চবি সংবাদদাতা »
আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়ে দীর্ঘ ২৫ মাস পর অবশেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন জিনাতুল ফেরদৌস নাহিন ও ফাহিমা আক্তার নামে দুই শিক্ষার্থী। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের ভর্তির অনুমতি দেয়।
এর আগে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর কর্তৃপক্ষকে যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে দুই শিক্ষার্থীকে ভর্তির বিষয়টি বিবেচনার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সুযোগ পাওয়া দুই শিক্ষার্থীই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এর মধ্যে জিনাতুল ফেরদৌস নাহিন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটে ১০৯১তম এবং ফাহিমা আক্তার বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটে ৪৩৪ তম হয়েছিলেন।
দীর্ঘদিনের আইনি লড়াই শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় আনন্দিত ওই দুই শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে তারা বলেন, ‘দীর্ঘ ২৫ মাস পর আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অনুমোদন পেয়েছি। আমরা কল্পনা করিনি ভর্তি হতে পারবো। আমরা ভর্তি হতে পেরে সত্যিই আনন্দিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ওই দুই শিক্ষার্থীকে ভর্তির অনুমোদন দিয়েছি। তাদের ভর্তি হতে আর কোনো বাধা নেই।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেয়া চবির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এ, বি ও সি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান পাওয়ার পরও ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে ৮২ জন শিক্ষার্থী তিনটি রিট করেন। এ ছাড়া ডি-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া একজন শিক্ষার্থী একটি রিট করেন। এসব রিটের শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তিন ইউনিটে মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া ৮২ শিক্ষার্থীর ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়। এ ছাড়াও ডি-ইউনিটে মানোন্নয়ন দেয়া ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ না করায় রিট আবেদনকারীর ফলাফল প্রকাশ ও সেই অনুযায়ী ভর্তির বিষয়টি বিবেচনা করতে বলা হয়। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু আবেদনগুলো দীর্ঘদিন শুনানিতে না আসায় শিক্ষার্থীরা গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ভার্চ্যুয়ালি বিষয়টি আপিল বিভাগের নজরে এনে বলেন, আমরা কোথাও ভর্তি হয়নি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ও আমাদের ভর্তি করেনি। আমাদের শিক্ষাজীবন আটকে আছে।
এরপর আদালত শুনানির জন্য দিন ধার্য করে। একই বছর ২২ সেপ্টেম্বর শুনানিতে ৮২ শিক্ষার্থী নয়, কেবল যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে দুই শিক্ষার্থী ফাহিমা এবং জিন্নাতুন ফেরদৌস নাইমকে ভর্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।