৫৩ বছরের মধ্যে বিএসসি’র সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন, ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা

চট্টগ্রাম বোট ক্লাবে বিএসসির ৪৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক এ তথ্য জানান

সুপ্রভাত ডেস্ক  »

গত ৫৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ নীট মুনাফা অর্জন করেছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি)। কর সমন্বয়ের পর ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২৪৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা লাভ করেছে সংস্থাটি। এছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য আগের বছরের মত ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বিএসসি।

২২ ডিসেম্বর (রোববার) বিকেলে চট্টগ্রাম বোট ক্লাবে বিএসসির ৪৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক এ তথ্য জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. ইউসুফ।

কমডোর মাহমুদুল মালেক বলেন, ‘সরকারের সহযোগিতা ও সক্রিয় দিকনির্দেশনার ফলে সংস্থাটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদানের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য রয়েছে আমাদের’।

তিনি বলেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বিএসসির পরিচালনা বাবদ ৪৮৭ কোটি ৭৪ লাখ ও অন্যান্য খাত থেকে ১০৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এতে মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৫৯৬ কোটি ১৯ লাখ টাকায়’।

‘অন্যদিকে পরিচালনা ব্যয় ছিল ১৮৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং প্রশাসনিক ও আর্থিক খাতে ব্যয় হয় ১২১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। যা সর্বমোট ব্যয় দাঁড়ায় ৩১১ কোটি ৬০ টাকায়। ফলে নিট মুনাফার ভিত্তিতে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ করে পরিচালনা পর্ষদ’। খবর বাসস।

তিনি আরও বলেন, ‘চলতি বছরের ৩০ জুন বিএসসি’র পরিশোধিত মূলধন ছিল ১৫২.৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের শেয়ার ৭৯.৪৬ কোটি টাকা (৫২.১০ শতাংশ) এবং বেসরকারি শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার ৭৩.০৭ কোটি টাকা (৪৭.৯০ শতাংশ)। ফলে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বিএসসির মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩,৮১১.৫৩ কোটি টাকা, যার বিপরীতে বহিঃদেনা ২,২৫৬.১৬ কোটি টাকা।’

শেয়ারবাজার থেকে অর্থ ব্যবহার প্রসঙ্গে বিএসসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আরপিও (রিপিট পাবলিক অফার) এর মাধ্যমে সংগৃহীত ৩১৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার মধ্যে ৯৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকায় ২৫ তলা ভবন নির্মাণে ৫৯ কোটি ৩৫ লাখ, শেয়ার বাজারজাতকরণে ১৭ কোটি ৯৩ লাখ এবং ছয়টি জাহাজ ক্রয়ে ১৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে’।

উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকারের সহযোগিতায় বিএসসি ইতোমধ্যে ছয়টি নতুন জাহাজ সংযোজন করেছে, যার মধ্যে পাঁচটি বর্তমানে বহরে রয়েছে। ভবিষ্যতে আরও দুটি ক্রুড অয়েল মাদার ট্যাংকার ও দুটি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে’।

‘বিএসসি নিজস্ব অর্থায়নে দুটি বাল্ক ক্যারিয়ার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে এবং শীঘ্রই ১২টি নতুন কন্টেইনার জাহাজ সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তায় ছয়টি নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন’- বলেন কমডোর মাহমুদুল মালেক।

বিএসসির অফিসে বর্তমানে ২৩০ জন (কর্মকর্তা ৬৮ ও কর্মচারী ১৬২) এবং জাহাজে ৩০৭ জন (অফিসার ১৫৮ ও নাবিক ১৪৯) কর্মরত আছেন বলে জানান তিনি।