সুপ্রভাত ডেস্ক »
চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলি উত্তর সরাইপাড়া এলাকায় হেলে পড়া তিন তলা ভবনটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ নয়’ বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। ভবন মালিকও মনে করছেন এতে কোনো ঝুঁকি নেই। তাই ভবনটি থেকে বসবাসকারীদের সরানো হয়নি।
মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর পাহাড়তলী থানার উত্তর সরাইপাড়া এলাকায় ভবনটির হেলে পড়ার খবর পেয়ে সেখানে যান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
উত্তর সরাইপাড়ার বঙ্গবন্ধু ক্লাবের গলিতে গয়না ছড়া খালের পাড়ে ওই ভবনটির অবস্থান। এই ভবনের উত্তর পাশেই আরো একটি তিন তলা ভবন আছে। ঘটনার বিষয়ে দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিন তলা ভবনটির পাশে গয়না ছড়া খালের কাজ চলছিল। খালে পাইলিং করার সময় লাগোয়া ভবনটির নিচের মাটি সরে গেছে।
‘তিনতলা ওই ভবনটির পাশের আরেকটি ভবনের মাঝে ৬ ইঞ্চি গ্যাপ (ফাঁকা) ছিল আগে। এখন সেই গ্যাপটা আর নেই। তবে হেলে যাওয়া ভবনে ফাটল বা তেমন কিছু দেখা যায়নি।’ তিন তলা ওই ভবনে ছয়টি পরিবারের বসবাস। ভবনের মালিক মফজল আহমদ।
তিনি বলেন, ‘দুই মাস ধরে খালে শিট (লোহার পাত) বসানোর কাজ চলছে। কয়েকদিন আগে বৃষ্টি হওয়ায় মাটি দেবে গিয়ে আমার বিল্ডিংয়ের সীমানা দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়।
‘তাদের আগেই জানিয়েছি। তারা বলেছে, দেখবে। কিন্তু কিছু করেনি। আজকে ১২টার সময় সীমানা দেয়ালটার নিচের মাটি সরে যায়। বিল্ডিং হেলে যায়নি, নিচে থেকে দেখে মনে হচ্ছে। উপর থেকে দেখলে ওরকম না।’
তার ভবন খালের জমি থেকে ১২ ফুট দূরে আছে বলে দাবি করেন মফজল আহমদ।
নগরীর খালগুলোতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এই প্রকল্পের পূর্ত কাজ করছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।
প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী বলেন, ‘ভবনটি হেলে পড়েছে, সেরকম কিছু নয়। দেয়াল করতে হলে গ্রেটবিম দিয়ে করতে হয়। ওই ভবনটির সীমানা দেয়ালের নিচে গ্রেট বিম নেই।’
‘শিট ফাইলিং (স্টিলের পাত বসানো) করার সময় সীমানা দেয়ালে ফাটল ধরার পর ভবন ও সীমানা দেয়ালের মাঝের অংশের মাটি দেবে গেছে। তাতে মনে হচ্ছে ভবনটি হেলেছে। এতে কোনো ঝুঁকি নেই।’
ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘খালে পাইলিং করার সময় মাটি সরে যাওয়ায় ভবনটির সীমানা দেয়াল পড়ে গেছে। এরপর সীমানা দেয়াল ও ভবনের মাঝের অংশের মাটি সরে গেছে।
‘এতে ভবনটি একটু হেলানো মনে হলেও পাশের ভবনের সাথে হালকা ফাঁক আছে। আমরা পরে উপর থেকে দেখেছি। দুটো ভবন কাছাকাছি। তবে গায়ে গায়ে লাগেনি। যে ভবনটি হেলেছে বলা হচ্ছে সেটি স্ট্রাকচারাল ভবন। মানে পিলার আছে। ভবনেও কোথাও কোনো ফাটল নেই। তাই ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে না।’
ভবন হেলে পড়ার ভবনে সেখানে পুলিশ গিয়েছিল। তবে বিকালের দিকে পুলিশ সদস্যরা ফিরে যান।