সুপ্রভাত ডেস্ক »
ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন বাংলাদেশের দুই দুঃসাহসী সাঁতারু। প্রায় চার দশক পর আবারও বাংলাদেশ থেকে কোনও সাঁতারু ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিলেন। আর তাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেন বাংলাদেশের এই দুই সাঁতারু নাজমুল হক হিমেল ও মাহফিজুর রহমান সাগর।
দক্ষিণ ইংল্যান্ড ও উত্তর ফ্রান্সকে পৃথককারী আটলান্টিক মহাসাগরের প্রণালী ইংলিশ চ্যানেল। বাংলাদেশের প্রথম সাঁতারু হিসেবে ১৯৫৮ সালে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছিলেন ব্রজেন দাস। ৩৮ বছর পর এবার এই চ্যানেল পাড়ি দিলেন বাংলাদেশের দুই সাতারু।
দু:সাহসী দুই সাঁতারু হলেন কিশোরগঞ্জ জেলার নাজমুল হক হিমেল ও পাবনা জেলার মাহফিজুর রহমান সাগর।
ইংল্যান্ড সময় মধ্যরাত। ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে নামেন সাগর ও হিমেল। সঙ্গে ৬ জনের একটি রিলে দল। বাংলাদেশের হয়ে এই রিলে সাঁতারে হিমেল ও সাগর ছাড়াও বাকি চারজনের একজন মেক্সিকান ও তিনজন ভারতীয়।
রিলের মধ্যে সাগরে প্রথম নামেন মাহফিজুর রহমান। প্রত্যেকে সাঁতরিয়ে নির্দিষ্ট সময় ও পথ অতিক্রম করেন। চ্যানেলটি পাড়ি দিতে সোয়া ১২ ঘণ্টা সময় নেন তারা।
সাগর ও হিমেলের আগে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে মোট ছয়বার চ্যানেলটি অতিক্রম করেন ব্রজেন। এই চ্যানেল সবচেয়ে কম সময়ে সাঁতরে পার হওয়ার রেকর্ডও গড়েছিলেন তখন। এরপর ১৯৬৫ সালে আবদুল মালেক দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এই দুঃসাহসিক অভিযানে নেমে সফল হন।
ইংলিশ চ্যানেল কর্তৃপক্ষ এখনও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। প্রতি বছর নভেম্বরের দিকে আনুষ্ঠানিক সনদ প্রদান করে কর্তৃপক্ষ। এই সাফল্য দেশের ক্রীড়াঙ্গনে এক নতুন আশার আলো নিয়ে এসেছে।
বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক নিবারিতা দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইংলিশ চ্যানেল দীর্ঘদিন ধরে ওপেন-ওয়াটার সাঁতারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হয়। হিমেল ও সাগরের আগে সবশেষ বাংলাদেশি হিসেবে ১৯৮৮ সালে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছিলেন এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী মোশাররফ হোসেন।
বাংলাদেশ থেকে প্রথম এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন ব্রজেন দাস। ১৯৫৮ সালে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) প্রথম দক্ষিণ এশীয় হিসেবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন এই সাঁতারু। পরবর্তীকারে আরো ছয়বার এই অসাধারণ কাজটি সম্পন্ন করেন তিনি।