স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, যুবকের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিনিধি, হাটহাজারী »

হাটহাজারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তাসনিম সুলতানা তুহিনকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্নাকে (২৫) মৃত্যুদ- দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক হালিম উল্লাহ চৌধুরী এ আদেশ দেয়। মামলার চার বছর এক মাসের মধ্যে, দুই শতাধিক কার্যদিবস শুনানির পর এ রায় ঘোষণা করা হল। তবে মরদেহ গুম করার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ধর্ষকের বাবা শাহজাহান সিরাজ ও মা নিগার সুলতানাকে খালাস দেয়া হয়।

গতকাল সন্ধ্যায় বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রিয়াদ উদ্দীন সুপ্রভাতকে বলেন, আইনি লড়াইয়ের পর প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্নাকে বিজ্ঞ বিচারক মৃত্যুদ- দিয়েছেন। তবে মামলার অপর দুই আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ ও নিগার সুলতানাকে খালাস দেওয়ায় আমরা ক্ষুদ্ধ। এই দুই আসামির বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মামলার প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্না হাটহাজারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাছনিম সুলতানা তুহিনকে (১৩) পৌর এলাকার ফটিকা শাহজালাল পাড়া সালাম ম্যানশনের দ্বিতীয় তলা থেকে অপহরণ করে একই ভবনের চতুর্থ তলার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আসামি মুন্না স্কুলছাত্রী তুহিনকে ধর্ষণ করে। আত্মরক্ষার্থে তুহিন চিৎকার দিলে মুন্না তার মুখ চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে মুন্না তার বাবা-মায়ের সহযোগিতায় তুহিনের লাশ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে ঘরের সোফার নিচে রাখে। ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পালাতে গিয়ে মুন্না পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে মুন্নার বাবা শাহজাহান সিরাজ ও মা নিগার সুলতানা ঘর থেকে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনার পর তুহিনের বড় ভাই বাদি হয়ে শাহনেওয়াজ সিরাজ ওরফে মুন্নাকে প্রধান আসামি ও তার বাবা শাহ জাহান সিরাজ এবং মা নিগার সুলতানার নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আয়ুব খান সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৯ সালের ১০ জুলাই চার্জশিট দেয় পুলিশ। এ মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৭ ধারায় মুন্নাকে যাবজ্জীবন কারাদ- এবং অপর ধারায় তাকে মৃত্যুদ-ের আদেশ দেন। একইসঙ্গে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তবে এ মামলায় মুন্নার বাবা-মাকে খালাস দেয়া হয়েছে।