সুপ্রভাত ডেস্ক »
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া ইরানে নিহত হয়েছেন।
হামাস একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ইসমাইল হানিয়া তেহরানে তাঁর সদর দপ্তরে একটি জায়নবাদী (ইসরায়েল রাষ্ট্রের কট্টর সমর্থক) হামলায় নিহত হয়েছেন। এর আগে তিনি ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আজ বুধবার সকালে ইসমাইল হানিয়ার নিহত হওয়ার খবর প্রচার করে। টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, রাজধানী তেহরানে হামলায় ইসমাইল হানিয়া ও তাঁর একজন দেহরক্ষী নিহত হন।
ইসমাইল হানিয়া ২০১৭ সালে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান নির্বাচিত হন। পরের বছর তাঁকে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। জানা যায়, কয়েক বছর ধরে হানিয়া কাতারে বসবাস করে আসছিলেন।
গত এপ্রিলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার জন্য দেশটিতে সফর করেছিলেন হানিয়া। একই মাসে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হানিয়ার তিন ছেলে হাজেম, আমির ও মুহাম্মদ ইসমাইল এবং তাঁর অন্তত তিন নাতি-নাতনি নিহত হন।
কে এই ইসমাইল হানিয়া?
ইসমাইল হানিয়া ১৯৬২ সালে গাজা শহরের কাছে আল শাতি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। তারা বাবা-মা ১৯৪৮ সালে তাদের বাড়ি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। তিনি ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত স্কুলে পড়াশোনা করেছেন এবং গাজার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি সাহিত্য অধ্যয়ন করেছেন।
আশির দশকে রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে হামাসের উত্থানের সময় সামনের কাতারে ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। ১৯৮৯ সালে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় এবং ১৯৯২ সালে আরও কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে তাকে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তের শূন্যরেখায় ছেড়ে দেয়।
এক বছর নির্বাসনে থেকে ইসমাইল হানিয়া গাজায় ফিরে আসেন। তিনি হামাসের প্রতিষ্ঠাতা ও মতাদর্শিক গুরু শেখ ইয়াসিনের ব্যক্তিগত সহকারীর দায়িত্ব পাওয়ার পর হামাসে তাঁর পদমর্যাদা বাড়ে।
ইসমাইল হানিয়া ২০০৬ সালে গাজায় হামাসের প্রধান হন এবং সংক্ষিপ্তভাবে একটি ফিলিস্তিনি ঐক্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা অভ্যন্তরীণ সংঘাতের পর ভেঙে দেওয়া হয়।
২০১৭ সালে হানিয়াকে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা হিসেবে মনোনীত করা হয়। সেসময় হামাসের লক্ষ্য ছিল, জনসাধারণের মাঝে নিজেদের ভাবমূর্তি উন্নত করা।
তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কাতার এবং তুরস্ক থেকে হামাসের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং গাজা যুদ্ধের অবসান ও জিম্মি পরিস্থিতি মোকাবেলায় আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।