স্বাধীনতার পর নগরে প্রথম সরকারি বিদ্যালয়

অবাক করার মতো খবর হচ্ছে দীর্ঘ ৫৮ বছর পর চট্টগ্রাম নগরে চালু হতে যাচ্ছে দুটি সরকারি স্কুল ও কলেজ। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে এই নগরের কতকিছুর পরিবর্তন হয়েছে, কতকিছু প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কত ধরনের উন্নতি হয়েছে কিন্তু প্রায় ৭০ লক্ষ জনসংখ্যার এ মহানগরে কোনো সরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
অবশেষে জানা গেল, চট্টগ্রামে প্রায় ৫৮ বছর পর নতুন দুটি সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ চালু হচ্ছে। ২০২৬ সাল থেকে নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় সর্বাধুনিক অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধাসহ একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করবে প্রতিষ্ঠান দুটি।
নতুন প্রতিষ্ঠান দুটি হলো—শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ (পূর্ব পতেঙ্গা) এবং মাস্টারদা সূর্যসেন সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ (উত্তর পতেঙ্গা)। প্রতিটি ১০ তলা ভবনের স্কুলে একসঙ্গে প্রায় ১,৪০০ শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করতে পারবে।
জানা গেছে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে থাকবে আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব, বিজ্ঞানাগার, লাইব্রেরি, সেমিনার হল, মাল্টিপারপাস হল, নামাজ কক্ষ, মিড-ডে মিল কক্ষ ও চিকিৎসাকক্ষ। থাকবে ইন্টারনেট সুবিধাসহ খেলাধুলার সরঞ্জাম ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর।
২০১৮ সালে একনেক ‘৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প’ অনুমোদন দেয়। ৪৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, জয়পুরহাট ও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিদ্যালয় নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
তিন দফা মেয়াদ বাড়িয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রধান বাধা ছিল জমি সংকট। নগরে একসঙ্গে ২ একর জমি পাওয়া কঠিন হওয়ায় পতেঙ্গায় জমি নির্ধারণ করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম খীসা বলেন, “পতেঙ্গা এলাকায় এতদিন কোনো সরকারি স্কুল ছিল না। তাই এলাকাবাসীর চাহিদা পূরণে এখানে প্রতিষ্ঠান দুটি স্থাপন করা হচ্ছে।”

চট্টগ্রাম নগরে সর্বশেষ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। এরপর ১৯৭৪ ও ২০১৭ সালে দুটি বেসরকারি বিদ্যালয় সরকারিকরণ করা হলেও নতুন করে কোনো সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়নি।
আমরা বরাবরই মনে করি, শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দকে কখনও ব্যয় হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক নয়। এটাকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে। একটি জাতি সুশিক্ষিত না হলে অন্যসব বিনিয়োগ বিফলে যাবে এই বোধোদয় না হলে দেশের ভবিষ্যৎ খুব ভালো হবে বলে মনে হয় না।