চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একানত্ম ইচ্ছা ও প্রণোদনায় চট্টগ্রাম নগরীর পরিচ্ছন্ন কর্মীদের জন্য বাসযোগ্য অত্যাধুনিক আবাসন ভবন নির্মাণ উদ্যোগ সমাজের কর্মজীবী প্রানিত্মক জনগোষ্ঠীর বাসস্থানের মৌলিক অধিকার পূরণের একটি ভিত্তি সোপান।
তিনি সোমবার সকালে নগরীর ৩২ নম্বর আন্দরকিলস্না ও ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডে অবসি’ত সেবক কলোনীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাদ্দকৃত প্রায় ১শ ১১ কোটি টাকায় ৪টি-প্রতিটি ১৪ তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক পরিচ্ছন্নকর্মী ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বহুকাল আগে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে উত্তর প্রদেশের খরা কবলিত এলাকাগুলোতে কর্মচ্যুত হরিজন শ্রেণির বেশকিছু পরিবারকে এঅঞ্চলে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে এইসব কৃষক পরিবারের সদস্যরা পেশা বদল করে পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে নিযুক্ত হয়ে নাগরিকদের সেবা দিয়ে আসছিলেন। এদের জীবনমান ছিল অত্যনত্ম নিম্নসত্মরে এবং তারা অচ্যুত হিসেবে গণ্য হয়ে নিন্দনীয় সামাজিক বৈষম্যের শিকার হয়ে দীর্ঘকাল অবহেলা ও অবজ্ঞায় কাটিয়েছেন। আজ পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে হরিজন সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বেশকিছু বাঙালি পরিবারও এই পেশায় যুক্ত হয়েছেন এবং তারা সকলেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সেবাদানকারী পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে বেতন-ভাতা ভোগ করছেন। আমি আমার ছাত্র জীবন থেকেই লড়্গ্য করেছি তাদের বাসস্থান বা কলোনীগুলোর অবস্থা খুবই শোচনীয় এবং অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস’্যকর পরিবেশে তারা জীবনধারণ করছেন। আমার পূর্বসূরি মেয়র হিসেবে যারা ছিলেন তারাও চেষ্টা করেছেন সেবক শ্রেণির জীবনমান উন্নয়নে। আমি তাদের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের জীবনমান উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে তাদের আবাসন সংস্থানের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে তা বাসত্মবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করি। চলমান করোনা পরিসি’তির কারণে চট্টগ্রাম সহ সারা দেশে মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ কিছুটা হলেও গতি হারিয়েছে। কিন’ চট্টগ্রামে সেবক কলোনীতে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের আবাসন ভবন নির্মাণ কাজের জন্য বরাদ্দ আংশিক কমিয়ে প্রকল্প বাসত্মবায়ন অব্যাহত রাখার উদ্যোগ চলমান রয়েছে। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি শুধু ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোটাই যথেষ্ট নয়, তাঁর এই জনকল্যাণমুখি চেতনাকে আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের অনত্মরে ধারণ করতে পারলে সমাজ প্রগতির ধারা তীব্রতর হবে।
তিনি পরিচ্ছন্ন কর্মীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, সম্প্রতি পরিচ্ছন্ন কাজের গতি বাড়াতে ডোর টু ডোর আবজর্না সংগ্রহে প্রায় ২ হাজার পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ দান করেছি। এই নিয়োগে সেবক কলোনীর কর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, ১৪ তলা বিশিষ্ট ৪ টি ভবনের প্রতিটি ফ্লাটে একেক পরিবারের জন্য অন্যান্য স্পেসসহ থাকার জন্য ৪৩৫ বর্গফুট আয়তন থাকছে। এছাড়াও প্রতিটি ভবনে এই আয়তনের মধ্যে দু’টি বেড রম্নম, লিভিং কাম ডাইনিং স্পেশ, কিচেন ও ওয়াসরম্নম থাকবে। প্রতিটি ভবনের নিচতলায় স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার, কির্ডস জোন, উপাসনালয়, ২টি লিফট, ৪০০ কেভি জেনারেটর, ট্রান্সফরমার ও অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা সরঞ্জাম থাকবে। চট্টগ্রাম নগরীতে এই পরিচ্ছন্নকর্মী ভবন একটি সর্বাধুনিক বাসযোগ্য আবাসন হিসেবে পরিচালিত হবে। ৩২ নম্বর আন্দরকিলস্না ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিল্পবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপসি’ত ছিলেন কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, ইসমাইল বালী সংরড়্গিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আঞ্জুমান আরা বেগম, লুৎফুন্নেছা দোভাষ বেবী, মেয়রের একানত্ম সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরম্নল হুদা, ঝুলন কানিত্ম দাশ, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, সহকারী প্রকৌশলী সালমা বেগম, মো. মিজবাউল আলম, মো. রিফাতুল আলম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী তানজিম ভূইয়া, ঠিকাদার আশীষ কুমার দাশ, দিদারম্নল আলম, সায়েম রিজভীসহ হাজী নাসির আহমেদ, হাজী মাহমুদুর রহমান বাবুল, মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া, মঞ্জুর আলম,মঞ্জুর মোরশেদ, ছগির আহম্মদ, মোহাম্মদ ইউনুস, খোরশেদ আলম রহমান, তাজউদ্দিন রিজভী, তানভীর আহমেদ রিংকু, জাহাঙ্গীর আলম, খালেক হোসেন, আব্দুল আজিজ, এনামুল হক, আব্দুল মতিন, আব্দুল গফুর সুমন, মো. মহিউদ্দিন, অসিউর রহমান, মো. পারভেজ, নুরম্নল আজিম, আকতার মিয়া, সরওয়ার সরকার, সামিউল হাসান, মো. আজম, অনিন্দ্য দেব, মো. নজরম্নল,মো. নাবেদ, প্রমুখ। মুনাজাত পরিচালনা করেন ফিরিঙ্গীবাজার জামে মসজিদের সহকারী ইমাম হাফেজ আব্দুল আওয়াল ও গীতা পাঠ করেন আকাশ বাবু উপসি’ত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি