নিজস্ব প্রতিবেদক »
হাজারী গলিতে ভেজাল ওরস্যালাইনসহ সরবরাহকারীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করার ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাকবিত-া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ কারণে প্রায় চার ঘণ্টা হাজারী গলির সকল ওষুধের দোকান বন্ধ থাকে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা।
গতকাল বৃহ¯পতিবার সরেজমিনে হাজারী গলিতে দেখা গেছে, সকল ওষুধের দোকান বন্ধ রয়েছে। দোকান কর্মচারীরা রাস্তায় নেমেছেন। থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকান কর্মচারী বলেন, বুধবার রাতে ১৭২ কার্টন ভেজাল ওরস্যালাইনসহ সুজন কান্তি সিকদার (৪২) নামে এক সরবরাহকারীকে আটক করে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। সুজন সীতাকু-ের মধ্যম সোনাইছড়ি এলাকার মৃত নির্মল সিকদারের ছেলে। তাকে আটকের পর বিজয় বিতানের নিরবাসি দোকানের মালিক ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সুরেশ বড়–য়াকে এ বিষয়ে জানান তার সামনের দোকানদার।
এ বিষয়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সামনের দোকানদারকে হুমকি ধামকি দেন। এ ভেজাল ওষুধে তার সম্পৃক্ততা না থাকলে তিনি কেন এমন আচরণ করবেন? তাছাড়া এসময় তিনি কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির বিরুদ্ধেও কথা বলেন। তার এমন আচরণের কারণে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতিতে বিচার দেন তার সামনের ওই দোকানদার। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছিলেন সুরেশ বড়–য়া। এসময় দোকান কর্মচারীরা বের হলে সুরেশ বড়–য়ার আনা সন্ত্রাসী বাহিনীর সাথে বাকবিত-া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তার এমন আচরণের প্রতিবাদ হিসেবে ব্যবসায়ীরা সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পযর্ন্ত দোকান বন্ধ রাখে।’
এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি সুপ্রভাতকে বলেন, ‘গত বুধবার সন্ধ্যায় হাজারী গলি থেকে ভেজাল খাওয়ার স্যালাইনসহ একজনকে আটক করে কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর সুরেশ বড়–য়ার নেতৃত্বে বহিরাগত ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির লোকজন বিজয় বিতানের দোকানদারদের হুমকি ধামকি ও বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট চট্টগ্রাম জেলা সমিতির সদস্যের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে। এর প্রতিবাদে সকাল থেকে সব দোকান বন্ধ ছিল। পরে এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পরে দুপুর তিনটায় দোকান খুলে দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবির সুপ্রভাতকে বলেন, ‘হাজারী গলিতে এসএমসি কোম্পানির প্রতিনিধি মনোয়ার হোসেন ও বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নেতারা ৭০ কার্টন ভেজাল ওরস্যালাইনসহ সুজনকে আটক করেন। পরে আমারা গিয়ে ভেজাল ওরস্যালাইনসহ সুজন কান্তি সিকদার গ্রেফতার করি। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরের আন্দরকিল্লা বিনিময় মার্কেটের নিচতলায় জননী কুরিয়ার সার্ভিসের অফিসে অভিযান চালিয়ে আরও ১০২ কার্টন ওরস্যালাইন উদ্ধার করা হয়। মোট ১৭২ কার্টনের মধ্যে ৬৮ হাজার ৮০০ পিস ভেজাল ওরস্যালাইন পাওয়া গেছে। তাই তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। তাছাড়া কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি তাদের উপর হুমকি ধামকির বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে।’