সুপ্রভাত ডেস্ক »
জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদকে জড়িত করার অভিযোগকে ‘মিথ্যা’, ‘অসত্য’ এবং ‘বড় ধরনের স্পর্ধা’ বলে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
তিনি বলেন, গণঅধিকার পরিষদ শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী, তাই এ ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বরং এই ঘটনার মাধ্যমে সরকার এবং জাতীয় পার্টি আন্দোলনের গতিপথ ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
একইসঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশের সামনেই জাতীয় পার্টির নেতারা মিছিল করেছেন। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছুই করেনি। আমরা দেখেছি পুলিশ ভাঙচুরের সময় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এটি সরকারের একাংশ এবং প্রশাসনের একাংশের নীরব মদদ ছাড়া সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ যেমন তেজগাঁওয়ে বড় মিছিল করেছে অথচ তাদের প্রতিহত করা হয়নি, তেমনি জাতীয় পার্টিকেও মাঠে নামতে সহায়তা করা হচ্ছে। এর মানে স্পষ্ট- সরকারের একটি মহল তাদেরকে প্রটেকশন দিচ্ছে।
রাশেদ খাঁন বলেন, এটি নতুন কোনো আন্দোলন নয়। আমরা বরাবরই জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছি। প্রায় সাত-আট মাস আগে প্রধান উপদেষ্টার কাছেও আমরা লিখিতভাবে এই দাবি জানিয়েছি। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করেছি। আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জড়িত জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দল দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। তাই আওয়ামী লীগের কার্যক্রম যেমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে।
তিনি জিএম কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, জিএম কাদের নিজেই প্রকাশ্যে বলেছেন, ভারতের অনুমতি ছাড়া তিনি আলোচনা সংক্রান্ত কিছু বলতে পারবেন না। এর মানে তিনি ভারতের অনুগত দাসে পরিণত হয়েছেন। বাংলাদেশে কে বিরোধী দল হবে, কে সরকার হবে- এই সিদ্ধান্ত এদেশের জনগণ নেবে। কোনো প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা কিংবা ভারতের মতো বহিরাগত শক্তি এতে নাক গলাতে পারবে না। তবুও যদি জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল বানানোর ষড়যন্ত্র হয়, তবে সেটা জনগণ কখনো মেনে নেবে না।
তিনি আরও বলেন, শামীম হায়দার পাটোয়ারী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে বোঝা যায় তারা ফ্যাসিবাদের দোসর হয়ে গেছে। তাই আমি সরকারের কাছে স্পষ্ট দাবি জানাচ্ছি- আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তার করতে হবে। রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুদের মতো অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাহলে জিএম কাদের এখনো কেন গ্রেপ্তার হচ্ছেন না? সরকার এ ব্যাপারে দ্বিমুখী নীতি নিলে জনগণ কখনো তা মেনে নেবে না।
সবশেষে রাশেদ খাঁন বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কোনো স্থান নেই। ফ্যাসিস্ট ও তাদের দর্শকদের বিরুদ্ধে লড়াই যতদিন না এই শক্তি বিনাশ হয়, ততদিন গণঅধিকার পরিষদ রাজপথে থাকবে। জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে কোনোভাবেই অংশ নিতে পারবে না। তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমও চলবে না। জনগণের স্বার্থেই এই অবস্থান আমরা ধরে রেখেছি এবং রাখব।