চট্টগ্রামে বুধবার শনাক্ত ৯৫ জন করোনা রোগীর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭ জন
সালাহ উদ্দিন সায়েম :
চট্টগ্রামে গেল বুধবার নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয় ৯৫ জনের। কিন্তু এদের মধ্যে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মাত্র ৭ জন। আক্রান্ত বাকি ৮৮ জন হোম আইসোলেশনে (বাড়িতে আলাদা বসবাস) রয়েছেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে ১৩ মে পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫১২ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৭ জন আর সুস্থ হয়েছেন ৮৯ জন। তাহলে আক্রান্তের মধ্যে আর বাকি থাকে ৩৯৬ জন। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৯৪ জন। বাকি ৩০২ জন অর্থাৎ প্রায় ৭৬ শতাংশ রোগী আছেন হোম আইসোলেশনে।
আক্রান্ত হওয়ার পরও হোম আইসোলেশনে কেন?
৩ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার নতুন এই গাইড লাইন প্রণয়ন করে। নতুন এ গাইডলাইন অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর শরীর সুস্থ থাকলে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবে না। তাকে হোম আইসোলেশনে (বাড়িতে আলাদা বসবাস) থাকতে হবে। তবে রোগীর শ্বাসকষ্ট ও অন্য শারীরিক জটিল সমস্যা থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবে।
চট্টগ্রামে গত ১০ দিন ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ৯ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪০১ জন। ৯ দিন পর আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটির করোনা চিকিৎসার নতুন গাইড লাইন মেনে হাসপাতালে রোগী ভর্তি করাচ্ছেন। এ কারণে হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা কমে গেছে।
চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর সুপ্রভাতকে বলেন, হাসপাতালে যেহেতু শয্যা সংকট, তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটির করোনা চিকিৎসার নতুন গাইড লাইন মেনে চলছি। এখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ থাকলে রোগীদের আমরা বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে বলছি। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির যদি শ্বাসকষ্ট ও অন্য কোনো জটিল সমস্যা থাকলে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি সুপ্রভাতকে জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হলে তার সাথে আমরা কথা বলে বাসায় আইসোলেশনে থাকার মতো পরিবেশ আছে কি-না জানতে চাই। রোগী রাজি হলে আমরা তাকে বাসায় থাকতে বলি। যদি বাসায় আইসোলেশনের পরিবেশ না থাকে তাহলে আমরা তাকে হাসপাতালে চলে আসতে বলি।
চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসার জন্য আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১০০টি, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে রয়েছে ৫০টি আর ফিল্ড হাসপাতালে রয়েছে ৫০টি। তিনটি হাসপাতালে ২০০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ৯৪ জন। কিন্তু চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত ৩৯৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন।