সুপ্রভাত ডেস্ক »
৭৭ বছরে পা রাখলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রবিবার (১৫ আগস্ট) ৭৬ বছর পেরিয়ে সাতাত্তরে পড়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। গত কয়েক বছরের মতো, এবারও এ উপলক্ষে দলীয় কিংবা পারিবারিকভাবে কোন কেক কাটা হবে না। এর পরিবর্তে সোমবার (১৬ আগস্ট) তার আরোগ্য, দীর্ঘায়ু ও মুক্তি কামনায় সারাদেশে প্রার্থনার কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।
বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসভবনে রয়েছেন।
বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার ৭০তম জন্মদিন থেকেই কেক কেটে উদযাপন পরিহার করা হয়েছে। কেক কাটার পরিবর্তে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত ও মিলাদ মহফিলের আয়োজন করা হতো। ২০১৯ সালে সেটাও একদিন পিছিয়ে ১৬ আগস্ট করা হয়েছিল।
শনিবার (১৪ আগস্ট) বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে পাঠানে বিজ্ঞপ্তিতেও খালেদা জিয়ার জন্মদিনের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। বরং সেখানে ১৬ আগস্ট প্রার্থনার কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান সংবাদ মাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ম্যাডামের জন্মদিন উপলক্ষে অফিসিয়ালি আয়োজন সংক্রান্ত কোনও তথ্য জানা নাই।’
দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল ১৫ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী পালন করেন। সেই একই দিনে আগে যখন বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী পালন করা হতো, বিষয়টিকে ভালো ভাবে দেখতো না অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা।
শনিবার (১৪ আগস্ট) গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি তো আরও আগেই বাদ দেওয়া উচিত ছিল। এখন যে বাদ দেওয়া হয়েছে, এটা দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক।’
বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে পরিচিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ’১৫ আগস্ট কারও জন্ম বা মৃত্যু হতে পারবে না, তা তো নয়। তবে আমি বেগম জিয়াকে বলেছিলাম, ১৫ আগস্ট বেদনার দিন। এদিন উদযাপন না করাই উচিত।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘বেগম জিয়ার জন্মদিনের অনুষ্ঠান না করে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রকাশ করেছে। এর ফলে দুই দলের মধ্যে চলমান মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব কমার একটা ক্ষেত্র তৈরি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও বিষয়টি বিবেচনায় রাখা দরকার। অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলোকে উসকে দিয়ে বিভাজন বাড়িয়ে দেওয়া বুদ্ধিমত্তার কাজ নয়।’
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, বিএনপিকে চাপে ফেলতে আওয়ামী লীগ এখন দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ইতিহাসকে বিকৃত ও নিকৃষ্ট মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।’
দলীয় সূত্র জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৫ সালে। তবে তার জন্ম তারিখ নিয়ে বিতর্ক আছে। খালেদা জিয়ার পিতা এস্কান্দর মজুমদারের বাড়ি ফেনী হলেও তিনি দিনাজপুরে বসবাস করতেন। খালেদা জিয়ার জন্মও সেখানে। ১৯৬০ সালের আগস্ট মাসে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন