সুপ্রভাত ডেস্ক »
ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ৫০ হাজার কোটি ডলারের বেশি সম্পদের মালিক হয়েছেন টেসলা প্রধান ও মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক।
এ বছরে টেসলা ও তার অন্যান্য ব্যবসার শেয়ার মূল্য বেড়ে যাওয়ায় মাস্কের সম্পদের পরিমাণ এই মাইলফলকে পৌঁছেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
ফোর্বসের বিলিয়নেয়ার সূচক অনুসারে, প্রযুক্তি খাতের এই শীর্ষ ধনকুবরের সম্পদের পরিমাণ নিউ ইয়র্ক সময় বুধবার বিকেলে কিছু সময়ের জন্য ৫০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছিল। তবে পরে দিন শেষে তা সামান্য কমে ৪৯ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের একটু বেশিতে এসে ঠেকেছে।
টেসলার পাশাপাশি মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক স্টার্টআপ এক্সএআই এবং রকেট নির্মাতা কোম্পানি স্পেসএক্স’সহ তার অন্যান্য ব্যবসার মূল্যও গত কয়েক মাসে ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
মাইলফলকটি মাস্ককে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, যেখানে তিনি বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতের অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের অনেকটাই পেছনে ফেলেছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার সূচক অনুযায়ী, ওরাকলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি, যার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার ৭০ কোটি ডলার।
গত মাসে অল্প সময়ের জন্য মাস্ককে পেছনে ফেলেছিলেন এলিসন। ওই সময় ওরাকলের শেয়ারমূল্য ৪০ শতাংশের বেশি বেড়ে গিয়েছিল। কোম্পানির ক্লাউড অবকাঠামো ব্যবসা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত চুক্তি নিয়ে আশাজাগানিয়া পূর্বাভাসের কারণে তার এই শেয়ারবৃদ্ধি ঘটেছিল।
মাস্কের বিপুল সম্পদের বড় একটি অংশ টেসলায় তার ১২ শতাংশেরও বেশি শেয়ার মালিকানার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এ বছরে টেসলার শেয়ারের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় তার সম্পদও সেই অনুপাতে বেড়েছে।
বুধবার নিউ ইয়র্কের লেনদেন শেষ হওয়ার সময় টেসলার শেয়ারের দাম তিন দশমিক তিন শতাংশেরও বেশি বেড়েছে এবং এ বছর এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারমূল্য বেড়েছে ২০ শতাংশেরও বেশি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মাস্কের কোম্পানির শেয়ারের মূল্য বেড়েছে। কারণ হিসাবে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, মাস্ক রাজনীতি থেকে দূরে সরে এসে এখন নিজের বিভিন্ন ব্যবসায় বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। এতে মাস্কের প্রতি তাদের আস্থার সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানির শেয়ার মূল্যও বেড়েছে।
এ বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে সরকারি ব্যয় কমানো ও কর্মী ছাটাইয়ের লক্ষ্যে গঠিত ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’-এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন মাস্ক।
যুক্তরাষ্টের অভিবাসন ও বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি বা ডিইআই প্রোগ্রাম নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশে সবসময় সরব থেকেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর মালিক মাস্ক।
এদিকে, গত মাসে টেসলার পরিচালনা পর্ষদ বলেছে, আগামী দশকে মাস্ক যদি কোম্পানির একাধিক উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন তবে এক ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের পারিশ্রমিক পেতে পারেন তিনি।
এ পারিশ্রমিক পেতে হলে মাস্ককে টেসলার বাজারমূল্য আট গুণ বাড়াতে হবে, ১০ লাখ এআই রোবট বিক্রি করতে হবে, আরও ১ কোটি ২০ লাখ টেসলা গাড়ি বিক্রি করার পাশাপাশি আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।
গত মাসে মাস্ক ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রায় ১০০ কোটি ডলারের টেসলার শেয়ার কিনেছেন তিনি, যা অনেক বিনিয়োগকারীর কাছে কোম্পানিটির প্রতি তার আস্থার এক শক্তিশালী বার্তা হিসেবে দেখছেন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি