নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ :
টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অংশ ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটকদের যাওয়া নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় গত ১২ অক্টোবর জারি করা এক পরিপত্রের পর তা বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। এ ছাড়া পরিবেশ রক্ষায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের জন্য ছয় ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশও দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। চলতি নভেম্বর মাস থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াতের সংখ্যা বাড়বে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরিপত্রটি জারি করা হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোস্টগার্ডকে।
পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপ অংশে এখনো কিছু সামুদ্রিক প্রবাল জীবিত আছে। প্রবালগুলো সংরক্ষণের জন্য এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোন কাগজপত্র পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ে পৌঁছেনি বলে জানিয়েছেন, কক্সবাজারের উপপরিচালক নাজমুল হুদা। তিনি জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপ রক্ষার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা শুনেছি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে কাগজপত্র পাওয়ার পর।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে সেন্টমার্টিনের সৈকতে কোনো ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন যেমন মোটরসাইকেল ও ইঞ্জিনচালিত গাড়ি চালানো যাবে না। রাতে সেখানে আলো বা আগুন জ্বালানো যাবে না। রাতের বেলা কোলাহল সৃষ্টি বা উচ্চ স্বরে গানবাজনার আয়োজন করা যাবে না। টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতকারী জাহাজে অনুমোদিত ধারণ সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। অননুমোদিত এবং অনুমোদনের অতিরিক্ত নির্মাণসামগ্রী সেন্টমার্টিনে নেয়া যাবে না। পরিবেশদূষণকারী দ্রব্য যেমন পলিথিন ও প্লাস্টিকের বোতল ইত্যাদির ব্যবহার সীমিত করা হবে।
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কোস্টগার্ডের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। পরিপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ধ্বংসকারী কার্যক্রমগুলো বন্ধে কোস্টগার্ডকে ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, দ্বীপটি পর্যটকদের অনিয়ন্ত্রিত কার্যক্রমের কারণে মারাত্মক ধ্বংসের মুখে রয়েছে। দেশের একমাত্র এই প্রবাল দ্বীপের জীববৈচিত্র্য এবং বনভূমি মারাত্মক দূষণের শিকার হচ্ছে। ফলে শুধু ছেঁড়া দ্বীপ নয়, সেন্টমার্টিনেই পর্যটকদের যাতায়াত আপাতত নিষিদ্ধ করা উচিত।
পরিবেশ সংগঠক এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহী রাশে দুল মজিদ জানান, ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটক নিষিদ্ধ অনেক আগেই করা প্রয়োজন ছিল, দেরিতে হলেও তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়ায় এ দ্বীপ রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