বিবিসি বাংলা :
স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সতর্ক বার্তা উপেক্ষা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বার বারই এই ওষুধের প্রচার করেছেন।
এর আগে তিনি বলেছিলেন যে, তিনি নিজেই করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে এই ওষুধ প্রতিদিন সেবন করেন। কিন্তু রবিবার তিনি জানিয়েছেন যে তিনি আর এটি সেবন করছেন না। গত সপ্তাহে মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যান্সেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানানো হয় যে, করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার করলে তা তো কোন কাজেই আসে না, উল্টো এটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায়।
ম্যালেরিয়া, লিউপাস কিংবা আর্থ্রাইটিসের মতো উপসর্গের ক্ষেত্রে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন কার্যকর। কিন্তু এটি কোভিড–১৯ এর ক্ষেত্রেও যে কার্যকর তার কোন প্রমাণ মেলেনি। করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরণের ওষুধের ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কোন ওষুধটি কোভিডের চিকিৎসায় কার্যকর ফল দেয় তা তারা খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বরাবই নিজ উদ্যোগে ওষুধ সেবনকে নিরুৎসাহিত করেছে সংস্থাটি।
সোমবার জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থায় এক কর্মকর্তা বলেন যে নিরাপত্তার কারণে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন এর পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে। দ্য ল্যান্সেটে প্রকাশিত গবেষণাটি ৯৬ হাজার করোনাভাইরাসের আক্রান্ত রোগীর উপর পরিচালিত হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫ হাজার জনকে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন বা ক্লোরোকুইন জাতীয় ওষুধ এককভাবে কিংবা অন্য আরেকটি অ্যান্টিবায়োটিকের সাথে মিলিয়ে সেবন করানো হয়।
গবেষণায় দেখা যায় যে, হাসপাতালে ভর্তি অন্য কোভিড রোগীদের তুলনায় যেসব রোগীদেরকে ওই ওষুধটি দেয়া হয়েছিল তাদের মৃত্যুর প্রবণতা বেড়ে যায় কিংবা হৃদস্পন্দনের জটিলতা তৈরি হয়। চিকিৎসাধীন এসব রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার ছিল: হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ১৮%, ক্লোরোকুইন ১৬.৪%, নিয়ন্ত্রিত রোগী বা যাদেরকে দেয়া হয়নি তাদের মধ্যে এই হার ৯%। তার মানে যাদেরকে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন বা ক্লোরোকুইন দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে মৃত্যুহার অনেক বেশি ছিল।
গবেষকরা সুপারিশ করেন যে, চিকিৎসার কাজে নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষা করা ছাড়া যাতে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার না করা হয়।