সুপ্রভাত ডেস্ক »
সেই ২০০৩ সালের পর থেকে মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় যেন হয়ে উঠেছিল সোনার হরিণ। মাঝের ১৮ বছরে সঙ্গী ছিল চার ম্যাচ হারের বিষাদ। অবশেষে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারল বাংলাদেশ। শুরুতে এগিয়ে গেলেও পরে গোল খেয়ে জাগে পুরনো শঙ্কা। তবে শেষ দিকে ডিফেন্ডার তপু বর্মনের গোলে জয়ের উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার প্রাইম মিনিস্টার মাহিন্দা রাজাপাকসে আন্তর্জাতিক ট্রফিতে শনিবার মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারায় বাংলাদেশ। জামাল ভূইয়া দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর সমতা ফেরান মোহামেদ উমাইর। নির্ধারিত সময়ের তিন মিনিট বাকি থাকতে স্পট কিক থেকে জয়সূচক গোলটি করেন তপু।
এর আগে ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সবশেষ মালদ্বীপের বিপক্ষে জিতেছিল বাংলাদেশ। সাফের সেই ফাইনালে যদিও টাইব্রেকারে জেতে তারা। গত অক্টোবরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মালদ্বীপের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারে বাংলাদেশ।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চার ম্যাচ পর জয়ে ফিরল বাংলাদেশ। সাফে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পরের তিন ম্যাচে ভারত ও নেপালের বিপক্ষে ড্র করেছিল দল আর মাঝে হেরেছিল মালদ্বীপের কাছে।
চার জাতি এই টুর্নামেন্টে প্রথম জয় পেল বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও সিশেলসের বিপক্ষে ১-১ ড্রয়ের হতাশা সঙ্গী হয় মারিও লেমোসের দলের। দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনাল খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখল তারা।
ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচে সেরা একাদশে দুটি পরিবর্তন আনেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ। সাদউদ্দিন ও ইয়াসিন আরাফাতের বদলে মোহাম্মদ হৃদয় ও রহমত মিয়াকে নামান তিনি। জাতীয় দলের জার্সিতে এই প্রথম শুরুর একাদশে সুযোগ পেলেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হৃদয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১-১ ড্র ম্যাচে বদলি নামেন তিনি।
দ্বাদশ মিনিটে রহমতের থ্রো ইনে এক ডিফেন্ডার হেড করতে ব্যর্থ হওয়ার পর দূরের পোস্টে ফাঁকায় থাকা জামাল ভুইয়া বল পেয়ে যান। নিখুঁত টোকায় জাল খুঁজে নেন এই মিডফিল্ডার। সঙ্গে সঙ্গে অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান, হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায় অধিনায়কসহ পুরো দলকে। পরে সহকারীর সঙ্গে আলোচনা করে গোলের বাঁশি বাজান শ্রীলঙ্কার রেফারি ডিলান পেরেরা।
৩৩তম মিনিটে সমতায় ফেরে মালদ্বীপ। ডান দিক থেকে আলি আশফাকের কর্নারে রাকিব হোসেন লাফিয়ে উঠলেও বলের নাগাল পাননি। দূরের পোস্টে থাকা আকরাম ঘানির গোলমুখে বাড়ানো পাসে পা ছুঁইয়ে দেন মোহামেদ উমাইর।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলের আক্রমণে ধার ছিল না তেমন। প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারছিল না কেউই। এরই মধ্যে ৫৯তম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ পায় বাংলাদেশ; কিন্তু বক্সের ভেতরে বল পেয়ে রাকিব নিজে শট না নিয়ে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান বাঁয়ে থাকা সতীর্থের উদ্দেশে। কিন্তু মালদ্বীপের ডিফেন্ডাররা নেন বলের নিয়ন্ত্রণ।
৭৫তম মিনিটে মাহবুবুর রহমান সুফিলের ক্রসে জুয়েল রানার হেড জালে জড়ালেও অফসাইডের কারণে গোল হয়নি।
এরপর আসে বাংলাদেশের আনন্দের উপলক্ষ। সুফিলের থ্রু বল ধরে আক্রমণে ওঠা জুয়েলকে বক্সের মধ্যে গোলরক্ষক ফাউল করলে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। ৮৭তম মিনিটে দারুণ স্পট কিকে তপুর লক্ষ্যভেদে উল্লাসে লাফিয়ে ওঠে বাংলাদেশের ডাগআউট। বাকিটা সময় ব্যবধান ধরে রেখে জয়ের আনন্দে মাতে লাল-সবুজেরা।
মালদ্বীপকে শক্তিশালী মানলেও ম্যাচের আগে লেমোস বলেন, সিশেলসের চেয়ে মালদ্বীপ চেনা-জানা প্রতিপক্ষ বলেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। মাঠের লড়াইয়ে তাই করে দেখালেন জামাল-জিকো-জুয়েলরা।
আগামী ১৬ নভেম্বর রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতির আসরে নিজেদের সবশেষ ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম