স্যালাইন নিয়েও সিন্ডিকেট! আর বাকি থাকল কী

ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ডেক্সড্রোজ নরম্যাল স্যালাইনের (ডিএনএস) ও আইভি স্যালাইনের চাহিদা বেড়েছে। আর এই সুযোগকে পুঁজি করে এবার স্যালাইনের দাম বাড়িয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। দাম বাড়ানোর জন্য তারা বাজারে কৃত্রিম সংকটও তৈরি করেছে। ওষুধের দোকানে স্যালাইন নেই অথচ তা পাওয়া যাচ্ছে মুদির দোকানে বেশি দামে।
ভোক্তাদের এই ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণ দিতে অভিযান পরিচালনা করে ৪ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। খোদ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনেই এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় ৪ প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীরা ৬৭ টাকার স্যালাইন ১৫০ টাকা, ৮৭ টাকার স্যালাইন ৩০০ টাকায় বিক্রি করছিল।
অভিযান নিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি চমেক হাসপাতাল এলাকায় স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে ব্যবসায়ীরা। অনেকে ফার্মেসিতে স্যালাইন নেই বলেন, আবার অনেকে বেশি দামে বিক্রি করেন। এই অভিযোগে অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানে আমরা ক্রেতা সেজে দেখতে পাই আধ লিটার নরম্যাল স্যালাইনের মূল্য ৬৭ টাকা হলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। এক লিটার নরম্যাল স্যালাইনের দাম ৮৭ টাকা হলেও তা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। গত এক মাস ধরে বাজারে এমন কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রোগীদের হয়রানি করছেন ব্যবসায়ীরা।’
তবে ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি দামে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে তাদের। একটি সিন্ডিকেট এটির দাম বাড়িয়ে রোগীদের হয়রানিতে ফেলছেন। আমরা বেশি দামে কিনলে বেশি দামে তো বিক্রি করতে হবে।’
কয়েকবছর ধরে বাংলাদেশে এক নতুন খেলা শুরু হয়েছে। যখন কোনো পণ্যের চাহিদা বাড়ে তখনই সে পণ্য নিয়ে নানান কারসাজি শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা ব্যবসায়ী দেন পাইকারি বিক্রেতার দোষ, পাইকারি বিক্রেতা দেন আমদানিকারক বা উৎপাদকের দোষ, আর আমদানিকারকরা অজুহাত দেন বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধির। কিন্তু যেসব ব্যবসায়ী এমন কাণ্ড করেন তারা তো এদেশেরই সন্তান। দেশের প্রতি, জনগণের প্রতি তাদেরও নিশ্চয়ই দায়বদ্ধতা আছে। তাহলে কেন বারবার তারা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়াবেন। এবং অভিযানে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জরিমানা দেবেন। তাঁদের এখন ভাবার সময় হয়েছে যে তাঁরা ব্যবসায়ী অপরাধী নন। ব্যবসায়ী হিসেবেই যেন সমাজে তাঁরা সম্মানীয় হয়ে থাকেন।