হালদা রক্ষায় কঠোর ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা নিন

হালদাকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে না পারার চারটি কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণগুলো হলো, ভূজপুর রাবার ড্যাম, নদীর উজানে মানিকছড়িতে তামাক চাষ, পোল্ট্রি ও ট্যানারি বর্জ্য এবং কাটাখালী, কৃষ্ণখালী ও খন্দকিয়া খালের দূষণ।

হালদা নদীতে ভূজপুর এলাকায় কৃষি কাজের সুবিধার্থে সম্ভাব্যতা যাচাই না করে রাবার ড্যাম স্থাপন করা হয়েছিল। এই রাবার ড্যামে শুষ্ক মৌসুমে ইরি ও বোরো আবাদের সুবিধা হলেও হালদা নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এমনকি গত শুষ্ক মৌসুমে রাবার ড্যামের কারণে নদীর পাইন্দং যুনীঘাটা এলাকায় নদীর তলদেশে ফাটল দেখা দেয়। অনাবৃষ্টি ও রাবার ড্যামের কারণে হালদার এই অংশে তলদেশে ফাটলের সৃষ্টি হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছিলেন।

কাটাখালী, কৃষ্ণখালী ও খন্দকিয়া খালের দূষনও হালদাকে দূষিত করছে। এই তিনটি খালের কারণে এলাকার চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। কালো দূষিত পানির গন্ধে শুষ্ক মৌসুমে রাস্তা দিয়ে চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। খাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা, বিশেষ করে শিশুরা প্রতিনিয়ত নানা রোগে আক্রান্ত হয়। এই তিন খালের দূষিত পানি হালদায় পড়ে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে।

এছাড়া নদী সংলগ্ন স্থানে করা পোল্ট্রি ফার্মের বর্জ্য ও ইটভাটার কারণে নদী দূষিত হয়ে থাকে বলে জানান স্থানীয়রা।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হালদা নদীর উজানে মানিকছড়ি অংশের দুই পাড়ে অবাধে বিষাক্ত তামাক চাষের ফলে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে নদীর পানি। ফলে হালদার মূল অংশে ব্যাহত হচ্ছে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন।

আসলে নদীর জীববৈচিত্র্য, মাছের জীবন ও হালদার পরিবেশ রক্ষায় হালদাপাড়ের তামাক চাষিদেরও এগিয়ে আসতে হবে। সে সঙ্গে হালদাকে রক্ষায় সরকারকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ এই নদীর সঙ্গে জড়িত দেশের মৎস্যশিল্পের বড় অংশ। তাই হালদা রক্ষার দায় কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কিছু পরিবেশবাদীর নয়। দায় নিতে হবে জাতিকে।