সুপ্রভাত ডেস্ক »
স্মার্ট জেলা উদ্ভাবন চ্যালেঞ্জ-২০২৩ এর আওতায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ‘স্মার্ট স্কুলবাস’ নামক উদ্ভাবনী উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করা ১০টি স্কুল বাসে বিভিন্ন প্রযুক্তি সুবিধা প্রদান করে স্মার্ট স্কুল বাস হিসাবে ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে। নগরের যেকোনো প্রান্ত থেকে মাত্র পাঁচ টাকায় স্মার্ট স্কুলবাসে স্কুলে যেতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে স্মার্ট স্কুল বাস উদ্যোগটির অনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর লক্ষ্যে অংশীজন সভায় সবার সম্মতিতে এ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়।
এ সময় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘স্মার্ট স্কুলবাস’ উদ্ভাবনী উদ্যোগটির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৮০ লাখ টাকা উপহার দিয়েছেন, এটা বাস কেনার জন্য না। এ উদ্যোগটি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য।’ খবর বাংলানিউজের।
স্মার্ট স্কুলবাস চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে অসহনীয় যানজট, অভিভাবকদের ভোগান্তি, অধিক যাতায়াত খরচ, জ্বালানি অপচয়, সড়ক দুর্ঘটনা, অনিরাপদ স্কুল যাত্রাসহ অভিভাবকদের কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার মতো সমস্যার সমাধান হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ইতোমধ্যে ১০টি সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০টি দোতলা বাস নগরের বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে। আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে স্মার্ট স্কুলবাস অনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে।
এই বাসগুলোতে স্মার্ট টেকনোলজি যেমন, জিপিএস ট্র্যাকার, আইপি ক্যামেরা, এআই ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বাসে ওঠা-নামার সময় অভিভাবকের ফোনে স্বয়ংক্রিয় এসএমএস প্রদান, বাসে শিক্ষার্থীদের অবস্থান মনিটরিং, স্কুল টাইমিং সমন্বয়ের মাধ্যমে স্বল্প খরচে স্কুল-কলেজে যাত্রা নিশ্চিত করা হবে।
ইতোমধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের ডেটাবেইজ প্রস্তুতের পাশাপাশি বাসগুলোতে জিপিএস ট্র্যাকার, ফেইস রিকগনেশন, অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা, শিক্ষার্থীদের স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ক্যাশলেস পেমেন্ট পদ্ধতি সম্বলিত বিভিন্ন ডিভাইস সংযোজন করা হচ্ছে।
অংশীজন সভায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক আবুল মোমেন বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা যখন রাস্তায় বের হয় তখন অভিভাবকরা উৎকণ্ঠায় থাকেন। ছেলে-মেয়েরা ঠিকমতো স্কুলে পৌঁছেছে কি-না, সে টেনশনে থাকতে হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের স্মার্ট স্কুলবাস উদ্যোগটির কারণে এখন সে উৎকণ্ঠা আর টেনশন থাকবে না। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকদের আসতে হবে না। স্কুলের সামনে তাদের বসে থেকে অপেক্ষা করতে হবে না। স্মার্ট স্কুলবাস নিরাপদে শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে আসবে স্কুল ছুটি হয়ে নিরাপদে পৌঁছে দিবে। ব্যক্তিগত গাড়ির কারণে স্কুলের সামনে প্রতিনিয়তই আমরা যানজটের মুখোমুখি হচ্ছি। সেটিও কমে আসবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সচিব ও চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল আলীম বলেন, সময় বাঁচানো, টাকা কম ও গতিশীল জীবন পরিচালনা করতে স্মার্ট স্কুলবাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে। স্মার্ট স্কুলবাস যখন নিরাপদ ও খরচ কম তখন অভিভাবকরা এ বাসে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে উদ্বুদ্ধ হবে।
এসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রাশেদ মোস্তফা স্মার্ট স্কুলবাসের বেশ কিছু আইডিয়া শেয়ার করেন।
নগরের পতেঙ্গা, হালিশহর ও বন্দর এলাকায় আরও ১০ টি স্কুলবাস চলাচলের দাবি জানান স্মার্ট স্কুলবাস মনিটরিং টিমের আহ্বায়ক মিনহাজুল ইসলাম।
অংশীজন সভায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ সাদি উর রহিম ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন।