখন আর অভিমান করি না,
ভাবি আলোর বিন্যাসে আঁধার কেটে যাবে
হয়তোবা-
উদাসীন পথে শেষকথা বলে-
কিছু নেই আমাদের ইতিহাস, তাই
বাকরুদ্ধ হয়ে পড়া শব্দ বুনি নিঃশব্দে!

এখন থাকি চুপচাপ, কোথাও কথা বলি না
কোথাও সংঘাত হয়! প্রেম নেই খলনায়ক,
কথায় উদ্বেলিত মব জাস্টিসে
আগের মতো বেজে ওঠে না নির্ভার ঘুমিয়ে পড়া গান।
তাই, ভীষণ বিশ্বাসে সফলতা বিফলতা নিয়েই জীবন।

 

 

আলোর ফেরিওয়ালা

সাজ্জাদ সাদিক

সঞ্চিত আলো ম্লান হয়ে যায় শেষ প্রহরে
ক্লান্ত হয়ে অবসন্ন এক ঘুমন্ত পাখির ডানার ভেতর
আশ্রয় নেয় অন্ধতমিস্র রাতের জোনাকিরা
নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখে ঘুমের ভেতর বিভোর পাখি
পাখির স্বপ্নলোক থেকে পূর্বাহ্নের সাদা আলো ধারণ করে শূন্য বুক
লুমিনেসেন্ট অর্গানে জ্বলে ওঠে লুসিফারেজের ঠান্ডা আলো
পুনরায় ফেরি করতে বের হয়
পথে প্রান্তরে মাঠে-ঘাটে
কখনো কাঁটাতার পেরিয়ে যায়
পার হয় মৃত নদী
সোনালি ধানের মাঠ।
ঘোর অন্ধকার বনের ভেতর, রাতের নিস্তব্ধ দুপুরে।
এভাবেই রাতের প্রহর শেষ হয়ে আসে
আরেকটি নতুন ভোরের অপেক্ষায়।

নিজের উচ্চতা নিয়ে খুব ভয় পেতাম : আমির খান

সুপ্রভাত বিনোদন ডেস্ক »

বলিউডে পা রাখার শুরুর দিকে উচ্চতা নিয়ে ভয় আর অনিশ্চয়তা গ্রাস করেছিল আমির খানকে। চারপাশে ছিলেন অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খান্না, শত্রুঘ্ন সিনহার মতো লম্বা ও আকর্ষণীয় তারকারা।
নিজেকে ছোটখাটো গড়নের মনে হতো আমিরের, যে কারণে সংশয় ছিল- এমন উচ্চতায় কি আদৌ নায়ক হওয়া যায়?
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টেছেন আমির। এখন আর উচ্চতা নিয়ে কোনো রাখঢাক নেই তার। বরং নিজের দুর্বলতাকে রসিকতায় বদলে ফেলতে জানেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের অতীত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন এই বলিউড অভিনেতা।
‘জাস্ট টু ফিল্মি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমির বলেন, ‘‘ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আমি খুব নার্ভাস ছিলাম। মনে হত, আমার মতো স্বল্প উচ্চতার কেউ আদৌ কি নায়ক হতে পারে?’’
তার সেই ভয় বা দ্বিধার ছাপ দেখা যাবে আসন্ন ছবি সিতারে জমিন পর-এও। ছবির ট্রেলারে দেখা যায়, আমিরের অন-স্ক্রিন মা তাকে আদর করে ডাকছেন ‘টিঙ্গু’। অথচ এই কথার মধ্যেই লুকিয়ে আছে তার দীর্ঘ লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি। আমির বলেন, ‘‘জাভেদ সাহেব একবার বলেছিলেন, হাস্যরস শুধু মজা করার জন্য নয়, বরং কঠিন সময় পেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। আমার মনে হয়, সেই মানসিকতা আমার বরাবরই ছিল।’’ সিতারে জমিন পর ছবিতে আমিরকে দেখা যাবে এক বাস্কেটবল কোচের ভূমিকায়। শাস্তিস্বরূপ তাকে প্রশিক্ষণ দিতে হয় বিশেষভাবে সক্ষম কিছু কিশোরকে। ছবিটি স্প্যানিশ ছবি ঈধসঢ়বড়হবং-এর রিমেক। পরিচালনায় রয়েছেন আর. এস. প্রসন্ন।
এই ছবিতে থাকছেন ১০ জন নবাগত অভিনয়শিল্পী—আরৌশ দত্ত, গোপী কৃষ্ণ ভার্মা, সম্বিত দেশাই, বেদান্ত শর্মা, আয়ুষ বানসালি, আশীষ পেন্ডসে, ঋষি শাহানি, ঋষভ জৈন, নমন মিশ্র এবং সিমরান মঙ্গেশকর। সিনেমাটি মুক্তি পাবে আগামী ২০ জুন।

বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের এক যাত্রী বেঁচে আছেন!

