হুমাইরা তাজরিন »
স্বাগত ২০২৩। বছরের প্রথম দিন আজ। নতুনদিনে নগরজুড়ে উৎসবের আমেজ। নতুন বছরের শুভ সূচনায় ফুল যেন অন্যতম অনুষঙ্গ। বছরের বিশেষ দিনে ফুলই সেরা উপহার। খ্রিস্টীয় নববর্ষে ফুলের দোকানে যেন নানা রঙয়ের-গন্ধের ফুলের মেলা বসেছে !
নগরের চেরাগী পাহাড় এলাকার মোমিন রোডের দু’পাশে রয়েছে অসংখ্য ফুলের দোকান। সারাবছরই এখানে দেশি-বিদেশি ফুলে ভরে থাকে। তবে খ্রিস্টীয় নববর্ষকে উপলক্ষ করেই যেন বাড়তি ফুলের সংগ্রহ। প্রায় প্রতিটি দোকান রঙ-বেরঙের দেশি-বিদেশি ফুলে ঠাসা। নতুন বছরকে কেন্দ্র করে অন্যান্য দিনের তুলনায় ফুলের দামও হাঁকা হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ।
এদিকে প্রিয়জনকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাতে ফুলের দোকানগুলোতে দেখা গেছে ক্রেতার ভিড়। কেউ কেউ আগে থেকে অর্ডার দিয়ে রেখেছেন ফুলের তোড়ার। বিশেষ করে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো কয়েকদিন আগেই থেকেই ফুলের অর্ডার করে রেখেছেন। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী এসব ফুলের তোড়া তৈরি ও ফুল বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। মাঝারি দোকানগুলোতে প্রায় ৩শ থেকে ৪শ ও বড়ো দোকানগুলোতে ১ হাজার তোড়ার অর্ডার আসে। আগামী কয়েকদিন নববর্ষের এই আমেজ বিরাজ করবে, তাই থাকবে ফুলের চাহিদাও। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখনও আসছে নামীদামি ফুল। যার মধ্যে চায়না ফুলের আমদানি সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে আছে জারবেরা, জিপসি, গ্ল্যাডিওলাস, ক্রিসেনডিমাম, স্টোমা, স্টাডিস, কান্ডিশান, লিলি ও অর্কিড ইত্যাদি। এছাড়া দামে কম এবং সুবাসিত হওয়ায় দেশি ফুলের বিক্রিও বেশি। যার মধ্যে রয়েছে রজনীগন্ধা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা। তবে সব মিলিয়ে গোলাপের চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
শরীফ সাজ্জাদ নামে একজন তরুণ এসেছিলেন প্রিয় মানুষকে নিয়ে ফুলের দোকানে। ফুল নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যখনই বিশেষ দিনগুলোতে প্রিয়মানুষকে কোনো উপহার দেওয়ার কথা ভাবি সবার আগে মাথায় আসে ফুলের কথা। ফুল আমাদের রঙিন হতে, কোমল হতে, সুবাসিত হতে শেখায়। তাই মনে হয় যেন ফুল নাহলেই নয়। নববর্ষের এদিনে প্রিয়তমাকে ফুল দিয়ে বলতে চাই ,‘হে প্রিয়, নববর্ষে ফুলেল শুভেচ্ছা নিও।’
ফজলে করিম লিটন নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘দেশি ফুলের মধ্যে গোলাপ, রজনীগন্ধা, চন্দ্রমল্লিকার চাহিদা বেশি আর বিদেশি ফুলের মধ্যে জারবেরার। সবচে বেশি থাকে তোড়ার অর্ডার। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই অর্ডারগুলো বেশি করে থাকে। প্রায় ১ হাজার তোড়া আমাদের দোকানে বিক্রি হয়।’
মো. ইব্রাহীম নামে আরেক ফুল দোকানি বলেন, ‘মন সুন্দর নাহলে লোকে ফুল কেনে না। অনেক ব্যবসা ছিলো ফুল ব্যবসাই আমাকে অনেক বেশি টানতো। আগ্রহ থেকে ধীরে ধীরে এই ব্যবসায় পুরোদমে লেগে পড়েছি। আমার ব্যবসার বয়স ১৬ বছর। মানুষকে ফুল কিনতে দেখলে আর বিক্রি করতে ভালো লাগে। মৌসুম ছাড়া সবসময় যে লাভ হয় তা না। যেমন করোনা কালে খুব খারাপ সময় গেছে। এ বছর আশানুরূপ লাভের সম্ভাবনা দেখছি।’