নিজস্ব প্রতিনিধি, রাউজান »
‘আমার জাদুকে মারার পর মরদেহটি পর্যন্ত রাখেনি, যাদুকে নিয়ে কান্নাকাটি করব, কবর দিবো এই সুযোগটাই আমাদের কপালে জোটেনি।’ ছেলের পুরো লাশ না পাওয়ার কষ্টের কথাগুলো এভাবেই বলছিলেন অপহরণ পরবর্তী হত্যাকা-ের শিকার রাউজানের কলেজ ছাত্র সিবলী সাদিক হৃদয়ের মা নাহিদা আকতার।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের খাটে পড়ে আছে নিহত কলেজছাত্রের বই-খাতা। আহাজারি করছেন বাবা-মা। তাদের আহাজারি কিছুতেই থামছে না। হৃদয়কে হারিয়ে শোকগ্রস্ত তার কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওমার ফারুক। এদিকে অপহরণ মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা, পুলিশের কাজে বাধা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
সোমবার রাতে অপহরণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হাকিম বাদি হয়ে মামলা দুটি করেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন। সোমবার সকালে উদ্ধারকৃত কলেজছাত্রের খ-িত দেহাবশেষ ও উত্তেজিত জনতার গণপিটুনিতে নিহত আসামি উমংচিং মারমার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত কাপ্তাই উপজেলার মতিঙ্গাছড়ির অংসুচিং মারমার ছেলে সুইচিংমং মারমা (২৪) ও কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের সাপমারা গ্রামের অংথুইমং মারমা (২৫) কে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এছাড়া কয়েকদিন আগে বেতবুনিয়া ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আছুমং মারমা (২৬) ও কাপ্তাই থানার চিৎমরং ইউপির ঊক্যথোয়াই মারমা (১৯)কে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছিল পুলিশ।
রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, বিক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে প্রধান আসামির মৃত্যুর ঘটনা এবং পুলিশের কাজে বাধা, হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উত্তেজিত জনতার হাতে নিহত প্রধান আসামিসহ ৫জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়।