পল্লী বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ঠ গ্রাহক
চন্দনাইশে গণশুনানি
নিজস্ব প্রতিনিধি, চন্দনাইশ :
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ চন্দনাইশ অঞ্চলের বিরুদ্ধে ভুতুড়ে বিলের অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সোমবার সকালে চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবদুল জব্বার চৌধুরীর উপসি’তিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চন্দনাইশ কার্যালয়ে এক গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে উপজেলা চেয়ারম্যান বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গ্রাহকদের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন না করার নির্দেশ দেন। সে সাথে পুরোনো অতিরিক্ত বিল কয়েক মাসে সমন্বয় করে আদায় করার অনুরোধ জানান।
জানা যায়, ১৯৯৯ সালে চন্দনাইশকে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে পল্লী বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়। বর্তমানে ৬৪ হাজার গ্রাহক এ অঞ্চলের অধীনে সহস্রাধিক গ্রাহকের অতিরিক্ত বিল করার অভিযোগ।
এদের মধ্যে গাছবাড়িয়ার শাহ আলমের মার্চ ও এপ্রিল মাসে ১১৭ টাকা বিলের স্থলে মে মাসে ৬ হাজার টাকা বিল দেয়া হয়েছে। একইভাবে চৌধুরী পাড়ার ১ জনের মার্চ মাসে ৫ হাজার ৮’শ ৬০ টাকা, এপ্রিল মাসে ৪ হাজার ৮’শ ৮৭ টাকার স্থলে মে মাসে ১৭ হাজার ১৫ টাকা বিল করা হয়েছে। একইভাবে আরেকজনের মার্চ মাসে ২ হাজার ২’শ ৪৮টাকা, এপ্রিল মাসে ২ হাজার ২’শ ৮৮ টাকার স’লে মে মাসে ১১ হাজার ৮’শ ৪৭ টাকা বিল করা হয়েছে। এভাবে শতাধিক ব্যক্তি তাদের অসঙ্গতি বিল নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে অভিযোগ করেছেন। করোনা সংক্রমণের কারণে চন্দনাইশের ঘরে ঘরে মে মাসের বিদ্যুৎ বিলে ভুতুড়ে বিলের কাগজ ধরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। স্বাভাবিক বিলের চাইতে কয়েকগুণ বেশি বিল এসেছে কয়েক হাজার গ্রাহকের। মিটার না দেখে বিল করলেও পূর্বের রেকর্ড যাচাই করে বিল করলে এতোটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ হতো না বলে মনে করছেন উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার শত শত গ্রাহক। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির অভিযোগ দিয়ে বিদ্যুৎ বিল করার জন্য গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি না গেলেও বিলের কাগজ পৌঁছানোর জন্য ঠিকই গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়েছিলো পল্লী বিদ্যুতের লোকেরা। এতে করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ চন্দনাইশ এলাকার শত শত গ্রাহক।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর চন্দনাইশ জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, করোনা স সংক্রামণের কারণে গত ২ মাস গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে বিদ্যুৎ বিল করা সম্ভব হয়নি। প্রায় ৩ মাস সবাই বাড়িতে অবস্থান করায় বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। তার প্রমাণ হিসিবে তিনি বলেন, গত মার্চ মাসে ৪৭ লাখ ইউনিটের স’লে মে মাসে ৭৪ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে হয়েছে। অথচ মে মাসে দোকানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রায় বন্ধ ছিলো। ফলে এ সকল বিদ্যুৎ আবাসিক মিটারে ব্যবহৃত হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুসারে গ্রাহকদের অতিরিক্ত জমা থাকা বিল পরবর্তী কয়েক মাসের বিলের সাথে সমন্বয় করে আদায় করা হবে। সে সাথে তার নির্দেশনা অনুযায়ী অতিরিক্ত বিলের সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কোন গ্রাহকের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন করা হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।