সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক
এই হারে লজ্জা নেই। বুক চিতিয়ে লড়ে কুয়েতের মতো শক্ত প্রতিপক্ষকে অতিরিক্ত সময়ে খেলতে নিয়ে যাওয়া, বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে জেতার সম্ভাবনা তৈরি করা। ফুটবলে এ যেন এক নতুন বাংলাদেশ! মাঝে একটা বিরতির জন্য র্যাংকিংয়ে পিছিয়ে ১৪৩-এ এসেছে কুয়েত। কিন্তু একটা সময় (১৯৯৮ সালে) এই দলটি কিন্তু বিশ্ব ফুটবলের সেরা ২৫ দলের মধ্যে ছিল (র্যাংকিং ছিল ২৪)। তাদের প্রতিপক্ষ যখন বাংলাদেশ, তখন সহজ জয়েই তো মাঠ ছাড়ার কথা। এবারের সাফেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে ওঠে কুয়েত। আজ ফাইনালে কুয়েত খেলকে স্বাগতিক ভারতের বিরুদ্ধে। সাফে আমন্ত্রিত দলটিকে শিরোপার অন্যতম দাবিদার মনে করা হচ্ছে। কিন্তু মাঠের ফুটবলে তাদের থেকে খুব একটা পিছিয়ে ছিল না বাংলাদেশ। কুয়েতের চোখে চোখ রেখে খেলেছে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল। বল দখলে পিছিয়ে থাকলেও ম্যাচে মোট ১২টি শট নেয় বাংলাদেশ, যার মধ্যে ৬টি ছিল লক্ষ্যে। রাকিবের একটি শট তো পোস্টে না লাগলে গোলই হতে পারতো। অন্যদিকে ১৮ শটের ১১টি লক্ষ্যে রাখলেও একটিমাত্র গোল করতে পেরেছে কুয়েত। সেই গোলটিও এসেছে ১১৫ মিনিটের পর। বাংলাদেশ দারুণ খেলে কুয়েতকে আটকে রেখেছিল এতটা সময়। বাংলাদেশের রক্ষণ এককথায় দুর্দান্ত ছিল। ছিল আক্রমণের ধারও। আর আলাদা করে বলতে হয় গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর কথা। এমন সব সেভ তিনি করেছেন, নিশ্চিত কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে কুয়েতের। জিকোর গোলকিপিং ছিল এককথায় বিশ্বমানের। বাংলাদেশ যে এই ম্যাচে এতটা সময় টিকে ছিল, দারুণ ফুটবল খেলেছে তার পেছনে বড় অবদান তার। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে (১১৫+২) যোগ করা সময়ে এসে গোল হজম করে বাংলাদেশ। আবদুল্লাহ বুলুশি যে গোলটি দিয়েছেন, সেটিতে অবশ্য জিকোর করার কিছু ছিল না। বক্সে ঢুকে পড়ে একজন ডিফেন্ডারের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। তবে ওই এক গোল বাদ দিলে পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে ধারেভারে এগিয়ে থাকা একটি দলের বিপক্ষে যেভাবে নিজেদের মেলে ধরেছেন জিকো-জামাল-মোরসালিন-রাকিবরা, এক কথায় বলা যায়-ম্যাচ হারলেও হৃদয় ঠিকই জিতে নিয়েছে ’নতুন বাংলাদেশ’।