সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
এক ওভার হাতে রেখেই অবশেষে অস্ট্রেলিয়া চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে জয় পেলো। বাংলাদেশের অল্প পুঁজির সংগ্রহ টপকাতে তাদের অনেক বেগ হতে হয়েছে। ১০৫ রান তাড়া করে ৩ উইকেটের কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে সফরকারীরা। সাকিব আল হাসানের এক ওভারে ড্যান ক্রিস্টিয়ান পাঁচ ছক্কা না হাঁকালে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হলেও হতে পারতো।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজে প্রথম তিনটি জিতে সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার জয়টি হয়ে থাকছে তাদের জন্য কেবল ব্যবধান কমানোর ম্যাচ ।
১০৫ রানের সহজ লক্ষ্যে নেমে শেখ মেহেদীর চতুর্থ বলেই বিদায় নেন অস্ট্রেলিয়া ক্যাপ্টেন ম্যাথু ওয়েড। এরপর নিজেদের কৌশল বদলে ড্যান ক্রিস্টিয়ানকে তিন নম্বরে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া।
উদ্দেশ্য পরিষ্কার-স্লগ করা। সেই কাজটা তিনি করেন দারুণভাবে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে সাকিবকে পাঁচ ছক্কা মেরে দেন তিনি। রান তাড়ায় সমীকরণ একদম সহজ হয়ে যায় তখনই।
কিন্তু নাটকের ছিল অনেক বাকি। মোস্তাফিজুর রহমান এসে ক্রিস্টিয়ানকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর পথ হারায় অজিরা।
মোজেজ হেনরিকস হয়ে যান দুর্ভাগ্যজনক রান আউট। আলেক্স ক্যারি মোস্তাফিজের স্লোয়ার বুঝতে না পেরে হন এলবিডব্লিউ। অজিদের আশা ভরসার প্রতীক মিচেল মার্শ শেখ মেহেদির বলে ড্রাইভে প্রলুব্ধ হয়ে বোল্ড হয়ে যান। ১৮ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ।
এত ভাল অবস্থায় থেকেও এই ম্যাচ হারলে অস্ট্রেলিয়ার জন্য ব্যাপারটা হতো চরম বিব্রতকর। দলকে সেই বিব্রতিকর দশা থেকে রক্ষা করেন দুই অ্যাস্টন- অ্যাগার ও টার্নার।
সপ্তম উইকেট জুটিতে আসে মহা গুরুত্বপূর্ণ ৩৪ রান। তাতেই বেরিয়ে যায় ম্যাচ। শরিফুল ইসলামের বলে শামীম পাটোয়ারির দারুণ ক্যাচে ধরা পড়ে বিদায় নেওয়ার আগে ২৭ বলে ২৭ করে যান অ্যাগার। মাত্র ৯ রান করলেও টার্নার ক্রিজে থেকে খেলা শেষ করে বেরিয়েছেন।
মোস্তাফিজ এই ম্যাচেও ছিলেন দুর্দান্ত। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। ৪ ওভার বল করে মাত্র ৯ রান দিয়ে তুলেছেন ২ উইকেট। কিন্তু এত কম রান দিয়ে ম্যাচ জেতার আশা করা বাড়াবাড়ি।
এর আগে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। আগের তিন ম্যাচে ২, ০, ২ রান করে আউট হলেও চতুর্থ ম্যাচে আবার সুযোগ পান সৌম্য সরকার। এ ম্যাচেও ব্যর্থ তিনি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে অজি পেসার জশ হ্যাজেলউডকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বৃত্তের মধ্যে অ্যালেক্স কেরির হাতে ধরা পড়ে আউট হন ১০ বলে ৮ রান করে। সাকিব আল হাসান ছিলেন একেবারেই নিষ্প্রাণ। হ্যাজলউডের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন ২৬ বলে ১৫ রান করে।
অস্ট্রেলিয়া একাদশে সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেন মিশেল সোয়াপসন। ইনিংসের ১১তম ওভারে জোড়া আঘাতে ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর নুরুল হাসান সোহানকে। দুজনের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি। এদিন থিতু হয়েও সুবিধা করতে পারেননি ওপেনার নাঈম শেখ। সোয়াপসনের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন ৩৬ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে। আফিফ হোসেনকে বড় ইনিংস খেলতে দেননি অ্যাগার। আফিফ আউট হন ১৭ বলে ২১ রান করে।
জিম্বাবুয়ে সফরে অভিষেক হওয়া শামীম পাটোয়ারী যেভাবে আলোচনায় আসেন মাত্র ২ ইনিংস দিয়ে, তার মান ধরে রাখতে পারছেন না তিনি। আগের ৩ ম্যাচে ২ বার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে ব্যর্থ তিনি। এ ম্যাচেও হাঁটেন একই পথে। ৬ বল খেলে ৩ রান করে আউট হন শামীম। পরে শেখ মেহেদী হাসানের ১৬ বলে ২৩ রানের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ১০৪ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় টাইগাররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১০৪/৮ (নাঈম ২৮, সৌম্য ৮, সাকিব ১৫, মাহমুদউল্লাহ ০, সোহান ০, আফিফ ২১, শামীম ৩, শেখ মেহেদী ২৩, নাসুম ২*, শরিফুল ০ ; টার্নার ০/২২ , হ্যাজেলউড ২/২৪, অ্যাগার ১/২২, টাই ৩/১৮, সোয়েপসন ৩/১২ হেনরিকস ০/৫ )
অস্ট্রেলিয়া: ১৯ ওভারে ১০৫/৭ (ম্যাকড্রেমট ৫, ওয়েড ২ , ক্রিশ্চিয়ান ৩৯, মার্শ , হেনরিকস ৪, ক্যারি ১, টার্নার ৯*, অ্যাগার ২৭, টাই ৪৮ ; শেখ মেহেদী ২/১৭, সাকিব ০/৫০, নাসুম ১/১৭, মোস্তাফিজ ২/৯, শরিফুল ১/৮, মাহমুদউল্লাহ ০/৩)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মিচেল সোয়েপসন।