সুপ্রভাত ডেস্ক »
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে গণহত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এই গণহত্যাকাণ্ডে উসকানি দেওয়ায় ৩২ জন সিনিয়র সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আইসিটি’র তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে আন্দোলনে নিহত নাসিফ হাসান রিয়াদের বাবা মো. গোলাম রাজ্জাকের পক্ষে এ অভিযোগ দায়ের করেন আইনজীবী গাজী এইচ তামিম।
যেসব সাংবাদিক ৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে গণহত্যা চালিয়ে নেওয়ার উসকানি দেন, তাদের আসামি করা হয়েছে বলে এই আইনজীবী জানান।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—১. শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ২. ওবায়দুল কাদের, সাবেক সেতুমন্ত্রী ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ৩. আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ৪. মো. আনিসুল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী। ৫. হাছান মাহমুদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ৬. হাসানুল হক ইনু, সাবেক তথ্যমন্ত্রী। ৭. মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী। ৮. জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক ডাক টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী। ৯. মোহাম্মাদ আলী আরাফাত, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ও তৎকালীন সরকারের কতিপয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও এমপি। ১০. আতিকুল ইসলাম, সাবেক মেয়র, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। ১১. চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক আইজিপি। ১২. হারুন আর রশীদ, অতিরিক্ত আইজিপি ও সাবেক ডিবি প্রধান। ১৩. হাবিবুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার ও কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য। ১৪. মো. হারুন আর রাশীদ, সাবেক মহাপরিচালক, র্যাবসহ কতিপয় অসাধু র্যাব কর্মকর্তা ও সদস্য। ১৫. বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক যুগ্ম কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ১৬. জিয়াউল আহসান, সাবেক মহাপরিচালক, এনটিএমসি। ১৭. মো. মাহাবুব রহমান, ওসি, আদাবর থানা ডিএমপি, ঢাকা। ১৮. সাদ্দাম হোসেন, সভাপতি- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯. শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও কতিপয় অজ্ঞাতনামা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় নেতাকর্মী। ২০. এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক বিচারক, আপিল বিভাগ, সুপ্রিম কোর্ট। ২১. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট। ২২. নিঝুম মজুমদার, আইনজীবী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। ২৩. মেজবাহ কামাল, অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ২৪. নাঈমুল ইসলাম খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব। ২৫. ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা। ২৬. ফরিদা ইয়াসমিন, সভাপতি প্রেস ক্লাব, ঢাকা ও সাবেক এমপি। ২৭. শ্যামল দত্ত, সাধারণ সম্পাদক, প্রেস ক্লাব, ঢাকা। ২৮. মোজাম্মেল বাবু, সিইও, প্রধান সম্পাদক, একাত্তর টিভি। ২৯. নবনীতা চৌধুরী, সাংবাদিক ও টিভি সঞ্চালক। ৩০. সুভাষ সিংহ রায়, সম্পাদক, এবি নিউজ ২৪ ডটকম। ৩১. আহমেদ যোবায়ের, এমডি, সময় টিভি। ৩২. তুষার আব্দুল্লাহ, সাবেক বার্তা প্রধান, সময় টিভি (বার্তাপ্রধান এখন টিভি)। ৩৩. সাইফুল আলম, সিইও, ডিবিসি নিউজ। ৩৪. নইম নিজাম, সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন। ৩৫. আবেদ খান, সাবেক সম্পাদক, সমকাল।
৩৬. প্রভাষ আমিন, বার্তা প্রধান, এটিএন নিউজ। ৩৭. ফারজানা রুপা, সাবেক প্রধান প্রতিবেদক, একাত্তর টিভি। ৩৮. শাকিল আহমেদ, বার্তা প্রধান, একাত্তর টিভি। ৩৯. মিথিলা ফারজানা (মোবাশ্বিরা ফারজানা মিথিলা), হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, একাত্তর টিভি। ৪০. জাহেদুল হাসান পিন্টু, সম্পাদক, ডিবিসি। ৪১. মঞ্জুরুল ইসলাম, প্রধান সম্পাদক, ডিবিসি। ৪২. আশীস সৈকত, প্রধান বার্তা সম্পাদক, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি। ৪৩. মানস ঘোষ, হেড অব নিউজ, এশিয়ান টিভি। ৪৪. প্রণব সাহা, ডিবিসি। ৪৫. মাসুদা ভাট্টি, বাংলাদেশের সাবেক তথ্য কমিশনার। ৪৬. মুন্নী সাহা, সাবেক প্রধান নির্বাহী সম্পাদক, এটিএন নিউজ। ৪৭. জ ই মামুন (জহিরুল ইসলাম মামুন), সাবেক প্রধান নির্বাহী সম্পাদক, এটিএন বাংলা। ৪৮. স্বদেশ রায়, নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক জনকণ্ঠ। ৪৯. সোমা ইসলাম (চ্যানেল আই)। ৫০. শ্যামল সরকার (ইত্তেফাক)। ৫১. অজয় দাশ (সমকাল)। ৫২. আশরাফুল আলম খোকন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিবসহ কতিপয় দালাল সাংবাদিক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও কথিত সুশীল ব্যক্তিবর্গ।
আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩-এর ৩(২) ও ৪(১)/৪(২) ধারা অনুযায়ী, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে প্ররোচনা ও উসকানি, পরিকল্পনা ও নির্দেশে অন্যান্য আসামি কর্তৃক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশ্যে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে সাধারণ নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা, নির্যাতন, আটক, গুম করার মাধ্যমে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।