সুপ্রভাত ডেস্ক »
সরকারের রাজস্বের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আদায় হয় দেশের বৃহত্তম বন্দর নগরী ও শিল্প এলাকা চট্টগ্রাম থেকে। কিন্তু সেখানে রাজস্ব কার্যক্রম পরিচালনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কোনো নিজস্ব অফিস বা ভবন নেই। বর্তমানে চট্টগ্রাম অঞ্চলের আয়কর আদায়ের সকল কর্মকাণ্ড বিভিন্ন ভাড়া বাসা থেকে পরিচালিত হচ্ছে। এ কারণে প্রতিদিন প্রচুর দাপ্তরিক নথি এক অফিস থেকে অন্য অফিসে আনা নেয়া করতে হয়। আর নিজস্ব কোন স্থাপনা না থাকায় নথিপত্র ও অফিস ইক্যুইপমেন্টের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক ধরণের অনিশ্চিত থেকে যায়। পাশাপাশি যেকোনো ধরনের দাপ্তরিক অনুষ্ঠান বা সেমিনার ইত্যাদি আয়োজনের জন্য হলরুম ভাড়া করতে হয়। এতে সরকারি অর্থের ও সময়ের অপচয় ঘটে। এ প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম অঞ্চলে এনবিআর’র কাজের গতি বৃদ্ধি, উন্নত কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি ও করদাতাদের অধিকতর সেবা দেওয়ার মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়াতে সেখানে একটি আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন করভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বুধবার (৮ জানুয়ারি) অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। আর এটি বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর। আগামী ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে ভবনটি নির্মাণ করা হবে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩৭ কোটি ৭ লাখ টাকা। খবর সারাবাংলা।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রাথমিক প্রস্তাবে ১ হাজার ৫২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার সিদ্ধান্তের আলোকে প্রকল্প প্রস্তাব পুনর্গঠন করে মোট ৪৩৭ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাতীয় বাজেটের অর্থ যোগানের প্রধান উৎস অভ্যন্তরীণ রাজস্ব। আর এ খাতে আয়করের অবদান অপরিসীম। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের আওতাধীন এনবিআর রাজস্ব আহরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ একক সংস্থা। এখানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কর) ক্যাডারের কর্মকর্তা রাজস্ব আহরণে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশের মোট রাজস্ব আয়ের এশটি উল্লেখযোগ্য অংশ চট্টগ্রাম অব্জল থেকে আদায় হয়। যথাযথ পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেওয়া হলে এ অব্জল থেকে বর্তমানের দ্বিগুণ পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম কর বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য বহুমুখী সুবিধা সম্বলিত কমপ্লেক্স নির্মাণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর আহরণ জোরদার করা হলে তা জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।
প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সোলেমান খান বলেন,প্রস্তাবিত প্রকল্পটির আওতায় চট্টগ্রাম কর বিভাগের জন্য বহুমুখী সুবিধা সম্বলিত কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর আহরণ কার্যক্রম জোরদার করা হবে এবং ডাটা সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে ওয়ান স্টপ সার্ভিস নিশ্চিত করা হবে। এয়াড়া প্রকল্পটি উন্নত, স্বাস্থ্যকর ও সুপরিসর দাপ্তরিক পরিবেশ তৈরি করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাজের দক্ষতা ও কর্মস্পৃহা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- ৪৬ হাজার ৭৪৩ দশমিক ৬৪ বর্গমিটার অনাবাসিক ভবন নির্মাণ ; ২৮৮ দশমিক ৭৮ মিটার সীমান প্রাচীর ও গেট নির্মাণ ; ২৬২ দশমিক ১২ মিটার পাম্প হাউজ ও পানি সরবরাহ লাইন স্থাপন ; এশটি নিকাশ কাঠামো (এসটিপি) নির্মাণ ; ২টি নলক’প স্থাপন ; ৪ হাজার গ্যালন বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ; ৩৩৮ দশমিক ৩১ মিটার কম্পাউন্ড ড্রেন ও ৫৬৩ দশমিক ৮৫ বর্গমিটার এপ্রন নির্মাণ এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি সংগ্রহ।