স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে ক্রেতার স্রোত ফুটপাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক <

গাড়ির হর্ন, ক্রেতার গুঞ্জন, পণ্য বিক্রির শ্লোকÑ ঈদের চিরচেনা এ রূপ নগরীর ফুটপাতে। হাঁটা চলার পথ থেকে গাড়ি পার্কিং’র রাস্তা সব দখল করে নেয় ভাসমান বিক্রেতারা। পণ্যে পসরা সাজিয়ে বসে রাস্তায়। মানুষ হাঁটার জায়গা থাকে না। মাঝে মধ্যে পুলিশের অভিযান চলে। তখন সাময়িক বন্ধ থাকে।

গতকাল সরজমিনে দেখা যায়, চশমা, রুমাল, গেঞ্জি, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, ব্যাগসহ ফুটপাতে বসেছে হরেক রকম অস্থায়ী দোকান। মার্কেটের তুলনায় কম দামে পাওয়া যায় এখানের পোশাক ও অন্যান্য সমাগ্রী। তাই ক্রেতারও কমতি নেই। কম দামে চাহিদা পূরণ করতে যাওয়া মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও গরিবরাই  এখানের ক্রেতা।

গতকাল বেলা দুইটায় নিউমার্কেট এলাকায় দেখা যায় ব্যাপক মানুষের ভিড়। তিনপোল থেকে শুরু করে রেলস্টেশনের বিপরীতে রেয়াজউদ্দিন বাজারের মুখ পর্যন্ত ভাসমান দোকান। ফুটপাতের দু’পাশেই নানা পণ্যের বেচাবিক্রি।

বালুচরা থেকে পরিবারসহ শপিং করতে আসা নয়ন বলেন, প্রতিবছর ফুটপাত থেকে বাজার করি। বাচ্চাদের পোশাক কম দামে পাওয়া যায়।

গ্রাম থেকে কেনাকাটা করতে আসা শরীফ জানান, ভিতরে মার্কেট আছে-এটা আমার জানা নেই। এখান থেকে পাঞ্জাবি কিনে নিয়েছি।

জলসা মার্কেটের ফুটপাত ঘেঁষে বসেছে জুতার দোকান। মূল রাস্তার তিনভাগের একভাগে ক্রেতা-বিক্রেতা। জুতার ক্রেতার ভিড়ের কারণে তৈরি হয়েছে লম্বা যানজট। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে ক্রেতার সংখ্যা।

ফুটপাতে জুতা বিক্রেতা জসিম উদ্দীন বলেন, ক্রেতা বৃদ্ধির কারণে বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। সামনে আরো ভাল হবে।

ফুটপাতে মানুষের ভিড় বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে গেঞ্জি বিক্রেতা জাবেদ বলেন, মার্কেটের তুলনায় এখানে দাম কম। তাই অনেকে এখান থেকে কিনে নেয়।

মিউনিসিপ্যাল স্কুলের সামনেও ফুটপাত ছাড়িয়ে দোকানগুলো চলে এসেছে রাস্তার উপরে। পাঞ্জাবির দোকানই বেশি। ক্রেতারও কমতি নেই। রাসেল নামের পাঞ্জাবি বিক্রেতা সুপ্রভাতকে বলেন, প্রতিবারই রমজানের শেষের দিকে বিক্রি ভালো হয়। রমজানের প্রথমদিকে লকডাউন থাকায় এখন ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় বেশি।

আতুরার ডিপোর ফুটপাতেও দেখা যায় একই চিত্র। আমিন জুটমিল এলাকায় গড়ে ওঠা এই ফুটপাত মার্কেটেও মানুষের ঢল নামে। গায়ে গা ঘেঁষে শপিং করছে সবাই। স্বাস্থ্যবিধি নেই বললেই চলে।

শুক্রবার রাতে কথা হয় এক পোশাক বিক্রেতার সাথে। তিনি জানান, গার্মেন্টস শ্রমিক বেশি এখানে। তারা এসব দোকানগুলোতে বাজার করে কম দামে।

ঈদের কেনাকাটা করতে আসা পোশাককর্মী জেসমিন আরা জানান, আমরা গরিব মানুষ। মার্কেটে যাই  না। ফুটপাত থেকে বাজার করি।

থ্রি-পিস কিনতে আসা তরুণী পোশাককর্মী সুপ্রভাতকে জানান, বেতন পাইছি। ঈদের জামা কিনতে আইলাম। প্রতিবার এইখান থ্যাকেই কিনি।