সুপ্রভাত ডেস্ক »
৬০ বিঘার বেশি কৃষি জমির মালিক হওয়া যাবে না- এমন বিধান রেখে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ভূমি সংস্কার আইন পাস হয়েছে। এ বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘উত্তরাধিকার সূত্রে অর্জিত জমি ৬০ বিঘার বেশি হলে ভূমির মালিক তার পছন্দ অনুসারে ৬০ বিঘা জমি রাখতে পারবেন।’
বুধবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। খবর ঢাকাপোস্ট।
৬০ বিঘার বেশি কৃষি জমির মালিক কেউ হতে পারবেন না বলে আইনে বলা আছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘এ আইনে ব্যক্তিগতভাবে ৬০ বিঘার বেশি কৃষি জমির মালিক কেউ হতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধুর আমলে এটা ১০০ বিঘা ছিল। এরশাদ এসে ৬০ বিঘা করেছেন। কিন্তু অনুমতি নিয়ে কোনো কোম্পানি ৫০০ কিংবা ১,০০০ বিঘা জমি নিতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘আইনের পাঁচ নম্বরে বলা আছে, উত্তরাধিকার সূত্রে অর্জিত জমি ৬০ বিঘার বেশি হলে ভূমির মালিক তার পছন্দ অনুসারে ৬০ বিঘা জমি রাখতে পারবেন। অবশিষ্ট জমি সরকারি বিধির মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে খাস করতে পারবেন।’ ৬০ বিঘার বেশি থাকলে সেটি কেউ বিক্রিও করে দিতে পারেন বলে জানান ভূমিমন্ত্রী।
কার কার ৬০ বিঘার বেশি জমি আছে, তা সরকার কীভাবে জানবে, সে বিষয়টিও খোলাসা করেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত ডাটাবেজ আসছে। তখন সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। দেশের যেকোনো জায়গায় জমি থাক না কেন, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ডাটাবেজ দেখে বলা যাবে আপনার নামে কতটুকু জমি আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। কিন্তু যখন এ ভূমি দান করতে যাবেন, তখন নতুন করে রেকর্ড করতে হবে। এখন কেউ যদি কাউকে জমি দান করেন, যাকে দান করা হচ্ছে, তার যদি এরইমধ্যে ৬০ বিঘা জমি থাকে, সেই দান তিনি নিতে পারবেন না। যদি সেক্ষেত্রে ৬০ বিঘার কম জমি থাকে, তাহলে যতটুকু কম ততটুকু নিতে পারবেন।’
এসময় ভূমি সচিব খলিলুর রহমান বলেন, ‘৬০ বিঘা কৃষি জমি রাখা যাবে। কিন্তু শর্ত মেনে এর বেশিও রাখা যাবে। যেমন, সমবায় সমিতির অনুকূলে সবাই মিলে যদি আরও বেশি জমি রাখতে চান, তাহলে রাখা যাবে। কেউ যদি চা কিংবা কফির বাগান করতে চান, সেখানে তো ৬০ বিঘা জমিতে হবে না। সেক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করা হয়েছে।’
সচিব বলেন, ‘এ আইনটা এসেছে ১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার আইন থেকে। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আইন দিয়ে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের নভেম্বরের সামরিক আইনে যেসব অধ্যাদেশ ছিল, সেগুলো বিলুপ্ত হওয়ায়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ওই সময়ের আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে বলেছে যে, এগুলো ভাষান্তর ও যুগোপযোগী করতে হবে। অর্থাৎ ১৯৮৪ সালের ল্যান্ড রিফর্মস অর্ডিন্যান্সকে ভাষান্তর করে ভূমি সংস্কার আইন করা হয়। শুধু ছোটোখাটো কিছু সংযোজন করা হয়েছে।’