সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক
টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশের ধোঁয়াশা যেন কাটছেই না। সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এবার এশিয়া কাপেও চূড়ান্ত ভরাডুবি হয়েছে টাইগারদের। গত দুই আসরের ফাইনালিস্টরা এবার জিততে পারেনি একটি ম্যাচ! যার ফলে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হলো বাংলাদেশ দলকে। খবর ডেইলি-বাংলাদেশ’র
বাংলাদেশের এমন ব্যর্থতার পেছনে রয়েছে ৫টি বিশেষ কারণ। সেসব কী? চলুন দেখে নেয়া যাক-
অধিনায়ক ও খেলোয়াড় হিসেবে সাকিবের ব্যর্থতা: বাংলাদেশ দলের সেরা তারকা নিঃসন্দেহে সাকিব আল হাসান। দলের এশিয়া কাপ মিশনে ভালো করার লক্ষ্যে বড় জায়গা জুড়ে ছিলেন তিনি। একইসঙ্গে অধিনায়ক হওয়ায় তার ওপর প্রত্যাশার চাপ ছিল আরেকটু বেশি। কিন্তু ক্যাপ্টেন সাকিব বোলিং মোটামুটি ভালো করলেও ব্যাট হাতে নির্ভরতা দিতে পারেননি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৯ বলে মাত্র ১১ রান করেন সাকিব, এরপর ১৩ রানে নেন ১ উইকেট। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে ২২ বলে ২৪ রান করার পর ৩১ রান খরচ করে কোনো উইকেট নিতে পারেননি তিনি। সুতরাং দুই ম্যাচে সাকিবের ব্যক্তিগত সংগ্রহ সাকুল্যে ৩৫ রান ও ১টি উইকেট।
অধিনায়ক হিসেবে অতি আক্রমণাত্মক হতে চেয়েছিলেন সাকিব। তবে দুই ম্যাচের কোনোটিতেই সেটি শেষ পর্যন্ত কাজে দেয়নি। ম্যাচে কিছুটা জুয়া খেললেও বোলাররা তার আস্থার প্রতিদান দিলে হয়তো ব্যাপারটা ভিন্নরকম হতো। মুশফিক-রিয়াদের ব্যর্থতা: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে শতাধিক টি-২০ ম্যাচ খেলা দ’ুজন ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এবারের এশিয়া কাপে মুশফিক ব্যর্থ। দুই ম্যাচে যথাক্রমে ১ ও ৪ রান করে আউট হন তিনি। এছাড়া লংকানদের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ মিস করেন মুশফিক।
মুশফিকের তুলনায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছিলেন মন্দের ভালো। কিন্তু সিনিয়র তারকা ক্রিকেটার হিসেবে যেমন দায়িত্ব নেয়া উচিত ছিল তার, তা পালন করতে তিনি ব্যর্থ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৭ বলে ২৫ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২২ বলে ২৭ রান করেন তিনি। মুশফিক ও রিয়াদ দলের ব্যাটিংয়ের মেরুদন্ড হলেও দু’জনেই সঠিকভাবে নিজেদের কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যার ফলে আশানুরূপ সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ।
স্পিনে দুর্বলতা: দীর্ঘদিন ধরে স্পিন বোলিং বাংলাদেশের প্রধান শক্তি ছিল। তবে এশিয়া কাপে নিজেরাই প্রতিপক্ষের স্পিন বোলিং ঠিকঠাকভাবে সামলাতে পারেনি টাইগাররা। আফগানিস্তান ম্যাচে মুজিব উর রহমান ও রশিদ খানের বোলিংয়ের বিপক্ষে ক্রিকেটাররা ছিলেন ক্লু লেস। শ্রীলঙ্কা ম্যাচেও হাসারাঙ্গা-থিকসানারা বিব্রত করেন টাইগারদের।
দুর্বল ফিল্ডিং: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তাসকিন আহমেদ দুটি দুর্দান্ত ক্যাচ নিলেও সার্বিকভাবে বাংলাদেশের ফিল্ডিং ছিল যাচ্ছেতাই। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ ছেড়েছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। হাতছাড়া করেছেন রান-আউটের সহজ সব সুযোগ। ফলে বাড়তি চাপ পড়েছে বোলারদের ওপর।
বোলিং বিভাগের ব্যর্থতা: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পরে বাংলাদেশ দলনায়ক সাকিব আল হাসান তাদের ডেথ ওভার বোলিং ভালো হয়নি বলে অজুহাত দেন। তবে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের স্পিন বোলিং বিভাগ পুরোপুরি ব্যর্থ বলা চলে। সাকিব ছাড়াও বল হাতে নজর কাড়তে পারেননি মাহেদি হাসান। এছাড়া মুস্তাফিজুর রহমানের মতো দলের অটো চয়েজ বোলাররা কার্যকরী বোলিং করতে পারেননি। অন্যরাও ছিলেন ব্যর্থ। যার ফল ভুগতে হয়েছে পুরো দলকেই। আর দুই ম্যাচই হেরে বিদায় নিতে হয়েছে এশিয়া কাপ থেকে।