হোপ তাণ্ডবে যুক্তরাষ্ট্রকে উড়িয়ে দিল ক্যারিবীয়রা

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »

লক্ষ্যটা ১২৯। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্বাভাবিক খেলার সামনে এই লক্ষ্য মামুলি। মাঠেও দেখা গেল সেটার প্রতিফলন। ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়ে ১০.৫ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌছে যায় ক্যারিবীয়রা। ৫৫ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের জয়ে সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে গেল রভম্যান পাওয়েলের দলের। গতকাল (শনিবার) বার্বাডোজের ব্রিজটাউনের কেনিংসটন ওভালে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং তোপে ১৯.৫ ওভারে ১২৮ রানেই গুটিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাব দিতে নেমে শাই হোপের ঝড়ো ফিফটিতে ভর করে ১০.৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান তুলে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দ্বিতীয় ওভারেই নস্টুশ কেনজিগেকে ছক্কা মেরে শুরু করেন হোপ। অন্যপ্রান্তে তাকে সঙ্গ দিয়ে যান জনসন চার্লস। শাই হোপের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সামনে বানের জলের মতো ভেসে যায় যুক্তরাষ্ট্রের বোলিং। তাতে পাওয়ারপ্লে’র ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৮ রান। যার মধ্যে হোপের একার ৪২! পাওয়ারপ্লে’র পরের ওভারেই হারমিত সিংকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দেন চার্লস। আউট হওয়ার আগে ১৪ বলে করেন ১৫ রান। এরপর ক্রিজে আসেন নিকোলাস পুরান। হোপের সঙ্গে মিলে মারকাটারি ব্যাটিংয়ে হাত লাগান পুরানও। তাতে ১০ ওভারে ক্যারিবীয়রা তোলে ১১০ রান। এর মধ্যেই ফিফটি তুলে নেন হোপ। হারমিতকে ছক্কা হাঁকিয়ে ২৬ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন হোপ। ফিফটি করার পথে সমান চারটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর শুরু হয় পুরানের ঝড়। একাদশ ওভারে সৌরভ নেত্রভালকারকে ৩ ছক্কায় উড়িয়ে ম্যাচ জিতিয়ে ফিনিশিং টানেন বাঁহাতি পুরান। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২৬ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় আসে ১১ ছক্কা ও ৭ চারের মারে। সেই সঙ্গে সুপার এইটের প্রথম জয় পায় রভম্যান পাওয়েলের দল। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট্র। স্টিভেন টেলরকে ২ রানের মাথায় বিদায় করেন আন্দ্রে রাসেল। সেই ধাক্কা সামলে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন আন্দ্রিয়াস গাউস ও নিতিশ কুমার। দুজন মিলে কাটিয়ে দেন পাওয়ারপ্লে। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৪৮ রান সংগ্রহ করে যুক্তরাষ্ট্র। তখন মনে হচ্ছিলো বড় স্কোরের দিকেই এগোচ্ছে দলটি। কিন্তু ভুলটা ভাঙেন গুদাকেশ মোতি। সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই নিতিশকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন এই স্পিনার। আউটের আগে ১৯ বলে ২ চারের মারে ২০ রান করেন নিতিশ। এই জুটি ভাঙার তাল আর সামলে উঠতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। পরের ওভারেই ফিরে যান দলের ভরসা হয়ে থাকা গাউস। ১৬ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৯ রান করেন তিনি। গাউসের বিদায়ে জোনসের সঙ্গে এসে জুটি বাঁধেন কোরি অ্যান্ডারসন। এ সময়েই রোস্টন চেজের আঘাত। ১১ রান করা জোনসের স্টাম্প এলোমেলো করে যুক্তরাষ্ট্রকে খাদে ঠেলে দেন তিনি। ১০ ওভারে যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহ দড়ায় ৪ উইকেট হারিয়ে ৬৯ রান। মিলিন্দ কুমারকে নিয়ে একটা ভালো জুটি গড়ার পথে এগোচ্ছিলেন অ্যান্ডারসন। তবে ১৪তম ওভারে কোরিকে ফিরিয়ে সেটা হতে দিলেন না চেজ। দলকে হতাশ করে ১৫ বলে ৭ রান করেন সাবেক কিউই অলরাউন্ডার। পরের বলেই হারমিত সিংকে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন চেজ।
তবে সেটা হতে দেননি শ্যাডলি ভ্যান শালকউইক। শালকউইক অবশ্য ক্রিজে এসে বেশিক্ষণ সঙ্গ পাননি। জুটি বড় হওয়ার আগেই মোতি ও রাসেলের যোগসাজশে রান আউটের খাঁড়ায় কাটা পরে ২১ বলে ১৯ রানে বিদায় নিতে হয় মিলিন্দকে। এক বল পর শালকউইকও ১৭ বলে ১৮ রান করে একই পথ ধরেন। শেষদিকে ঝড় তোলেন আলী খান। তার ৬ বলে ১৪ রানের ইনিংসে লড়াকু পুঁজি পায় মার্কিন দেশটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেল ও চেজ। ২ উইকেট দখল করেন আলজারি জোসেফ। ১ উইকেট নেন গুদাকেশ মোতি। খবর রাইজিংবিডি.কম’র