বেঁচে যাওয়া যাত্রী | ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া

সুপ্রভাত ডেস্ক

ভারতের ২৪২ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হওয়া উড়োজাহাজের এক যাত্রী বেঁচে আছেন। আহমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার জিএ মালিক সংবাদ সংস্থা এএনআইকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, এক জীবিত যাত্রীকে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। উড়োজাহাজের ১১-এ আসনের ওই যাত্রী বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি। তার চিকিৎসা চলছে। তার অবস্থাও গুরুতর নয়। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।

এনডিটিভি জানায়, ওই যাত্রীকে দুর্ঘটনার পর হাঁটতে দেখা যায়—তার সাদা টি-শার্ট এবং গাঢ় রঙের প্যান্ট সামান্য পোড়া দাগ ছাড়া প্রায় অক্ষত ছিল।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকগামী এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণ পরই বিধ্বস্ত হয়। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের ওই উড়োজাহাজে মোট ২৪২ জন আরোহী ছিলেন।

 

প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজা তৃতীয় চার্লস

সুপ্রভাত ডেস্ক »

বাকিংহাম প্যালেসে একান্ত সাক্ষাতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ব্রিটেনের রাজার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতের জন্য পৌঁছালে তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান। পরে প্রায় আধা ঘণ্টা তারা বৈঠক করেন।

রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে রাজার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার কথা হয়েছে। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

৩০ মিনিটের বৈঠকটি সৌহার্দপূর্ণ বৈঠক হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক এটি। কিংস চার্লস ড. ইউনূসের পুরো কাজ সম্পর্কে জানেন।

প্রধান উপদেষ্টার কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আজ যে অ্যাওয়ার্ড পাবেন, সেটি পুরো বাংলাদেশের জন্য সম্মানের। মাইক্রোক্রেডিট পুরো বিশ্বের দারিদ্র্য দূর করতে কাজ করেছে, এসব অবদানকে স্বীকৃতি দিতেই এই অ্যাওয়ার্ড।’

পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীরাও ফলপ্রসূ ধারাবাহিক বৈঠক করছেন বলে জানান প্রেস সচিব।

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে কী বললেন জসওয়াল?

সুপ্রভাত ডেস্ক »

ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে কি না, আবারও এমন প্রশ্ন উঠেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন রণধীর জসওয়াল।

ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কাছে প্রশ্ন করেন যে, বাংলাদেশ দাবি করছে দেশটি শেখ হাসিনাকে ফেরত চায়। এ জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের কাছে পত্র পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ভারত এ বিষয়ে বাংলাদেশকে কোনো উত্তর দিচ্ছে না।

জবাবে রণধীর জসওয়াল ‘শেখ হাসিনা’ প্রসঙ্গে কোনো কথা না বলে জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক ভালো। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আরো সুদৃঢ় ও ইতিবাচক সম্পর্ক চাই; যা দুই দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।

ব্রিফিংয়ে আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনাকে ‘অত্যন্ত মর্মান্তিক দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করে জসওয়াল বলেন, ‘এতে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

নিহতদের যার মধ্যে বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন।’

এ মুহূর্তের সংবাদ

উজাড় হচ্ছে ঝাউবাগান কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ কেন

৫ আগস্ট সরকারি ছুটি ঘোষণা হবে

সর্বশেষ

উজাড় হচ্ছে ঝাউবাগান কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ কেন

সিলেটের উপভাষা : ব্যাকরণ ও অভিধান

কবিতা

বিগ ব্যাশে আবারও হোবার্টে রিশাদ

দেশের কাছে আর কোনো প্রত্যাশা রাখি না : ফারিয়া

এ মুহূর্তের সংবাদ

উজাড় হচ্ছে ঝাউবাগান কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ কেন

শিল্প-সাহিত্য

সিলেটের উপভাষা : ব্যাকরণ ও অভিধান

শিল্প-সাহিত্য

কবিতা