নিজস্ব প্রতিকবদক »
দীর্ঘ ১৩ বছর পর আগামী অক্টোবরে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি।
বুধবার কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম নগরের তৃণমূলের সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন এবং ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি সম্মেলনের সম্ভাব্য তারিখও ঘোষণা করেছেন।
হানিফ বলেন, ডিসেম্বরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে। তাই সেপ্টেম্বরের মধ্যে সারা দেশে সব ইউনিটগুলোর সম্মেলন আমরা শেষ করতে চাই। ইতোমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা সম্মেলন হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১ অক্টোবর করতে চাই।
হানিফ বলেন, ১ অক্টোরের আগে নগর আওয়ামী লীগের ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আর ১ অক্টোবরের কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে মহানগর আওয়ামী লীগ নতুন আঙ্গিকে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। যোগ্য লোককে মাঠ থেকে খুঁজে যোগ্য জায়গায় নিয়ে আসতে হবে। যারা সুবিধাভোগী ও তেলবাজ, তাদের দিয়ে সংগঠনের কোনো উপকার হয় না।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে হবে।
তিনি বলেন, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আওয়ামী লীগের কোনো বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের মাধ্যমে এ দেশের পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশকে দরিদ্র দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপির উদ্দেশে হানিফ বলেন, আন্দোলনের নাম করে যদি হঠকারিতা করতে চান, বাংলার মানুষ রাজপথে তা রুখে দেবে। দেশের জনগণই বিএনপি-জামায়াতকে উচিত শিক্ষা দিয়ে দেবে।
তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি তৎপর। গত ১২ বছরে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বার বার আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। বিএনপি- জামায়াত বিভিন্ন সময়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। সবকিছু মোকাবিলা করেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
হানিফ বলেন, বিএনপি প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করে অশান্ত পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করার শক্তি বিএনপি জামায়াতের মতো অপশক্তির নেই।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কথায় কথায় হুমকি দিচ্ছেন, অশালীন ভাষায় কথা বলছেন। এভাবে যদি অশালীন ভাষায় কথা বলেন, তবে দেশের সাধারণ মানুষই আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
তিনি আরও বলেন, দু-একটি জায়গায় অন্তর্কোন্দল আছে বলে মনে করবেন না আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এখনো দেশের সর্ববৃহৎ দল। সাধারণ মানুষের আস্থা এখনও শেখ হাসিনার ওপর। মানুষ বিশ্বাস করে দেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। দুর্নীতির দায়ে শাস্তি পাওয়া বিএনপির নেত্রীর প্রতি দেশের মানুষের আস্থা নেই।
আওয়ামী লীগে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন অনুষ্ঠানে বলেন, মানুষ যাকে চায়, জননেত্রী তাকেই নেতা বানাবেন। নবীন সদস্যরা তৃণমূলের ইউনিটগুলোর নেতৃত্ব নির্বাচনে কী ভূমিকা রাখবে তা আমরা বসে ঠিক করব।
তিনি বলেন, ওয়ার্ড ও ইউনিটের বিষয়ে যেসব অভিযোগ আছে, তা ১৫ জুনের মধ্যে জানাতে হবে। নিষ্পত্তি করতে হবে ৩০ জুনের মধ্যে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে তৃণমূলের সব সম্মেলন শেষ করতে হবে। এরপর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি, বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় সম্পাদক বেগম ফরিদুনন্নাহার লাইলী, কেন্দ্রীয় উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি ও আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি গঠিত হয় ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর। তবে সেবার সম্মেলন হয়নি, কমিটিরি ঘোষণা এসেছিল ঢাকা থেকে। তার আগে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৯ সালে।
২০১৭ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর কমিটির সহ সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী পান ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব।