‘হাকিম নড়ে তো হুকুম নড়ে না’

বিপ্লব উদ্যান

নগরের ব্যস্ততম এলাকা যোলশহর দু নম্বর গেটের আশেপাশে বিপ্লব উদ্যান ছাড়া আর কোনো খোলা চত্বর নেই। একসময়ে খুব সাজানো-গোছানো পরিপাটি ছিল উদ্যানটি। কিন্তু তার কপালে নাকি জনগণের কপালে সুখ নেই জানি না। এ স্থানকে গিলে ফেলার নানাবিধ চক্রান্ত শুরু হয়।

আ জ ম নাছিরউদ্দীন মেয়র থাকাকালে এখানে কিছু বাণিজ্যিক স্থাপনা করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এরপর খোরশেদ আলম সুজন প্রশাসক নিযুক্ত হয়ে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করার কথা বললেও করতে পারেননি। তারপর রেজাউল করিম চৌধুরী এসে তিনি উচ্ছেদ না করে স্থাপনা আরও বাড়ানোর কাজে হাত দিয়েছিলেন। এরপর ডা. শাহাদাত হোসেন মেয়র হওয়ার পর নগরবাসী ভেবেছিল গুণগত কিছু পরিবর্তন হতে পারে হয়ত। কিন্তু না। এ যেন ‘হাকিম নড়ে তো হুকুম নড়ে না’ অবস্থা। দখল ও জবরদস্তির ধারা যেন অব্যাহতই থাকবে।

একটি জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম নগরের সবুজে ঘেরা বিপ্লব উদ্যানের মাঝখানে বসানো হয়েছে বিশাল লোহার চাকতি। এর পাশে চলছে নাগরদোলা, রোলারকোস্টারসহ বিভিন্ন রাইড বসানোর কাজ। খোলা জায়গায় ইতিমধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে ৩৬টি অস্থায়ী দোকানের কাঠামো। বিপ্লব উদ্যানে এভাবেই চলছে ‘জুলাই বিজয় মেলার’ প্রস্তুতি।
‘ছাত্রসমাজ চট্টগ্রাম মহানগর’ ব্যানারে আয়োজন করা হচ্ছে ১৫ দিনব্যাপী এ মেলা। এর মূল আয়োজক নগর যুবদল নেতা আলিফ উদ্দিন ও তাঁর অনুসারীরা। তিনি চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভেঙে দেওয়ার পর নগর যুবদলের নতুন কমিটি গঠন করা হয়নি

গতকাল বুধবার রাতে শুরু হয়েছে মেলার অবকাঠামোর কাজ। মেলার আয়োজকদের দাবি, সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে জায়গা ব্যবহারে অনুমতি নিয়েছেন। মেলার অনুমতি নিয়েছে পুলিশের কাছ থেকেও। আজ মেলার উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন।

এ ধরনের আয়োজন উদ্যান ধ্বংস করার চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবীর চৌধুরী। তিনি পত্রিকাকে বলেন, নাগরিকদের নিশ্বাস ফেলার, বসার একটি উদ্যান এটি। এটিও ধ্বংস করার পাঁয়তারা চলছে।
মেলার আয়োজন খারাপ কিছু নয়। দেশীয় পণ্যের প্রচার ও প্রসারে মেলার ভূমিকা আছে। কিন্তু কোনো ব্যক্তিবিশেষকে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশে জনগণের জায়গা ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত নয়। এ ধরনের কেউ করতে চাইলে কনভেনশন সেন্টার ভাড়া নিয়ে করতে পারে। ‘পাবলিক প্লেস’ ব্যবহার করে কখনো নয়।